পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৭: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিসংকলন থেকে
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|২৬৮|গল্পগুচ্ছ|}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
অন্ধকার এবং নিস্তব্ধ। কেবল এক-একবার যন্ত্রণার কিঞ্চিৎ উপশমে আমার স্ত্রীর গভীর দীর্ঘনিশ্বাস শুনা যাইতেছিল।
२७४ গল্পগুচ্ছ

অন্ধকার এবং নিস্তৰধ। কেবল এক-একবার যন্ত্রণার কিঞ্চিৎ উপশমে আমার সন্ত্রীর গভীর দীর্ঘনিশ্বাস শনা যাইতেছিল।
এমন সময়ে মনোরমা ঘরের প্রবেশদ্বারে দাঁড়াইলেন। বিপরীত দিক হইতে কেরোসিনের আলো আসিয়া তাঁহার মুখের উপর পড়িল। আলো-অাঁধারে লাগিয়া তিনি কিছু ক্ষণ ঘরের কিছই দেখিতে না পাইয়া বারের নিকট দাঁড়াইয়া ইতস্তত করিতে লাগিলেন ।
{{gap}}এমন সময়ে মনােরমা ঘরের প্রবেশদ্বারে দাঁড়াইলেন। বিপরীত দিক হইতে কেরােসিনের আলাে আসিয়া তাঁহার মুখের উপর পড়িল। আলাে-আঁধারে লাগিয়া তিনি কিছু ক্ষণ ঘরের কিছুই দেখিতে না পাইয়া দ্বারের নিকট দাঁড়াইয়া ইতস্তত করিতে লাগিলেন।

আমার সত্ৰী চমকিয়া আমার হাত ধরিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “ও কে "– তাঁহার সেই দবল অবস্থায় হঠাৎ অচেনা লোক দেখিয়া ভয় পাইয়া আমাকে দুই-তিনবার অসফটম্বরে প্রশ্ন করিলেন, “ও কে। ও কে গো।”
{{gap}}আমার স্ত্রী চমকিয়া আমার হাত ধরিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “ও কে।”—তাঁহার সেই দুর্বল অবস্থায় হঠাৎ অচেনা লােক দেখিয়া ভয় পাইয়া আমাকে দুই-তিনবার অস্ফুটম্বরে প্রশ্ন করিলেন, “ও কে। ও কে গাে।”
আমার কেমন দরবধি হইল আমি প্রথমেই বলিয়া ফেলিলাম, "আমি চিনি না।" বলিবামাত্রই কে যেন আমাকে কশাঘাত করিল। পরের মহেতেই বলিলাম, “ওঃ, আমাদের ডাক্তারবাবর কন্যা।”

সী একবার আমার মুখের দিকে চাহিলেন; আমি তাঁহার মথের দিকে চাহিতে পারিলাম না। পরক্ষণেই তিনি ক্ষীণস্বরে অভ্যাগতকে বলিলেন, “আপনি আসন।” আমাকে বলিলেন, “আলোটা ধরো।”
{{gap}}আমার কেমন দুর্‌বুদ্ধি হইল আমি প্রথমেই বলিয়া ফেলিলাম, “আমি চিনি না।” বলিবামাত্রই কে যেন আমাকে কশাঘাত করিল। পরের মুহূর্তেই বলিলাম, “ওঃ, আমাদের ডাক্তারবাবুর কন্যা।”
মনোরমা ঘরে আসিয়া বসিলেন। তাঁহার সহিত রোগিণীর অপেস্বল্প আলাপ চলিতে লাগিল। এমন সময় ডাক্তারবাব আসিয়া উপস্থিত হইলেন।

তিনি তাঁহার ডাক্তারখানা হইতে দই শিশি ওষুধ সঙ্গে আনিয়াছিলেন। সেই দটি শিশি বাহির করিয়া আমার স্মীকে বলিলেন, “এই নীল শিশিটা মালিস করিবার, আর এইটি খাইবার। দেখিবেন, দুইটাতে মিলাইবেন না, এ ওষুধটা ভারি বিষ।” &
{{gap}}স্ত্রী একবার আমার মুখের দিকে চাহিলেন; আমি তাঁহার মুখের দিকে চাহিতে পারিলাম না। পরক্ষণেই তিনি ক্ষীণস্বরে অভ্যাগতকে বলিলেন, “আপনি আসুন।” আমাকে বলিলেন, “আলােটা ধরাে।”
আমাকেও একবার সতক করিয়া দিয়া ঔষধ দটি শয্যাপাশববতী টেবিলে রাখিয়া দিলেন। বিদায় লইবার সময় ডাক্তার তাঁহার কন্যাকে ডাকিলেন।

