পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/১০৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভাগবত—জীবন চক্রবর্ত্তী—১৮শ শতাব্দী।
৯১৯

যত সব দোষ মোর পার কর এই ঘোর
তব পুণ্যে পার হৈয়া যাই॥
দিনে হৈল অন্ধকার দেখিতে না পাই আর
বায়ু বহে বড়ই প্রবল।
অগাধ সলিলে তরী যতনে রাখিতে নারি
পাছে নৌকা যায় রসাতল॥
শুনিঞা নায়্যার কথা কহে বৃকভানু-সুতা
কর্ণধার কর অবধান।
বিধি মোহে দিল ভার তাহে কি করিব আর
অঙ্গ দূর না হএ নিদান॥
বলয়াদি কর্ণধার জলে ফেলি অলঙ্কার
ইহা বিনে না দেখি উপায়।
নায়্যা বলে রাই শুন ফেলিবে সকল কেন
দেখি আগে কত ভার তায়॥
কানুর বচন শুনি মনে ভাবে বিনোদিনী
নিশ্চয় মাগিল এই বর।
জীবন বলেন মাতা মনে না ভাবিহ ব্যথা
এখনি হইবে সুখে পার॥


অঙ্গের বসন আগে খসাহ আপনি।
কত আভরণ আগে দির বিনোদিনি॥
বসনে নাহিক ভার শুন কর্ণধার।
যত ভার সব মোর এই অলঙ্কার॥
আভরণ খসাইয়া দিল আগে করি।
না দিহ যন্ত্রণা তুমি না কর চাতুরী॥
চাতুরী না করি রাই শুনহ বচন।
মোরে তুমি দোষ দেহ কিসের কারণ॥
তরী টলমল করে নাঞি দেখ তুমি।
নৌকা ডুবে মোর দোষ নাই বিনোদিনি॥
দিবসে হইল মোর ঘোর অন্ধকার।
না পারি রাখিতে তরী নাহিক নিস্তার॥
দেখিয়া শুনিঞা রাই হইলা কাতর।
গদগদ বলে বাণী কাঁপে কলেবর॥