পাতা:গল্পগুচ্ছ (চতুর্থ খণ্ড).pdf/২০০: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিসংকলন থেকে
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান)
Text from Google OCR
 
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
(কোনও পার্থক্য নেই)

১৬:৩৯, ১১ জুলাই ২০১৮ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কর্ণা ՖԳs কথা কহিবার জো থাকিবে না। সে বলে, “মানুষকে ভালোবাসিতে দোষ কী। আমি তো মোহিনীকে তেমন ভালোবাসি না, আমি তাহাকে ভগিনীর মতো, বন্ধর মতো ভালোবাসি— আমি কখনও তাহার অধিক তাহাকে ভালোবাসি না।’ এই কথা এত বিশেষ করিয়া ও এত বার বার বলিত যে তাহাতেই বুঝা যাইত তদপেক্ষাও অধিক ভালোবাসে। সে আপনার মনকে ভ্রান্ত করিতে চেষ্টা করিত, সতরাং ঐ এক কথা তাহাকে বার বার বিশেষ করিয়া বলিতে হইত। ঐ এক কথা বার বার বলিয়া তাহার মনকে বিশ্ববাস করাইতে চাহিত, তাহার মন এক-একবার অলপ-অলপ বিশ্বাস করিত। সে বলিত, আপনার ভগিনীর মতো, বন্ধর মতো যদি মোহিনী মাঝে মাঝে আমাদের বাড়িতে আসে তাহাতে দোষ কণী । বরং না আসিলেই দোষ। কেন, মোহিনী তো আর-সকলের সঙ্গেই দেখা করিতে পারে, তবে আমার সঙ্গে দেখা করিতে পরিবে না কেন। যেন সত্য-সতাই আমাদের মধ্যে কোনো সমাজবিরদ্ধে ভাব আছে—কিন্তু তাহা তো নাই, নিশ্চয় তাহা নাই, তাহা থাকা অসম্পভব । আমি রজনীকে প্রেমের ভাবে ভালোবাসি, সকলের অপেক্ষা ভালোবাসি— আমি মোহিনীকে কেবল ভগিনীর মতো ভালোবাসি।” মহেন্দ্র এইরুপে মনের মধ্যে সকল কথা তোলাপাড়া করিত। এমন-কি, রজনীকেও তাহার এই-সকল যুক্তি বঝোইয়াছিল। রজনীর বুঝিতে কিছুই গোল বাধে নাই, সে বেশ স্পষ্টই বুঝিয়াছিল। সে নিজে গিয়া মোহিনীকে ঐ-সমস্ত কথা বুঝাইল, মোহিনী বিশেষ কিছুই উত্তর দিল না। মনে-মনে কহিল, সকলের মন জানি না, কিন্তু আমার নিজের মনের উপর আমার বিশ্বাস নাই।’ মোহিনী ভাবিল— আর না, আর এখানে থাকা শ্রেয় নহে । মোহিনী কাশী যাইবার সমসত বন্দোবসত করিল, বাড়ির লোকেরা তাহাতে অসম্মত হইল না। কাশী যাইবার সময় কর্ণা ও রজনীর সহিত একবার দেখা করিল। কর্ণা কহিল, “তুমি কাশী যাইতেছ, যদি আমাদের পণ্ডিতমহাশয়ের সঙ্গে দেখা হয় তবে তাঁহাকে বলিয়ো আমি ভালো আছি।” কর্ণা জানিত যে, পণ্ডিতমহাশয় নিশ্চয় তাহার কুশলসংবাদ পাইবার জন্য আকুল আছেন। কর্ণা যাহা মনে করিয়াছিল তাহা মিথ্যা নহে। নিধির পীড়াপীড়িতে রেলের গাড়িতে চড়িয়া পণ্ডিতমহাশয়ের এমন অনুতাপ হইয়াছিল যে অনেকবার তিনি চীৎকার করিয়া গাড়ি থামাইতে অনুরোধ করিয়াছিলেন। গাড়োয়ান যখন কিছুতেই ব্রাহ্মণের দোহাই মানিল না, তখন তিনি ক্ষান্ত হন। কিন্তু বার বার কাতরস্বরে নিধিকে বলিতে লাগিলেন কাজটা ভালো হইল না’। দুই-চার-বার এইরুপ বলিতেই নিধি মহা বিরক্ত হইয়া বিলক্ষণ একটি ধমক দিয়া উঠিল। পণ্ডিতমহাশয় নিধিকে আর-কিছয় বলিতে সাহস করিলেন না ; কিন্তু গাড়ির কোণে বসিয়া এক ডিবা নস্য সমস্ত নিঃশেষ করিয়াছিলেন ও তাঁহার চাদরের এক অংশ আশ্রজেলে সক্ষপণেরপে ভিজাইয়া ফেলিয়াছিলেন। কেবল গাড়িতে নয়, যেখানে গিয়াছেন নিধিকে বার বার ঐ এক কথা বলিয়া বিরক্ত করিয়াছেন। কাশীতে ফিরিয়া আসিয়া যখন কর্ণাকে দেখিতে পাইলেন না, তখন তাঁহার আর অনন্তাপের পরিসীমা রহিল না। নিধিকে ঐ এক কথা বলিয়া এমন বিরক্ত করিয়া তুলিয়াছিলেন যে, সে একদিন কলিকাতায় ফিরিয়া যাইবার সমস্ত উদ্যোগ করিয়াছিল। t #