মনোরমা কহিলেন, “বাবা, আমি থাকি না কেন। সঙ্গে সীলোক কেহ নাই, ইহাকে সেবা করিবে কে।”
মনােরমা ঘরে আসিয়া বসিলেন। তাঁহার সহিত রােগিণীর অল্পস্বল্প আলাপ চলিতে লাগিল। এমন সময় ডাক্তারবাবু আসিয়া উপস্থিত হইলেন।
আমার স্ত্রী ব্যস্ত হইয়া উঠিলেন ; বলিলেন, “না, না, আপনি কস্ট করিবেন না। পরানো ঝি আছে, সে আমাকে মায়ের মতো যত্ন করে।”

ডাক্তার হাসিয়া বলিলেন, “উনি মা-লক্ষয়ী, চিরকাল পরের সেবা করিয়া আসিয়াছেন, অন্যের সেবা সহিতে পারেন না।”
{{gap}}তিনি তাঁহার ডাক্তারখানা হইতে দুই শিশি ওষুধ সঙ্গে আনিয়াছিলেন। সেই দুটি শিশি বাহির করিয়া আমার স্ত্রীকে বলিলেন, “এই নীল শিশিটা মালিস করিবার, আর এইটি খাইবার। দেখিবেন, দুইটাতে মিলাইবেন না, এ ওষুধটা ভারি বিষ।”
কন্যাকে লইয়া ডাক্তার গমনের উদযোগ করিতেছেন এমন সময় আমার সী বলিলেন, “ডাক্তারবাব, ইনি এই বন্ধ ঘরে অনেক ক্ষণ বসিয়া আছেন, ইহাকে একবার বাহিরে বেড়াইয়া লইয়া আসিতে পারেন ?”

ডাক্তারবাব আমাকে কহিলেন, “আসন-না, আপনাকে নদীর ধার হইয়া একবার বেড়াইয়া আনি।”
{{gap}}আমাকেও একবার সতর্ক করিয়া দিয়া ঔষধ দুটি শয্যাপার্শ্ববতী টেবিলে রাখিয়া দিলেন। বিদায় লইবার সময় ডাক্তার তাঁহার কন্যাকে ডাকিলেন।
আমি ঈষৎ আপত্তি দেখাইয়া অনতিবিলবে সম্মত হইলাম। ডাক্তারবাব যাইবার সময় দই শিশি ঔষধ সম্বন্ধে আবার আমার স্মীকে সতক’ করিয়া দিলেন।

সেদিন ডাঙ্কারের বাড়িতেই আহার করিলাম। ফিরিয়া আসিতে রাত হইল। আসিয়া দেখি আমার পল্লী ছটফট করিতেছেন। অনতাপে বিশ্ব হইয়া জিজ্ঞাসা করিলাম,
{{gap}}মনােরমা কহিলেন, “বাবা, আমি থাকি না কেন। সঙ্গে স্ত্রীলােক কেহ নাই, ইঁহাকে সেবা করিবে কে।”

{{gap}}আমার স্ত্রী ব্যস্ত হইয়া উঠিলেন; বলিলেন, “না, না, আপনি কষ্ট করিবেন না। পুরানাে ঝি আছে, সে আমাকে মায়ের মতাে যত্ন করে।”

{{gap}}ডাক্তার হাসিয়া বলিলেন, “উনি মা-লক্ষী, চিরকাল পরের সেবা করিয়া আসিয়াছেন, অন্যের সেবা সহিতে পারেন না।”

{{gap}}কন্যাকে লইয়া ডাক্তার গমনের উদ্‌যোগ করিতেছেন এমন সময় আমার স্ত্রী বলিলেন, “ডাক্তারবাবু, ইনি এই বদ্ধ ঘরে অনেক ক্ষণ বসিয়া আছেন, ইঁহাকে একবার বাহিরে বেড়াইয়া লইয়া আসিতে পারেন?”

{{gap}}ডাক্তারবাব, আমাকে কহিলেন, “আসুন-না, আপনাকে নদীর ধার হইয়া একবার বেড়াইয়া আনি।”

{{gap}}আমি ঈষৎ আপত্তি দেখাইয়া অনতিবিলম্বে সম্মত হইলাম। ডাক্তারবাব, যাইবার সময় দুই শিশি ঔষধ সম্বন্ধে আবার আমার স্ত্রীকে সতর্ক করিয়া দিলেন।

{{gap}}সেদিন ডাক্তারের বাড়িতেই আহার করিলাম। ফিরিয়া আসিতে রাত হইল। আসিয়া দেখি আমার শ্রী ছট্‌ফট্ করিতেছেন। অনুতাপে বিদ্ধ হইয়া জিজ্ঞাসা করিলাম,

