পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (সপ্তম সম্ভার).djvu/৫৩: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিসংকলন থেকে
TarunnoBot (আলোচনা | অবদান)
Text from Google OCR
(কোনও পার্থক্য নেই)

১২:৪৬, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গৃহদাহ কেদারবাৰু নিজের অভদ্র-আচরণে মনে মনে লজ্জিত হইতেছিলেন—সুরেশের কথায় রাগিয়া উঠিলেন। কিন্তু রাগটা পড়িল মহিমের উপর। সে নিরতিশয় ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ হইয়া উঠি উঠি করিতেছিল। কেদারবাবু বলিলেন, তোমার কি কোন আবশ্বক আছে মহিম ? মহিম আত্মসংবরণ করিয়া উঠিয়া দাড়াইয়া বলিল, না। কেদারবাবু চলিতে উদ্যত হইয়া বললেন, তা হলে আজ আমরা একটু ব্যস্ত আছি, আর একদিন এলে— মহিম কহিল, যে আজ্ঞে, আসব। কিন্তু আসার কি বিশেষ প্রয়োজন আছে ? কেদারবাবু স্বরেশকে শুনাইয়া কহিলেন, আমার নিজের কোন প্রয়োজন নাই । তবে যদি দরকার মনে কর, এসো-দু-একটা বিষয় আলোচনা করা যাবে। তিনজনেই বহির হইয়া পড়লেন ! নীচে আসিয়া মহিমকে লক্ষ্যমাত্র না করিয়া স্কুরেশ কেদখুবাবুকে লহয় তাহর গড়তে উঠিয়া বসিল । কোচম্যান গাড়ি ছড়িয় দিল । মহিম খনিকটা পথ আসিয়াই পিছনে তাহার নাম শুনিতে পাইয়া ফিরিয়া দাড়াইয়া দেখিল, কেদারবাবুর বেয়ার । সে বেচার ইপিাইতে হাপাইতে কাছে আসিয়া একটুকরা কাগজ হাতে দল। তাহাতে পেন্সিল দিয়া শুধু লেখা ছিল, অচল । বেয়ার কঠিল, একবার ফিরে যেতে বললেন । ফিরিয়া আসিয়া সিড়িতে পা দিয়াই দেখিতে পাইল—অচলা স্বমুখে দাড়াইয়া আছে । তাহার আরক্ত চক্ষুর পাতা আর্দ্র রহিয়াছে। কাছে আসিতেই বলিল, তুমি কি তোমার কসাই বন্ধুর হাতে আমাকে জবাই করবার জন্যে রেখে গেলে ? যে তোমার ওপর এত বড় কতন্ত্রত করতে পারলে, তার হাতে আমাকে ফেলে যাচ্ছে কি বলে ? বলিয়াই ঝর ঝর করিয়া কাদিয়া ফেলিল । মহিম স্তব্ধ হইয়া দাড়াইয়া রহিল। মিনিট-দুই পরে আঁচলে চোখ মুছিয়া কহিল, আমার লজ্জ করবার আর সময় নেই । দেখি তোমার ডান হাতটি । বলিয়া নিজেই মহিমের দক্ষিণ হস্ত টানিয়া লইয়া নিজের আঙ্গুল হইতে সোনার আংটিটি খুলিয়া তাহার আঙ্গুলে পরাইয়া দিতে দিতে কহিল, আমি আর ভাবতে পারিনে । এইবার যা করবার তুমি ক’রে । বলিয়া গড় হইয়া পায়ের কাছে একটা নমস্কার করিয়া ধীরে ধীরে ঘরে চলিয়া গেল। মহিম ভাল-মন্দ কোন কথা কহিল না। অনেকক্ষণ পৰ্য্যন্ত রেলিঙটার উপর ভর দিয়া চুপ করিয়া দাড়াইয়া থাকিয়া, পুনরায় ধীরে ধীরে নামিয়া বাটার বাহির হইয়া গেল। 86.