পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/১১: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিসংকলন থেকে
TarunnoBot (আলোচনা | অবদান)
Text from Google OCR
 
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
(কোনও পার্থক্য নেই)

২২:০১, ১০ জুলাই ২০১৮ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেনা-পাওনী এককড়ি চোখ তুলিয়া শুধু বলিল, ছ । বিশ্বম্ভর আশ্চর্ঘ্য হইয়া ক্ষণকাল এককড়ির পাণ্ডুর মুখের দিকে চাহিয়া রহিল, তাহার পরে কহিল, হু কি গো নদীমশাই ? স্বয়ং হুজুর আসচেন যে ! এককড়ি মনে মনে একপ্রকার মরিয়া হইয়া উঠিয়াছিল ; বিকৃত-স্বরে জবাব দিল, আসছেন ত আমি করব কি ? খবর নেই, এত্তেলা নেই, হুজুর আসছেন । হুজুর বলে ত আর মাথা কেটে নিতে পারবে না ! এই আকস্মিক উত্তেজনার অর্থ সহসা উপলব্ধি করিতে ন পারিয়া খানিকক্ষণ বিশ্বম্ভর মৌন হুইয়া রহিল, কিন্তু তাহার মগজ যেমন পরিস্কার তেমনি ঠাণ্ডা, এবং পিয়াদা হইলেও গোমস্তার সহিত সম্বন্ধটা অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ । এককড়িকে সে ভিতরে লইয়া গিয়া অতি অল্পকালের মধ্যেই সত্ত্বনা দান করিল, এবং মদের বোতল, মাংস এবং আনুষঙ্গিক আরও একটা বস্তুর গোপন ইঙ্গিত করিয়া এত বড় আশর বাণী শুনাইতে ইতস্তত: করিল না যে, পুরুষের ভাগ্যের সীমা যখন দেবতারাও নির্দেশ করিতে পারেন না, তখন হুজুরের নজরে পড়িলে নন্দামশায়ের অদৃষ্টেও কেন যে একদিন সদরের নায়েবী পদ মিলিবে না, এমন কথা কেহই জোর করিয়া বলিতে পারেন না । অনতিকাল মধ্যেই এককড়ি যখন জন-কয়েক লোক, গোটা-দুই আলো এবং সামান্ত কিছু ফলমূল সংগ্ৰহ করিয়া লইয়া বিশ্বম্ভরকে সঙ্গে করিয়া শান্তিকুঞ্জের ভাঙা গেটের সম্মুখে উপস্থিত হইল, তখন সন্ধ্য। উত্তীর্ণ হইয়াছে। দেখিল ইতিমধ্যেই কিছু কিছু ডালপালা ভাঙিয়া ফেলিয়। পথটাকে চলনসহ করা হইয়াছে , তথাপি এই বনময় অন্ধকার পথে সহসা প্রবেশ করিতে বহুক্ষণ পর্য্যস্ত কাহারও ভরসা হইল না । এবং প্রবেশ করিয়াও পা ফেলিতে প্রতিপদেই তাহদের গা ছমৃছমৃ করিতে লাগিল । বিঘা-দশেক ভূমি ব্যাপিয়া এই বন, সুতরাং পথও অল্প নহে, তাহ অতিক্রম করিবার দুঃখও অল্প নহে । কোথাও একটা দীপ নাই, কেবল চাতালের একধারে যেখানে বাহকের পালকি নামাইয়া রাখিয়া একত্রে ধুমপান করিতেছে তাহারই অদূরে একখণ্ড জলস্তু শুষ্ককাষ্ঠ হইতে কতকটা স্থান যৎকিঞ্চিং আলোকিত হইয়াছে। খবর পাইয়া ভূত্য আসিয়ু এককড়িকে একটা ঘরের মধ্যে লইয়া গেল । সমস্ত কক্ষ মদের গন্ধে পরিপূর্ণ, এককোণে মিটমিট করিয়া একটা মোমবাতি জলিতেছে এবং অপরপ্রান্তে একটা ভাঙা তক্তপোষের উপর বিছানা পতিয়া বীজগায়ের জমিদার জীবানন্দ চৌধুৰী বসিয়া আছেন। লোকটা অত্যন্ত রোগা এবং ফরসা ; বয়স অনুমান কর। অতিশয় কঠিন, কারণ উপদ্রবে অত্যাচারে মুখখানা শুকাইয়া যেন একেবারে কাঠের মত শক্ত হইয়া উঠিয়াছে। সম্মুখে মুরাপূর্ণ র্কাচের গেলাস এবং তাহারই পার্থে বিচিত্র আকারের একটা মদের বোতল প্রায় শেষ হইয়াছে। ళ 兹