প্রবেশদ্বার:ত্রিপুরা/নির্বাচিত লেখা/১

উইকিসংকলন থেকে
এই নির্বাচিত বইটির Mobi ফাইল ডাউনলোড করুন। এই নির্বাচিত বইটির EPUB ফাইল ডাউনলোড করুন। এই নির্বাচিত বইটির ODT ফাইল ডাউনলোড করুন। এই নির্বাচিত বইটির PDF ফাইল ডাউনলোড করুন।

রাজমালা নামক গ্রন্থটি ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্তী দ্বারা স্কুলপড়ুয়াদের জন্য সহজ গদ্যে রচিত ত্রিপুরার রাজ-ইতিবৃত্ত বিশেষ। বহু অলঙ্করণে সমৃদ্ধ এই রাজমালা ১৯৪১ সালে আগরতলা থেকে প্রকাশিত হয়। অলঙ্করণে ছিলেন লেখকের ভাই ও শান্তিনিকেতনের কলাভবনের বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী রমেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ও তাঁর কলাভবন-সতীর্থ ধীরেন্দ্রকৃষ্ণ দেববর্মণ। লেখকের মৃত্যুর পর ১৯৪৭ সালে ত্রিপুরার প্রবীণ সাহিত্যিক সত্যরঞ্জন বসু কর্তৃক পরিবর্ধিত হয়ে এর দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থ কালীপ্রসন্ন বিদ্যাভূষণ সম্পাদিত রাজমালার পাঠ অনুযায়ী ত্রিপুরার মহারাজ কল্যাণমাণিক্য অবধি রচিত হয়েছে, তারপরের অংশ গোবিন্দমাণিক্য থেকে কৃষ্ণকিশোরমাণিক্য পর্যন্ত চন্দ্রোদয় বিদ্যাবিনোদ সম্পাদিত রাজমালা অবলম্বনে রচিত। ঈশানচন্দ্রমাণিক্যের রাজত্বের সম্পূর্ণ ও বীরচন্দ্রমাণিক্যের আংশিক ঐতিহাসিক উপাদান কৈলাস সিংহের রাজমালা থেকে নেওয়া। বীরচন্দ্রের বাকি অর্ধ ও রাধাকিশোরমাণিক্যের সম্পূর্ণ আলেখ্য কর্ণেল মহিমচন্দ্র ঠাকুরের দেশীয় রাজ্য অনুসারে রচিত। ভূপেন্দ্রচন্দ্র তাঁর রচনায় ত্রিপুরার শেষ রাজা কিরীটবিক্রমকিশোর পর্যন্ত ত্রিপুরার রাজবংশের ইতিহাস বর্ণনা করেছেন।

বেদে পুরূরবার নাম প্রসিদ্ধ। ইঁহার আয়ু নামে পুত্র হয়। আয়ুর পুত্ৰ নহুষ, নহুষের ছয় পুত্র জন্মে—তন্মধ্যে জ্যেষ্ঠ যতির বৈরাগ্য উদয় হওয়ায় ইনি রাজ্যভার গ্রহণ করেন নাই। সুতরাং পিতার বিপুল রাজত্বে দ্বিতীয় পুত্র যযাতির অধিকার জন্মে। মহারাজ যযাতির দুই বিবাহ। শুক্রাচার্য্য-কন্যা দেবযানীগর্ভে তাঁহার যদু ও তুর্ব্বসু নামে দুই পুত্র আর বৃষপর্ব্বার কন্যা শর্ম্মিষ্ঠার গর্ভে দ্রুহ্যু, অনু ও পুরু নামে তিন পুত্র জন্মে। কোনও কারণে শুক্রাচার্য্য ক্রুদ্ধ হইয়া যযাতিকে এই বলিয়া শাপ দেন, “তুমি যদিও বয়সে এখনো বৃদ্ধ হও নাই, আমি শাপ দিতেছি তোমার শরীর অচিরে জরায় জীর্ণ হইয়া যাউক, তুমি আশী বছরের বুড়ার ন্যায় একেবারে জড়সড় হইয়া পড়।’ কি দারুণ শাপ! মুনি ঋষিদের মুখের কথা বাহির হইলে, ইহা কখনো বিফল হইবার নয়। মহারাজ যযাতি ভয়ে এতটুকু হইয়া গেলেন, অনুনয় করিয়া কহিলেন—‘প্রভো, এই সংসারের সাধ আমার এখনো মিটে নাই; অামি শাপ দিতেছি, তোমার শরীর অচিরে জীর্ণ হইয়া যাউক।মনের মধ্যে ভোগের আশা তেমনি রহিয়া গিয়াছে, আপনি শাপ দিয়া শরীরকে বুড়া করিয়া ফেলিলেন কিন্তু মন ত বুড়া হইল না; এখন এর একটা উপায় করুন।’ শুক্রাচার্য্যের মনে বুঝি দয়ার সঞ্চার হইল। তিনি বলিলেন—‘আচ্ছা, আমি এর একটা উপায় করিতেছি। তোমাকে এই বর দিতেছি, তুমি নিজের জরা অপরকে দিতে পারিবে। যদি কোন তরুণ তোমার জরা গ্রহণ করে তবেই তুমি শাপমুক্ত হইলে।’
(আরও পড়ুন...