পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/২৩০: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিসংকলন থেকে
TarunnoBot (আলোচনা | অবদান)
Text from Google OCR
 
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
 
(কোনও পার্থক্য নেই)

২১:৫৯, ১০ জুলাই ২০১৮ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎসাহিত্য-সংগ্ৰহ আপ্তবাবু অপ্রতিভ হইলেন, কিন্তু প্রকাশ পাইতে দিলেন না, কহিলেন, ন, মনেই পড়েনি সত্যি। চোখের সামনের জিনিস যেমন দৃষ্টি এড়িয়ে যায়—তেমনি। তোমার নামটা করতে পারলে সত্যিই তার মস্ত জবাব হতো, কিন্তু সে যখন মনে এলো না, তখন কমল বললে, আমাকে যে শিক্ষার খোটা দিলেন আণ্ডবাবু, আপনাদের নিজের সম্বন্ধেও কি তাই ষোলো আনায় থাটে না ? সার্থকতার যে আইডিয়া শিশুকাল থেকে মেয়েদের মাথায় ঢুকিয়ে এসেচেন, সেই মুখস্থ বুলিই তো তারা সদৰ্পে আবৃত্তি করে ভাবে এই বুঝি সত্যি ! আপনারাও ঠকেন, আত্মপ্রসাদের ব্যর্থ অভিমানে তারা নিজেরাও মরে । বলেই বললে, সহমরণের কথা তো আপনার মনে পড়া উচিত। যারা পুড়ে মরত এবং তাদের যার প্রবৃত্তি দিত দু’পক্ষের দস্তই তো সেদিন এই ভেবে আকাশে গিয়ে ঠেকত যে, বৈধব্য-জীবনের এতবড় আদর্শের দৃষ্টান্ত জগতে আর আছে কোথায় ? এর উত্তর যে কি আছে খুজে পেলুম না। কিন্তু সে অপেক্ষাও করলে না, নিজেই বললে, উত্তর তো নেই, দেবেন কি ? একটু থেমে আমার মুখের পানে চেয়ে বললে, প্রায় সকল দেশেই এ আত্মোৎসর্গ কথাটার একটা বহুব্যাপ্ত ও বহুপ্রাচীন পারমার্থিক মোহ আছে, তাতে নেশা লাগে, পরলোকের অসামান্ত অবস্তু ইহলোকের সঙ্কীর্ণ সামান্ত বস্তুকে সমাচ্ছন্ন করে দেয়, ভাবতেই দেয় না ওর মাঝে নরনারী কারও জীবনেরই শ্ৰেয়: আছে কি না । সংস্কার-বুদ্ধি যেন স্বতঃসিদ্ধ সত্যের মত কানে ধরে স্বীকার করিয়ে নেয়—অনেকটা ঐ সহমরণের মতই—কিন্তু আর না, আমি উঠি । । সে সত্যিই চলে যায় দেখে ব্যস্ত হয়ে বললাম, কমল, প্রচলিত নীতি এবং প্রতিষ্ঠিত সমস্ত সত্যকে অবজ্ঞায় চূর্ণ করে দেওয়াই যেন তোমার ব্রত। এ-শিক্ষা তোমাকে যে দিয়েচে জগতের সে কল্যাণ করেনি । কমল বললে, আমার বাবা দিয়েচেন । বললাম, তোমার মুখেই শুনেচি তিনি জ্ঞানী ও পণ্ডিত লোক ছিলেন। এ-কথা কি তিনি কখনো শেখাননি যে, নিঃশেযে দান করেই তবে মানুষে সত্য করে আপনাকে পায় ? স্বেচ্ছায় দুঃখ-বরণের মধ্যেই আত্মার যথার্থ প্রতিষ্ঠা । , কমল বললে, তিনি বলতেন, মানুষকে নিঃশেষে শুষে নেবার দুরভিসন্ধি যাদের তারাই অপরকে নিঃশেষে দান করার দুৰ্ব্বদ্ধি যোগায়। দুঃখের উপলব্ধি যাদের নেই, তারাই দুঃখ-বরণের মহিমায় পঞ্চমুখ হয়ে ওঠে। জগতের তুল্য শাসনের দুঃখ তো ও ময়—ওকে যেন স্বেচ্ছায় যেচে ঘরে ডেকে আনা । অর্থহীন সৌধীন জিনিসের মত ও শুধু ছেলেখেলা, তার বড় নয়। ૨૨.૦