পাতা:হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা - কৈলাসবাসিনী দেবী.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা।
৬৯

হইলেও তাঁহাদিগের তৃতীয়াংশের একাংশ অর্থ উপার্জ্জন করিতে পারেন কি না সন্দেহ। অতএব ইউরোপীয়দিগের তুল্য ইহাঁদিগের বনিতাগণ কখনই সভ্য হইতে পারিবে না। তবে যদি এমত হয়, যে ইহারা গোবর মাটীও ছানিবে ও সমাজাদিতেও যাইবে, তাহা হইলে আমাদিগের পক্ষেও উত্তম হয়।

 অতি প্রাচীনকালে হিন্দু অঙ্গনাগণের কিয়ৎ পরিমাণে স্বাধীনতা ছিল যথার্থ বটে, এবং তাঁহারা সর্ব্বত্র স্বেচ্ছামত গমনাগমন করিতেও পারিতেন। কিন্তু সেই পৌরাণিক মতে চলিতে গেলে তাহার প্রত্যেক গুলিই ব্যবহার করিতে হয়। একটী গ্রহণ করিয়া অপরটী কখনই পরিত্যাগ করিতে পারা যায় না। আর তৎকালীন অসঙ্গত মত সমূহ এক্ষণে গ্রাহ্যও হইতে পারে না। তখন অনেকে বংশ রক্ষা করিবার জন্য অন্যের দ্বারা পুত্র উৎপাদন করিয়া লইত, এবং এক নারী চারি পাঁচ জনের ভোগ্যা হইয়াও পরম পবিত্র ও প্রাতঃস্মরণীয় বলিয়া বিখ্যাত হইত[১]। কিন্তু এক্ষণে কেহই সেরূপ হইতে পারেন না; সুতরাং প্রাচীন মতাবলম্বী হইয়া কোন কর্ম্মই করা যাইতে পারে না।


বৈধব্য যন্ত্রণা!

 আহা! এই বৈধব্য যন্ত্রণা যে কতদূর অসহনীয় তাহা বলিবার নহে। হায়! এই বিষম যন্ত্রণা সহ্য করিতে অসমর্থা হইয়া পূর্ব্বতন কামিনীগণ সহমরণরূপ কঠোর ব্রতে ব্রতী


  1. “অহল্যা দ্রৌপদী কুন্তী তারা মন্দোদরী তথা।
    পঞ্চ কন্যা স্মরেন্নিত্যং মহাপাতক নাশনং’’॥