SVR সেকালের সুখদুঃখ অরাজকতায় জমীদার ও মহাজন যতই উৎপীড়িত হ’ন না কেন, কৃষক-কুটীরে তাহার ছায়াস্পশ হইত না। কৃষক যথাকালে হল চালনা করিয়া, যথা-প্রাপ্য শস্য সঞ্চয় করিয়া, স্ত্রীপুত্র লইয়া যথাসম্ভব নিরুদ্বেগেই কালব্যাপন করিত। দেশে দসু্য-তস্করের উৎপীড়নের অভাব ছিল না; কিন্তু দেশের লোকের অন্ত্রশস্ত্র ব্যবহারেও কোনরূপ নিষেধ ছিল না। সন্ত্রান্ত বংশের যুবকেরাও লাঠি তরবারি চালনা করিতে জানিতেন। দসু্য-তস্করের উপদ্রব। হইলে, গ্রামের লোকে দল বাধিয়া, রাত্রি জাগিয়া, লাঠি ঘুরাইয়া, মশাল জালাইয়া, তরবারি ভাজিয়া, বর্ষা চালাইয়া আত্মরক্ষা করিত। দস্য-তস্কর ধরা পড়িলে, গ্রামবাসীরাই দশজনে মিলিয়া প্রয়োজনাতীত উত্তম-মধ্যম দিয়া সংক্ষেপে বিচার-কার্য্য সমাধা করিয়া ফেলিত। ইহাতে যেমন দুঃখ ছিল, সেইরূপ সুখও ছিল। আজকাল দসু্য-তস্করে উপদ্রব করিলে, কেহ কাহারও সাহায্য করিতে বাহির হয় না; অসহায় গৃহস্থ ঘরে পড়িয়া আর্ত্তনাদ করিতে থাকে! দাসু্যদল সর্বস্ব লুটিয়া, মানসন্ত্রম পদদলিত করিয়া, হেলিতে দুলিতে ধীরে ধীরে বহুদূরে চলিয়া গেলে, গৃহস্থ পঞ্চায়েৎ ডাকিয়া থানায় গিয়া পুলিসে সংবাদ দিয়া আসে। দারোগা, বকসী, কনেষ্টবল এবং চৌকীদার মহাশয় অবসর অনুসারে একে একে শুভাগমন করিলে, গৃহস্থ ব্যস্তসমস্ত হইয়া একহাতে চোখের জল মুছিতে মুছিতে, আর একহাতে র্তাহাদের যথাযোগ্য মর্য্যাদা রক্ষার জন্য ঋণ গ্রহণে বাহির হয়। দস্য-তস্কর ধরা পড়ুক বা না পড়ুক, সন্দেহে পড়িয়া অনেক গরীবকে নির্য্যাতন সহা করিতে হয়; দুই একস্থলে মিথ্যা অভিযোগ বলিয়া গহস্তকে রাজ্যদ্বারে বিলক্ষণ