পাতা:১৯০৫ সালে বাংলা.pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
[ ৩৬ ]

আমরা ইতিহাসের উপদেশ হৃদয়ঙ্গম করিয়াছি, সম্মান-যোগ্য পাশ্চাত্য গ্রন্থেই পাঠ করিয়াছি যে সর্ব্বত্রই ভক্তদিগের রক্তে ধর্ম্মের ভিত্তিমূল দৃঢ়তর হইয়াছে। আমাদিগের যুবকসম্প্রদায়ের কষ্টসহিষ্ণুতায় আমাদিগের মহান্ উদ্দেশ্য দিন দিন অধিকতর শক্তি সংগ্রহ করিয়া পরিপুষ্ট ও পরিবদ্ধিত হইতে থাকিবে। ময়মনসিংহের যুবকদিগের কথা আমরা সকলেই শুনিয়াছি, স্বদেশী ব্যাপারের সংশ্রবে তাহারা অবরুদ্ধ হইয়াছিল, কারাগৃহে প্রবেশ করিয়াই তাহারা দেশানুরাগপ্রকাশক সঙ্গীতের ধ্বনিতে চারিদিক প্রতিধ্বনিত করিয়াছিল। কারারক্ষকদিগের হৃদয় গলিয়া গেল, তাহারা ত মানুষ;তাহার খাদ্য আনিয়া দিল কিন্তু যুবকেরা হাজতে আনীত খাদ্য পরিগ্রহণ করিল না। রাজবিধানের বিভীষিকা আমাদিগকে কখনই বিচলিত করিবে না। আমরা অম্লান বদনে বেত্রদণ্ডের আঘাত সহ্য করিয়াছি, অবিচলিত চিত্তে কারাগারে গমন করিয়াছি, এবং এক্ষণে এই সভাক্ষেত্রে সমবেত হইয়া সমগ্র জগৎকে দেখাইতেছি যে যাহার স্বদেশী আন্দোলনের সংশ্রবে নির্য্যাতন ভোগ করিয়াছেন তাঁহারা আমাদিগের নিকটে কোন ক্রমেই সম্মানভ্রষ্ট বা গৌরবহীন হন নাই। বরং তাঁহাদিগের লাঞ্ছনা ভোগে সাধারণের নিকট তাঁহাদিগের সম্মান বৃদ্ধি হইয়াছে এবং তাঁহারা সাধারণের অধিকতর অনুরাগের পাত্র ও শ্রদ্ধাভাজন হইয়া লোকের হৃদয়ে উচ্চতর স্থান অধিকার করিয়াছেন।
 রাজাদেশের প্রত্যাহার করা আমাদিগের পক্ষে সম্ভব নহে।