পোকা-মাকড়/ষষ্ঠ শাখার প্রাণী/পতঙ্গ/পতঙ্গের শুঁয়ো

উইকিসংকলন থেকে

শুঁয়ো

 চিংড়ির মাথায় যেমন শুঁয়ো থাকে, পতঙ্গদের মাথায় সেই রকম শুঁড় বা শুঁয়ো আছে। কোলো পতঙ্গের শুঁয়ো লম্বা কোনোটির আবার খুব ছোট। শুঁয়োর আকৃতিও নানা রকম হয়। যাহা হউক, পতঙ্গদের শুঁয়োর আগাগোড়া অখণ্ড জিনিস নয়। অনেক সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম গাঁট্ জোড়া দিয়া এক একটি শুঁয়ো তৈয়ারি হয়। তাই পতঙ্গেরা যে দিকে খুসি শুঁয়ো হেলাইতে পারে।

 তোমরা বোধ হয় লক্ষ্য কর নাই, পতঙ্গেরা যখন গাছের ডালে বা পাতায় বসিয়া বিশ্রাম করে, তখন তাহারা শুঁয়ে। দুটিকে পিঠের উপরে ফেলিয়া রাখে। কোনো জিনিস সম্মুখে পাইলে, আমরা যেমন হাত দিয়া ছুঁইয়া তাহা ঠাণ্ডা, গরম কি শক্ত বুরিয়া লই, পতঙ্গেরা শুঁয়ো দিয়া ছুঁইয়া তাহার ঐরকম পরিচয় গ্রহণ করে। যদি আরসুলার লম্বা শুঁয়োতে হঠাৎ তোমার হাত লাগে, তবে সেই মৃদু স্পর্শও জানিতে পারিয়া আরসুলা পলাইয়া যায়। অনেক পতঙ্গের দেহে নাকের সন্ধান পাওয়া যায় না। সম্ভবত ইহারা শুঁয়ো দিয়াই নাকের কাজ চালায়। যাহাই হউক, শুঁয়ো যে পতঙ্গদের বিশেষ দরকারি ইন্দ্রিয় তাহাতে আর একটুও সন্দেহ নাই। দুইটি পিঁপ্‌ড়ে চলিতে চলিতে মুখোমুখি হইলে কি করে তোমরা দেখ নাই কি? তাহারা শুঁয়ো দিয়া পরস্পরকে ছুঁইতে থাকে, দেখিলে মনে হয় যেন, তাহারা পরস্পর কি বলাবলি করিতেছে।