পাতা:হেক্‌টর বধ - মাইকেল মধুসূদন দত্ত.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হেক্‌টর বধ।
৪৩

হেলেনী সুন্দরীকে দিয়া এ রণাগ্নি নির্বাণ করা উচিত, কি এ সন্ধি ভঙ্গ করাইয়া, সে রণাগ্নি যাহাতে দ্বিগুণ প্রজ্বলিত হইয়া ট্রয়নগর অকস্মাৎ ভস্মসাৎ করে তাহাই করা কর্তব্য।

 উগ্রচণ্ডা দেবকুলেন্দ্রাণী হীরী এই রূপ প্রস্তাবে রোষদগ্ধ প্রায় হইয়া কহিলেন, হে দেবেন্দ্র! তুমি এ কি কহিতেছ? যে জঘন্য নগর বিনষ্ট করিতে আমি এত পরিশ্রম স্বীকার করিয়াছি, তুমি কি তাহা রক্ষা করিতে চাহ? মেঘশাস্তা দেবেন্দ্রও দেবেন্দ্রাণীর বাক্যে ক্রোধান্বিত হইয়া উত্তর করিলেন, রে জিঘাংসাপ্রিয়ে, রাজা প্রিয়াম্‌ ও তাহার পুত্রগণ তোর নিকটে এত কি অপরাধ করিয়াছে, যে তুই তাহাদের নিধনসাধনে এত ব্যগ্র হইয়াছিস? রে দুষ্টে, বোধ করি, রাজা প্রিয়াম্‌ ও তাহার সন্তান সন্ততির রক্ত মাংস পাইলে তুই পরম পরিতুষ্টা হস্! তুই কি জানিস্ না, যে ঐ ট্রয়নগর আমার রক্ষিত? সে যাহা হউক, এ ক্ষুদ্র বিষয় লইয়া তোর সহিত আমার আর বিবাদ বিসম্বাদে প্রয়োজন নাই। তোর যাহা ইচ্ছা, তাহাই কর্‌। কিন্তু যেন এই কথাটা তোর মনে থাকে যে, যদি তোর রক্ষিত কোন নগর আমি কোন না কোন কালে বিনষ্ট করিতে চাই, তখন তোর তৎসম্পর্কীয় কোন আপত্তিই কখন ফলবতী হইবে না। গৌরাঙ্গী দেবমহিষী দেবেন্দ্রের এইরূপ বাক্য শুনিয়া অতি সুমধুর স্বরে কহিলেন, দেবরাজ! আমার অধীনস্থ যে কোন নগর যখন তুমি নষ্ট করিতে ইচ্ছা কর, করিও, আমি তদ্বিষয়ে কোন বাধা দিব না। কিন্তু তুমি এখন এইটী কর, যে যেন ট্রয়নগরের লোকেরা এই সন্ধি ভঙ্গ বিষয়ে প্রথমে হস্ত নিক্ষেপ করে।