পাতা:১৫১৩ সাল.pdf/৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৫১৩ সাল।
৭৫

 “না।”

 “তবে মজা দেখ।”

 এই বলিয়া সুন্দরলাল একটা ইসারা করিল। তৎক্ষণাৎ যষ্টি উত্তোলন করিয়া তাহার সঙ্গীগণ আমাদিগকে আক্রমণ করিতে আসিল। আমরা প্রাণপণে তীরাভিমুখে দৌড়াইতে লাগিলাম। কয়েক মিনিটের মধ্যেই জালিবোট ধরিতে পারিলাম এবং উহা এমন বেগে চালাইয়া দিলাম যে, আক্রমণকারিগণ তীরে উপস্থিত হইবার পূর্ব্বে আমরা প্রায় ২০০ হাত দূরে চলিয়া যাইতে সক্ষম হইলাম। নিরুপায় হইয়া তাহারা অকথ্য ভাষায় গালি দিতে লাগিল। আমরা তাহা গ্রাহ্য করিলাম না।

 একটু প্রকৃতিস্থ হইয়া বন্ধুবরকে জিজ্ঞাসা করিলাম:—

 “বলি, যাইতেছ কোথায়?”

 “কেন, জাহাজাভিমুখে?”

 “কিন্তু সেখানেও যে বিপদ্?”

 “থাকুক। আমার বিশ্বাস আমাদের হঠাৎ আবির্ভাব অপর বিদ্রোহীদিগের মনে ভীতি-উৎপাদন করিতে সক্ষম হইবে। তাহার পর তাহাদিগকে মিষ্ট বাক্য দ্বারা বশীভূত করিব। আমার উপর নির্ভর কর।”

 “সোনার ভারতের” নিকট যখন আমাদিগের বোট পৌঁছিল, তখন দেখি ডেকের উপর দুই জন থালাসী দণ্ডায়মান আছে। তাহারা আমাদিগকে দেখিয়াই “গাঁঙ্গওয়ে” দিয়া নামিয়া আসিল এবং আমাদিগকে উপরে লইয়া গেল। তথায় অন্য কাহাকেও দেখিলাম না। বন্ধুবর তাহাদিগকে সকল কথা খুলিয়া বলিতে বলিলেন। তাহারা সংক্ষেপে বিদ্রোহের সকল বিবরণই দিল। তাহাদিগের নিকট ইহাও জানিলাম যে আন্দাজ অর্দ্ধেক খালাসী বিদ্রোহী হইয়াছে, অপর সকলে ভয়ে তাহাদিগের বশ্যতা স্বীকার করিয়াছে। এই কথা শুনিয়া আমাদের একটু সাহস হইল। প্রথমে আমরা আমাদের কেবিনে প্রবেশ করিলাম।