পাতা:Intermediate Bengali Selections.pdf/৩০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাব্যের উপেক্ষিতা কবি তাহার কল্পনা-উৎসবের যত করুণাবারি সমস্তই কেবল জনক তনয়ার পুণ্য অভিষেকে নিঃশেষ করিয়াছেন। কিন্তু আর একটি যে মানমুখী ঐহিকের সর্বসুখ বঞ্চিত রাজবধু সীতাদেবীর ছায়াতলে অবগুষ্ঠিত হইয়া দাড়াইয়া আছেন, কবি-কমণ্ডলু হইতে একবিন্দু অভিষেক বারিও কেন তঁাহার চিরদুঃখাভিতপ্ত নমিললাটে সিঞ্চিত হইল না! হায় অব্যক্তবেদনা দেবী উর্ম্মিলা, তুমি প্রত্যুষের তারার মত মহাকাব্যের সুমেরুশিখরে একবারমাত্র উদিত হইয়াছিলে, তারপরে অরুণালোকে আর তোমাকে দেখা গেল না! কোথায় তোমার উদয়াচল, কোথায় বা তোমার অস্তাচল তাহা প্রশ্ন করিতেও সকলে বিশ্বত হইল। কাব্যসংসারে এমন দুটি একটি রমণী আছে যাহার কবিকর্তৃক সম্পূর্ণ উপেক্ষিত হইয়াও অমরলোক হইতে ভ্রষ্ট হয় নাই। পক্ষপাতকৃপণ কাব্য তাহদের জন্য স্থানসঙ্কোচ করিয়াছে বলিয়াই পাঠকের হৃদয় অগ্রসর হইয়া তাহাদিগকে আসন দান করে। কিন্তু এই কবিপরিত্যক্তাদের মধ্যে কাহাকে কে হৃদয়ে আশ্রয় দিবেন, তাহ পাঠক বিশেষের প্রকৃতি এবং অভিরুচির উপর নির্ভর করে। আমি বলিতে পারি, সংস্কৃত সাহিত্যে কাব্যযজ্ঞশালার প্রান্তভূমিতে যে কয়টি অনাদৃতার সহিত আমার পরিচয় হইয়াছে, তাহার মধ্যে উর্ম্মিলাকে আমি প্রধান স্থান দিই। বোধ করি তাঁহাই একটা কারণ, এমন মধুর নাম সংস্কৃত কাব্যে আর দ্বিতীয় নাই। নামকে যাহার নামমাত্র মনে করেন।