০৪:১৪, ২৫ জুলাই ২০১৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬৮
গল্পগুচ্ছ

অন্ধকার এবং নিস্তব্ধ। কেবল এক-একবার যন্ত্রণার কিঞ্চিৎ উপশমে আমার স্ত্রীর গভীর দীর্ঘনিশ্বাস শুনা যাইতেছিল।

 এমন সময়ে মনােরমা ঘরের প্রবেশদ্বারে দাঁড়াইলেন। বিপরীত দিক হইতে কেরােসিনের আলাে আসিয়া তাঁহার মুখের উপর পড়িল। আলাে-আঁধারে লাগিয়া তিনি কিছু ক্ষণ ঘরের কিছুই দেখিতে না পাইয়া দ্বারের নিকট দাঁড়াইয়া ইতস্তত করিতে লাগিলেন।

 আমার স্ত্রী চমকিয়া আমার হাত ধরিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “ও কে।”—তাঁহার সেই দুর্বল অবস্থায় হঠাৎ অচেনা লােক দেখিয়া ভয় পাইয়া আমাকে দুই-তিনবার অস্ফুটম্বরে প্রশ্ন করিলেন, “ও কে। ও কে গাে।”

 আমার কেমন দুর্‌বুদ্ধি হইল আমি প্রথমেই বলিয়া ফেলিলাম, “আমি চিনি না।” বলিবামাত্রই কে যেন আমাকে কশাঘাত করিল। পরের মুহূর্তেই বলিলাম, “ওঃ, আমাদের ডাক্তারবাবুর কন্যা।”

 স্ত্রী একবার আমার মুখের দিকে চাহিলেন; আমি তাঁহার মুখের দিকে চাহিতে পারিলাম না। পরক্ষণেই তিনি ক্ষীণস্বরে অভ্যাগতকে বলিলেন, “আপনি আসুন।” আমাকে বলিলেন, “আলােটা ধরাে।”

মনােরমা ঘরে আসিয়া বসিলেন। তাঁহার সহিত রােগিণীর অল্পস্বল্প আলাপ চলিতে লাগিল। এমন সময় ডাক্তারবাবু আসিয়া উপস্থিত হইলেন।

 তিনি তাঁহার ডাক্তারখানা হইতে দুই শিশি ওষুধ সঙ্গে আনিয়াছিলেন। সেই দুটি শিশি বাহির করিয়া আমার স্ত্রীকে বলিলেন, “এই নীল শিশিটা মালিস করিবার, আর এইটি খাইবার। দেখিবেন, দুইটাতে মিলাইবেন না, এ ওষুধটা ভারি বিষ।”

 আমাকেও একবার সতর্ক করিয়া দিয়া ঔষধ দুটি শয্যাপার্শ্ববতী টেবিলে রাখিয়া দিলেন। বিদায় লইবার সময় ডাক্তার তাঁহার কন্যাকে ডাকিলেন।

 মনােরমা কহিলেন, “বাবা, আমি থাকি না কেন। সঙ্গে স্ত্রীলােক কেহ নাই, ইঁহাকে সেবা করিবে কে।”

 আমার স্ত্রী ব্যস্ত হইয়া উঠিলেন; বলিলেন, “না, না, আপনি কষ্ট করিবেন না। পুরানাে ঝি আছে, সে আমাকে মায়ের মতাে যত্ন করে।”

 ডাক্তার হাসিয়া বলিলেন, “উনি মা-লক্ষী, চিরকাল পরের সেবা করিয়া আসিয়াছেন, অন্যের সেবা সহিতে পারেন না।”

 কন্যাকে লইয়া ডাক্তার গমনের উদ্‌যোগ করিতেছেন এমন সময় আমার স্ত্রী বলিলেন, “ডাক্তারবাবু, ইনি এই বদ্ধ ঘরে অনেক ক্ষণ বসিয়া আছেন, ইঁহাকে একবার বাহিরে বেড়াইয়া লইয়া আসিতে পারেন?”

 ডাক্তারবাব, আমাকে কহিলেন, “আসুন-না, আপনাকে নদীর ধার হইয়া একবার বেড়াইয়া আনি।”

 আমি ঈষৎ আপত্তি দেখাইয়া অনতিবিলম্বে সম্মত হইলাম। ডাক্তারবাব, যাইবার সময় দুই শিশি ঔষধ সম্বন্ধে আবার আমার স্ত্রীকে সতর্ক করিয়া দিলেন।

 সেদিন ডাক্তারের বাড়িতেই আহার করিলাম। ফিরিয়া আসিতে রাত হইল। আসিয়া দেখি আমার শ্রী ছট্‌ফট্ করিতেছেন। অনুতাপে বিদ্ধ হইয়া জিজ্ঞাসা করিলাম,