পাতা:হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা - কৈলাসবাসিনী দেবী.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা।

সন্তানের কি ঐ মাতার প্রতি যথার্থ স্নেহ ও অচলা ভক্তির সঞ্চার হইতে পারে? কিন্তু কোন কোন নিষ্ঠুর হৃদয়া শ্বশ্রূ তদপেক্ষাও অধিক নিষ্ঠুরতাচরণ করেন, এবং কোন কোন ধর্ম্ম ভয় বর্জিতা বধূও শ্বশ্রূগণের অতি দুরবস্থা করিয়া থাকেন। এই প্রকারে অনেক গৃহস্থালয় একেবারে নরক তুল্য ঘৃণিত হইয়াছে, এবং এই অত্যাচার দূরীকরণাশয়ে কোন কোন মহাত্মারা কহেন, বধূগণের অবাধ্যতাই ইহার মূলীভূত কারণ হইয়াছে, অতএব সেই কারণ নিরাকরণ করিতে পারিলেই সম্পূর্ণ অভ্যুদয়ের সম্ভাবনা; নচেৎ ইহার আর উপায়ান্তর নাই; তাঁহারা এইরূপ বিবেচনা করিয়া ঐ বধূদিগকে সাতিশয় উত্তেজনা ও ভয়ানক তাড়না করিতে প্রবৃত্ত হয়েন।

 কিন্তু তাঁহাদিগের সেই তাড়নাই ভবিষ্যতে অতি অনর্থের মূল হইয়া উঠে। যেমন সমুদ্র মন্থন কালে পুনঃ পুনঃ মন্থন করাতে বিষম বিষ উৎপন্ন হইয়াছিল, তদ্রুপ ঐ মহাত্মারা পুনঃ পুনঃ তাড়না করিয়া বিপরীত ফল লাভ করেন। তাহারা শ্বশ্রূগণের নিকট দিবস শর্ব্বরী নানা বিষয়ে প্রপীড়িত হইয়া গৃহকর্ম্ম নির্ব্বাহ করে, এবং পরিজনস্থ সমস্ত জনগণের ভোজনাদি সমাপ্ত হইলে যাহা কিছু অবশিষ্ট থাকে তাহাই গ্রহণ করিয়া যথা কথঞ্চিৎ রূপে প্রাণ ধারণ করে, তাহাই তাহাদিগের যথেষ্ট,আবার তাহার উপর তাড়না করিলে কাটা ঘায়ে লবণ নিক্ষেপবৎ অতি অসহ্য হইয়া উঠে। সেই যন্ত্রণা হইতে আশু পরিত্রাণ পাইবার নিমিত্ত উহারা বিধিমতে উপায়ান্বেষণ করিতে থাকে, এবং সেই পীড়নকর্ত্তাদিগের প্রতি আরও স্নেহের অভাব হয়। কোন