জীবন স্মৃতি। 8 ዓ সনের গণিতাধ্যাপকের পদ, কিয়দধিক চল্লিশ বৎসর কাল অলঙ্কত করিয়াছিলেন। পুর্বে যাহাঁদের বি-এল পরীক্ষা দিবার ইচ্ছা থাকিত, তাহারা বি-এ পড়িবার সময়, আইনের প্রথম ও দ্বিতীয় বৎসরের লেকচার শুনিতেন। সার গুরুদাস তাহাই করিয়াছিলেন। ১৮৬৬ সালে বি-এল পরীক্ষায় তিনি সর্বোচ্চ স্থান অধিকার করেন। শ্রীযুক্ত নীলাম্বর মুখোপাধ্যায় দ্বিতীয় হন। বি-এল পরীক্ষা দিবার কিছু পূর্বে সার গুরুদাস রাত জাগিয়া পড়িতে আরম্ভ করেন। দিবাভাগে কলেজে পড়াইতে ও তজ্জন্য প্রস্তুত হইতে যে সময় যাইত, রাত্রিকালে ঘুমের পরিসর কমাইয়া তাহা পোষাইয়া লইতেন। প্রথম প্রথম তিনি মশারির মধ্যে প্রদীপ রাখিয়া পড়িতেন। পাছে আগুন লাগে এই ভয়ে তঁহার মাতৃদেবী নিয়ম করেন যে মশারির বাহিরে প্রদীপ রাখিয়া পড়িতে হইবে। রাত জাগিয়া যদি পীড়া হয়, এই ভয়ে তাহার জননী প্রায়ই অনুযোগ করিতেন। এই সময়ে সার গুরুদাসের এক আত্মীয় আসিয়া তঁহাকে বলেন,-দাদা খুব চেপে পড়ে দেখো যেন সোনার মেডেলটা তোমার হাত পিছলে নীলাম্বরের হাতে না যায়। বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়ের মাতৃদেবী এই কথা শুনিয়া রাগে জলিয়া উঠিয়া বলিলেন—তুমি কি তবে রেষারেষি করে রাত জাগচী? তুমি কি দুনিয়ার সমস্ত ভাল জিনিষ একচেটি করূতে চাও? এত লোভ ত’ ভাল নয়। অসুখ হ’লে তোমার একজমিন ও সোনার মেডেল কোথা থাকবে? আমি মন খুলে বলচি এবার নীলাম্বর মেডেল পেলে আমি সুখী হইব। সে কেন একবার সোণার মেডেল পাবে না? তোমার কর্ম্ম তুমি ভাল মনে ক’রে যাও।—রেষারেষি কোরো না-দিনি ফল দেবার কর্ত্ত তিনি দেবেন।