পাতা:১৯০৫ সালে বাংলা.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
[ ৬ ]

সিদ্ধ কোথায়! বুঝিলাম কেশব চন্দ্র কেন কাহার ডাক শুনিয়া ধর্ম্মের তর্ক রাজ্য ছাড়িয়া মর্ম্মরাজ্যে প্রবেশ করিয়া ছিলেন। বিবেকানন্দের বাণীতে প্রাণ ভরিয়া উঠিল। বুঝিলাম, বাঙ্গালী হিন্দু হউক, মুসলমান হউক খৃষ্টান হউক, বাঙ্গালী বাঙ্গালী।

 বাঙ্গালীর একটা বিশিষ্টরূপ আছে, একটা বিশিষ্ট প্রকৃতি আছে, একটা স্বতন্ত্র ধর্ম্ম আছে। এই জগতের মাঝে বাঙ্গালীর একটা স্থান আছে, অধিকার আছে, সাধনা আছে কর্ত্তব্য আছে। বুঝিলাম, বাঙ্গালীকে প্রকৃত বাঙ্গালী হইতে হইবে। বিশ্ববিধাতার যে অনন্ত বিচিত্র সৃষ্টি, বাঙ্গালী সেই সৃষ্টিস্রোতের মধ্যে এক বিশিষ্ট সৃষ্টি। অনন্তরূপ লীলাধারের রূপ বৈচিত্র্যে বাঙ্গালী একটী বিশিষ্টরূপ হইয়া ফুটিয়াছে। আমার বাঙ্গালা সেইরূপের মূর্ত্তি আমার বাঙ্গালা সেই বিশিষ্টরূপের প্রাণ, যখন জাগিলাম, মা আমার আপন গৌরবে—তাঁহার বিশ্বরূপ দেখাইয়া দিলেন, সে রূপে প্রাণ ডুবিয়া গেল, দেখিলাম, সে রূপ বিশিষ্ট, সে অনন্ত! তোমরা হিসাব করিতে হয় কর, তর্ক করিতে চাও কর—সেরূপের বালাই লইয়া মরি।

(বাংলার কথা হইতে উদ্ধৃত) “দেশবন্ধু।”

 তারপর স্বদেশী আন্দোলনের প্রবল ঢেউ বাংলার হৃদয়-কূলে আঘাতে করিল। দেশবন্ধু বাংলাকে যতটা ভালোবাসিয়াছিলেন ঠিক ততটা আবেগ এবং উন্মাদনা লইয়া বাংলার দুর্গম-পন্থী যুবকগণ এই আন্দোলনের স্রোতে ঝাঁপাইয়া পড়িলেন।