টুনটুনির বই/বাঘ মামা আর শিয়াল ভাগ্নে: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিসংকলন থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
প্রতিস্থাপন
সম্পাদনা সারাংশ নেই
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
|শিরোনাম=[[../]]
|শিরোনাম=[[../]]
|অনুচ্ছেদ =বাঘ মামা আর শিয়াল ভাগ্নে
|অনুচ্ছেদ =বাঘ মামা আর শিয়াল ভাগ্নে
|পূর্ববর্তী =[[টুনটুনির বই/নরহরি দাস|নরহরি দাস]]
|পূর্ববর্তী =[[../নরহরি দাস/]]
|পরবর্তী = [[টুনটুনির বই/বোকা জোলা আর শিয়ালের কথা|বোকা জোলা আর শিয়ালের কথা]]
|পরবর্তী = [[../বোকা জোলা আর শিয়ালের কথা/]]
|টীকা =
|টীকা =
|লেখক =উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
|লেখক =উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
|বছর =
|প্রবেশদ্বার =
}}
}}
<pages index="টুনটুনির বই.djvu" from=28 to=30 />

<div style="padding-left:2em;">
<div class="indented-page">
<pages index="উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu" from="19" fromsection=B19 to="21" tosection=A21 />
</div>
</div>

১২:১৩, ২২ মে ২০১৭ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ


বাঘ মামা আর শিয়াল ভাগ্নে

শিয়াল ভাবে, ‘বাঘমামা, দাঁড়াও তোমাকে দেখাচ্ছি!’ এখন সে আর নরহরি দাসের ভয়ে তার পুরনো গর্তে যায় না, সে একটা নতুন গর্ত খুঁজে বার করেছে।

 সেই গর্তের কাছে একটা কুয়ো ছিল।

 একদিন শিয়াল নদীর ধারে একটা মাদুর দেখতে পেয়ে, সেটাকে টেনে
‘মামা, খুব কয়ে জল খাও। [ পৃঃ ২৫
তার বাড়িতে নিয়ে এল। এনে সেই কুয়োর মুখের উপর তাকে বেশ করে বিছিয়ে বাঘকে গিয়ে বললে, ‘মামা, আমার নতুন বাড়ি দেখতে গেলে না?’ শুনে বাঘ তখনি তার নতুন বাড়ি দেখতে এল। শিয়াল তাকে সেই কুয়োর মুখে বিছানা মাদুরটা দেখিয়ে বললে, ‘মামা, একটু বস, জলখাবার খাবে।’  জলখাবারের কথা শুনে বাঘ ভারী খুশী হয়ে, লাফিয়ে সেই মাদুরের উপর বসতে গেল, আর অমনি সে কুয়োর ভিতরে পড়ে গেল। তখন শিয়াল বললে, ‘মামা, খুব করে জল খাও, একটুও রেখ না যেন!’  সেই কুয়োর ভিতরে কিন্তু বেশী জল ছিল না, তাই বাঘ তাতে ডুবে মারা যায়নি। সে আগে খুবই ভয় পেয়েছিল, কিন্তু শেষে অনেক কষ্টে উঠে এল। উঠেই সে বললে, ‘কোথায় গেলি রে শিয়ালের বাচ্চা? দাঁড়া তোকে দেখাচ্ছি।’
কুমির কামড়ে ধরে জলে গিয়ে নামল! পৃঃ ২৬
কিন্তু শিয়াল তার আগেই পালিয়ে গিয়েছিল, তাকে কিছুতেই খুজে পাওয়া গেল না।

 তারপর থেকে বাঘের ভয়ে শিয়াল আর তার বাড়িতেও আসতে পায় না, খাবার খুঁজতেও যেতে পারে না। দূর থেকে দেখতে পেলেই বাঘ তাকে মারতে আসে। বেচারী না-খেয়ে না-খেয়ে শেষে আধমরা হয়ে গেল।

 তখন সে ভাবলে, ‘এমন হলে তো মরেই যাব। তার চেয়ে বাঘ মামার কাছে যাই না কেন? দেখি যদি তাকে খুশি করতে পারি।’

 এই মনে করে সে বাঘের সঙ্গে দেখা করতে গেল। বাঘের বাড়ি থেকে অনেক দূরে থাকতেই সে খালি নমস্কার করছে আর বলছে, ‘মামা, মামা!’

 শুনে বাঘ আশ্চর্য হয়ে বললে, ‘তাই তো, শিয়াল যে!’

 শিয়াল অমনি ছুটে এসে, দুহাতে তার পায়ের ধুলো নিয়ে বললে, ‘মামা, আমাকে খুঁজতে গিয়ে তোমার বড় কষ্ট হচ্ছিল, দেখে আমার কান্না পাচ্ছিল। মামা, আমি তোমাকে বড্ড ভালোবাসি, তাই এসেছি। আর কষ্ট করে খুঁজতে হবে না, ঘরে বসেই আমাকে মার।’

 শিয়ালের কথায় বাঘ তো ভারী থতমত খেয়ে গেল। সে তাকে মারলে না, খালি ধমকিয়ে বললে, ‘হতভাগা পাজি, আমাকে কুয়োয় ফেলে দিয়েছিলি কেন?’

 শিয়াল জিভ কেটে কানে হাত দিয়ে বলল, ‘রাম-রাম! তোমাকে আমি কুয়োয় ফেলতে পারি? সেখানকার মাটি বড্ড নরম ছিল, তার উপর তুমি লাফিয়ে পড়েছিলে, তাই গর্ত হয়ে গিয়েছিল। তোমার মতো বীর কি মামা আর কোথাও আছে?’

 তা শুনে বোকা বাঘ হেসে বললে, ‘হ্যাঁ-হ্যাঁ ভাগ্নে, সে কথা ঠিক। আমি তখন বুঝতে পারিনি।’

 এমনি করে তাদের আবার ভাব হয়ে গেল।

 তারপর একদিন শিয়াল নদীর ধারে গিয়ে দেখল যে, বিশ হাত লম্বা একটা কুমির ডাঙায় উঠে রোদ পোয়াচ্ছে। তখন সে তাড়াতাড়ি ছুটে গিয়ে বাঘকে বললে, ‘মামা, মামা, একটা নৌকা কিনেছি, দেখবে এসো।’

 বোকা বাঘ এসে সেই কুমিরটাকে সত্যি-সত্যি নৌকা মনে করে লাফিয়ে তার উপর উঠতে গেল, আর অমনি কুমির তাকে কামড়ে ধরে জলে গিয়ে নামল।

 তা দেখে শিয়াল নাচতে-নাচতে বাড়ি চলে গেল।