পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/১০৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৪০
বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়।

রুক্মিণীর জনৈক দাসী শিশুপাল-সহিত সম্বন্ধ শুনিয়া রুক্মিণীর নিকট কহেন।

রাণীর মহলে এত করিয়া শ্রবণ।
কোন সখী রুক্মিণীরে কহিছে তখন॥
শুভ সমাচার শুন ঠাকুর কুমারী।
আজি কালি মধ্যে বিভা ঘটাবে তোমারি॥
মিলেছে কুলীন বর অতি চমৎকার।
ঠাকুর জামাই পাল ঘোষের কুমার॥
বড়ই সুন্দর বর শিশুপাল নাম।
সুখেতে পূরাও দেবি নিজ মনস্কাম॥
শিশুপালের কথা শুনে সখীর বদনে।
করে আচ্ছাদিল দেবী যুগল-নয়নে॥
চিন্তিতা হইলা মনে অচিন্ত্যরূপিণী।
মনে মনে বলে রক্ষা কর চিন্তামণি॥
দাসী বলে পীতাম্বর দেহ পদাশ্রয়।
দূর কর শিশুপালে হও হে সদয়॥
তোমা ভিন্ন অন্য মতি নাহিক আমার।
দুঃখিনীরে দুঃখ-নীরে কর কৃষ্ণ পার॥
বাঞ্ছা-কল্পতরু তুমি বেদাগমে বলে।
মম বাঞ্ছা পূর্ণ কর রাখ পদতলে॥

এত বলি মৌনে রহে ভীষ্মক-নন্দিনী।
কাণাকাণি করে দেখে যতেক সঙ্গিনী॥
কেহ কহে ওমা ওমা এ আর কেমন।
বিবাহের নামে কেন বিরস বদন॥
বিবাহ শ্রবণে নারী হয় আনন্দিতা।
হর্ষযুতা ঠাকুরাণী হলে যে দুঃখিতা॥
কোন সখী বলে সখী তা নয় তা নয়।
বিবাহের নামেতে অমন লজ্জা হয়॥
নির্লজ্জ কহিবে লোকে সলজ্জ না হলে।
সেই হেতু মুখে লাজ মন রসে টলে॥
কোন সখী বলে ভাব বুঝেছি অন্তরে।
শিশুপালে ঠাকুরঝীর মনে নাহি ধরে॥