পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বিতীয় সম্ভার).djvu/২১: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিসংকলন থেকে
TarunnoBot (আলোচনা | অবদান)
Text from Google OCR
(কোনও পার্থক্য নেই)

২১:৫৭, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্ত্রীকান্ত পিয়ারী অপলকচক্ষে কিছুক্ষণ আমার মুখের প্রতি চাহিয়া রহিল। তারপর তাহার দুই চক্ষু অশ্রজলে পরিপূর্ণ হইয়া, বড় বড় ফোটা গাল বাহিয়া টপটপ করিয়া পড়িতে লাগিল। চোখ মুছিয়া গাঢ়স্বরে কহিল, এই হতভাগিনীর জন্যে তুমি সমস্ত জীবন সন্ন্যাসী হয়ে থাকবে ? বলিলাম, তা আমি থাকব । তোমার কাছে যে জিনিস আমি পেয়েছি, তার বদলে সন্ন্যাসী হয়ে থাকাটা আমার লোকসান নয় ; যেখানেই থাকি না কেন, আমার এই কথাটা তুমি কোনদিন অবিশ্বাস করো না। পলকের জন্য দুইজনের চোখাচোথি হইল, এবং পরক্ষণেই সে বালিশের উপর মুখ গুজিয়া উপুড় হইয়া পড়িল। শুধু উচ্ছ্বসিত ক্ৰন্দনের আবেগে তাহার সমস্ত শরীরটা কঁপিয়ার্কাপিয়া, ফুলিয়া ফুলিয়া উঠিতে লাগিল। মুখ তুলিয়া চাহিলাম। সমস্ত বাড়িটা গভীর স্বযুপ্তিতে আচ্ছন্ন—কোথাও কেহ জাগিয়া নাই। একবার শুধু মনে হইল, জানালার বাহিরে অন্ধকার রাত্রি তাহার কত উৎসবের প্রিয় সহচরী পিয়ারী বাইজীর বুকফাটা অভিনয় আজ যেন নিঃশব্দে চোখ মেলিয়া অত্যন্ত পরিতৃপ্তির সহিত দেখিতেছে। ૨ এক-একটা কথা দেখিয়াছি, সারাজীবনে ভুলিতে পারা যায় না। যখনই মনে পড়ে—তাহার শব্দগুলা পৰ্য্যন্ত যেন কানের মধ্যে বাজিয়া উঠে। পিয়ারীর শেষ কথাগুলাও তেমনি । আজও আমি তাহার রেশ শুনিতে পাই। সে যে স্বভাবতঃই কত বড় সংযমী, সে পরিচয় ছেলেবেলাতেই সে বহুবার দিয়াছে। তাহার উপর এতদিনের এই এত বড় সাংসারিক শিক্ষা ! গতবারে বিদায়ের ক্ষণটিতে কোনমতে পলাইয়া সে আত্মরক্ষা করিয়াছিল ; কিন্তু এবার কিছুতেই আর আপনাকে সামলাইতে পারিল না; চাকর-বাকরদের সামনেই কাদিয়া ফেলিল। রুদ্ধকণ্ঠে বলিয়া ফেলিল, দেখ, আমি অবোধ নয়, আমার পাপের গুরুদণ্ড আমাকে ভুগতে হবে জানি ; কিন্তু তবু বলচি আমাদের সমাজ বড় নিষ্ঠুর, বড় নির্দয় ! একেও এর শাস্তি এক দিন পেতে হবে । ভগবান এর সাজা দেবেনই দেবেন ! সমাজের উপর কেন যে এত বড় অভিশাপ দিল, তাহা সেই জানে, আর তাহার অন্তর্ধ্যামী জানেন। আমিও যে না জানি, তা নয়, কিন্তু নিৰ্ব্বাক হইয়া রহিলাম। বুড়া দরোয়ান গাড়ির কপাট খুলিয়া দিয়া আমার মুখপানে চাহিল } (t