[ ৭৮ ]
যোগে বরিশালে গমন করিতেছিলেন। বরিশালের স্বেচ্ছা সেবকেরা কলিকাতার প্রতিনিধিদিগের প্রত্যুদ্গমনের জন্য খুলনা পর্য্যন্ত আগমন করিয়াছিলেন। তথা হইতে ষ্টিমারের প্রত্যেক ঘাটেই স্থানীয় অধিবাসিগণের অভ্যর্থনার জন্য বিবিধ বর্ণের পতাকা হস্তে সমবেত হইয়া “বন্দে মাতরম্” ধ্বনি সহকারে চতুর্দ্দিক কম্পিত করিয়াছিলেন। খুলনার ষ্টীমার ঘাটে সভাপতি মহাশয়ের যথোচিত সম্বৰ্দ্ধনা হইয়াছিল।
পূর্ব্ববঙ্গের ষ্টীমারষ্টেসনে বহু প্রহরী বড় বড় লাঠী হস্তে লইয়া “বন্দেমাতরম্” ধ্বনি নিবারণের জন্য উপস্থিত ছিল। ষ্টীমার হইতে প্রতিনিধিগণ তীরস্থ ব্যক্তিদিগকে “বন্দেমাতরম্” বলিয়া অভিবাদন করিলেন। কিন্তু পুলিশের ভয়ে তীরস্থ লোকেরা প্রথমে “বন্দে মাতরম্” বলিয়া তাঁহাদিগের প্রত্যভিবাদন করিতে পারেন নাই। কিন্তু তাহার পর যখন এণ্টিসার্কুলার সোসাইটির যুবকদিগের মধ্যে দুই একজন অগ্রসর হইয়া বলিলেন, “বল ভাই বন্দেমাতরম্। যদি বাঙ্গালী হও, তবে আজ প্রাণ খুলিয়া বল, বন্দে মাতরম্, জীবন ধন্য হউক।” এই কথায় বালির বাঁধ ভাঙ্গিয়া গেল, লগুড়ধারী পুলিশ প্রহরীর ভয় ঘুচিল। তীর হইতে সহস্ৰ সহস্র কণ্ঠে চতুর্দ্দিক মুখরিত করিয়া ধ্বনি উঠিল “বন্দেমাতরম্”। অনেক স্থানেই এইরূপ হইয়াছিল, পুলিশ প্রহরীরাও ভয়ে উচ্চবাচ্য করে নাই। মাঠের কৃষকেরা পর্য্যন্ত লাঙ্গল ছাড়িয়া নদীতীরে সমবেত হইয়া সেই বন্দেমাতরম্ উচ্চারণে যোগদান করিয়াছিল।