পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বিতীয় সম্ভার).djvu/১৪: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিসংকলন থেকে
TarunnoBot (আলোচনা | অবদান)
Text from Google OCR
 
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
 
(কোনও পার্থক্য নেই)

২১:৫৬, ১০ জুলাই ২০১৮ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰই সঙ্গে নিজেও বাহির হইয়া গেল। বেশ দেখিতে পাইলাম, আমার আকস্মিক শুভাগমনে এ বাড়ির ভারকেন্দ্রটা সাংঘাতিক রকম বিচলিত হইয়া উঠিয়াছে। পিয়ারী কিন্তু অনতিকাল পরেই ফিরিয়া আসিয়া আমার মুখের দিকে খানিকক্ষণ চাহিয়া থাকিয়া কহিল, এখন হঠাৎ আসা হ'ল যে ? বলিলাম, দেশের লোক, অনেকদিন না দেখে বড় ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলুম বাইজী ! পিয়ারীর মুখ আরও ভারী হইয়া উঠিল। আমার পারিহাসে সে কিছুমাত্র যোগ না দিয়া বলিল, আজ রাত্রে এখানেই থাকবে ত ? থাকতে বল, থাকব । আমার আর বলাবলি কি ! তবে তোমার হয়ত অসুবিধে হবে। যে ঘরটায় তুমি শুতে, সেটাতে— বাবু গুচ্ছেন? বেশ ! আমি নীচে শোবো, তোমার নীচের ঘরগুলোও ত চমৎকার । নীচে শোবে ? বল কি ! মনের মধ্যে এতটুকু বিকার নেই—দু-দিনেই এতবড় পরমংস হয়ে উঠলে কি করে ? মনে মনে বলিলাম, পিয়ারী, আমাকে তুমি এখনও চেনোনি। মুখে বলিলাম, আমার তাতে মান অভিমান একবিন্দু নেই। আর কষ্টের কথা যদি মনে কর ত সেটা একেবারে নিরর্থক । আমি বাড়ি থেকে বেরোবার সময় খাবার-শোবার ভাবনাগুলোও ফেলে রেখে আসি। সে ত তুমি নিজেও জানো। বেশী বিছানা থাকে ত একটা পেতে দিতে বলো, না থাকে দরকার নেই—আমার কম্বল সম্বল আছে। পিয়ারী ঘাড় নাড়িয়া বলিল, তা আছে জানি । কিন্তু এতে তোমার মনে কোনরকম দুঃখ হবে না ত ? আমি হাসিয়া বলিলাম, না। কারণ স্টেশনে পড়ে থাকার চেয়ে এটা ঢের ভাল । পিয়ারী ক্ষণকাল নীরব থাকিয়া বলিল, কিন্তু আমি হলে বরঞ্চ গাছতলায় পড়ে থাকতুম, এত অপমান সহ করতুম না। তাহার উত্তেজনা লক্ষ্য করিয়া আমি না হাসিয়া পারিলাম না । সে যে কি কথা আমার মুখ হইতে শুনিতে চায়, তাহা আমি অনেকক্ষণ টের পাইয়াছিলাম। কিন্তু শাস্ত, স্বাভাবিক কষ্ঠে জবাব দিলাম, আমি এত নিৰ্ব্বোধ নই যে, মনে করব তুমি ইচ্ছে ক’রে আমাকে নীচে শুতে বলে অপমান কয়চ। তোমার সাধ্য থাকলে তুমি সেবারের মতই আমার শোবার ব্যবস্থা করতে। সে যাক, এই তুচ্ছ ব্যাপার নিয়ে কথা কাটাকাটি করবার দরকার নেই—তুমি রতনকে পাঠিয়ে দাও গে, আমাকে নীচের ঘরটা দেখিয়ে দিয়ে আশ্বক, আমি কম্বল বিছিয়ে শুয়ে পড়ি। ভারী ক্লান্ত হয়ে পড়েছি ।