বিষয়বস্তুতে চলুন

বিশ্ব-ইতিহাস প্রসঙ্গ

উইকিসংকলন থেকে

বিশ্ব-ইতিহাস প্রসঙ্গ

জ ও হ র লা ল নে হ রু


বিশ্ব-ইতিহাস
প্রসঙ্গ


“GLIMPSES OF
WORLD HISTORY”

গ্রন্থের বঙ্গানুবাদ


জে. এফ. হোরাবিন অঙ্কিত
৫০ খানা মানচিত্র সম্বলিত


শ্রীসুরেশচন্দ্র মজুমদার
শ্রীগৌরাঙ্গ প্রেস
আনন্দ-হিন্দুস্থান প্রকাশনী
কলিকাতা—৯

প্রকাশক: শ্রীসুরেশচন্দ্র মজুমদার
মুদ্রাকর: শ্রীপ্রভাতচন্দ্র রায়
শ্রীগৌরাঙ্গ প্রেস
৫ চিন্তামণি দাস লেন
কলিকাতা—৯


প্রথম সংস্করণ
সেপ্টেম্বর, ১৯৫১
ভাদ্র, ১৩৫৮


প্রচ্ছদপট: শ্রীজিতেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত
ব্লক: স্ট্যাণ্ডার্ড ফটো এন্‌গ্রেভিং কোং
১, রমানাথ মজুমদার স্ট্রীট
কলিকাতা


মূল্য: বারো টাকা আট আনা

প্রকাশকের বিজ্ঞপ্তি

শ্রীজওহরলাল নেহরু রচিত GLIMPSES OF WORLD HISTORY বিশ্ব-বিশ্রুত গ্রন্থ,—আমাদের পক্ষে নূতন করিয়া উহার পরিচয় দিবার চেষ্টা নিষ্প্রয়োজন।

 এই অনুবাদে মূলগ্রন্থের অধুনাতম সংস্করণের সম্পূর্ণ পাঠ সম্বলিত হইয়াছে। ইংরেজীগ্রন্থে প্রকাশিত মিঃ জে. এফ. হোরাবিন অঙ্কিত অসাধারণ নৈপুণ্য ও গভীর তাৎপর্যপূর্ণ মানচিত্রগুলিও বাংলা পরিচয়লিপিসহ এই অনবাদগ্রন্থে মুদ্রিত হইল। এই বিরাট গ্রন্থের অনুবাদ ও মুদ্রণ ব্যাপারে আমাদিগকে বহু বাধাবিঘ্নের সম্মুখীন হইতে হইয়াছে। তজ্জন্য কিছু, ত্রুটিবিচ্যুতি লক্ষিত হইতে পারে। আশা করি পাঠকবর্গ এইসব অনিচ্ছাকৃত ত্রুটিবিচ্যুতি মার্জনা করিবেন।

 পরিশেষে, এই গ্রন্থ অনুবাদ ও প্রকাশনের ব্যাপারে বহু কৃতী বন্ধুর নিকট বহু প্রকার সাহায্য পাইয়াছি। তাঁহাদের প্রত্যেককেই আমাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাইতেছি।

 দেশের জনসাধারণ যদি বইখানি পড়িয়া আনন্দ পান এবং বিশ্ব-ইতিহাস আরও বিস্তৃতভাবে আলোচনার অনপ্রেরণা লাভ করেন তবেই আমাদের শ্রম সার্থক বোধ করিব।

জন্মাষ্টমী, ১৩৫৮
শ্রীসুরেশচন্দ্র মজুমদার

প রি চি তি

১৯৩০ সনের অক্টোবর হইতে ১৯৩৩ সনের আগস্ট, এই তিন বৎসরের মধ্যে ভারতের বিভিন্ন কারাগারে GLIMPSES OF WORLD HISTORY (বিশ্ব-ইতিহাস প্রসঙ্গ) লিখিত হইয়াছিল। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ এবং ভারতে বৃটিশ-শাসনের প্রতিরোধ করিবার অপরাধে গ্রন্থকার তখন কারাজীবন যাপন করিতেছিলেন।

 পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু তাঁহার এই অবশ্য বিশ্রামের—তাঁহার নিজের ভাষায়, ‘অবকাশ ও নির্লিপ্তির’,—সুযোগ গ্রহণ করেন এবং বিশ্ব-ইতিহাস সম্পর্কে লিখিতে আরম্ভ করেন। তাঁহার বালিকা কন্যার উদ্দেশ্যে লিখিত পত্রাকারে তিনি ইহা রচনা করিয়াছিলেন, কারণ প্রায়ই কারাগারে রুদ্ধ থাকার ফলে এই কন্যার শিক্ষার তত্ত্বাবধান করার কোন সুযোগ তাঁহার ছিল না।

 ১৯৩৪ সনের ১২ই ফেব্রুয়ারী তারিখে পুনরায় ধৃত হইয়া ‘রাজদ্রোহে’র’ অপরাধে দুই বৎসর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবার পূর্বে পণ্ডিত নেহরু যখন অত্যল্পকালের জন্য অবকাশ পাইয়াছিলেন, তখন তিনি এই পত্রগুলি একত্রিত করেন। অতঃপর ১৯৩৪ সনে তাঁহার ভগ্নী মাননীয়া শ্রীমতী বিজয়লক্ষী পণ্ডিত * * * এই পত্রগুলিকে GLIMPSES OF WORLD HISTORY (বিশ্ব-ইতিহাস প্রসঙ্গ) নামে পুস্তকাকারে প্রকাশ করিবার ব্যবস্থা করেন।

 নামকরণ যথোপযুক্তই হইয়াছে। পুস্তকের বিষয়বস্তুর পরিচিতির পক্ষে এই নামটির ব্যঞ্জনা যথেষ্ট। * * *

 ১৯৩৬ সনে মুক্তিলাভের পর পুনরায় পণ্ডিত নেহরু রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করিতে থাকেন। ইহার পর কর্মব্যস্ততা, দায়িত্ব এবং দুর্ভাগ্যবশত, পারিবারিক বিয়োগ-বেদনায় তাঁহার আর অবকাশ থাকে না। ভারতেও ঘটনাবলী তীব্রতা ও ত্বরার সহিত অগ্রসর হইতে থাকে। ইউরোপ তথা পৃথিবীতে বিরাট পরিবর্তন ও যুগান্তকারী ঘটনাসমূহ পরিলক্ষিত হয়। পণ্ডিতজী ভাবী সভ্যতার পক্ষে অর্থময় এই সকল ঘটনার দর্শকমাত্র ছিলেন না, সেগুলিতে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণও করিয়াছিলেন। কেন না, পণ্ডিত নেহরু সেই বিরল ব্যক্তিত্বসম্পন্ন জননায়কদের অন্যতম যাঁহাদের মধ্যে উদ্দাম কর্মতৎপরতার সহিত দৃষ্টির প্রসারতা ও নিস্পৃহতার সমন্বয় ঘটিয়াছে। ইউরোপ ভ্রমণকালে পণ্ডিতজী পাশ্চাত্ত্য জগতের কতিপয় সাম্প্রতিক ঘটনা চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করিয়াছিলেন। তিনি চীন ও স্পেনের সংগ্রামের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসিয়াছেন।

 বর্তমান সংস্করণটিকে অনেকদিক হইতে একখানি নূতন বই বলা চলে, স্বয়ং গ্রন্থকার কর্তৃক ইহা সংশোধিত, বহুল পরিমাণে পুনর্লিখিত এবং ১৩৩৮ সনের শেষ পর্যন্ত ঘটনা সংবলিত করা হইয়াছে। এই কাজগুলি তিনি কারাগারের বাহিরে করিলেও ইহাতে মূল রচনার নৈর্ব্যক্তিক নিরপেক্ষতা বিন্দুমাত্রও ব্যাহত হয় নাই। বরং ইহা অধিকতর অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানের অবদানে সমৃদ্ধ হইয়াছে।

 GLIMPSES OF WORLD HISTORY (বিশ্ব-ইতিহাস প্রসঙ্গ) ঘটনার বিবরণী মাত্র নহে। বিবরণের দিক হইতে উহা যেমন মূল্যবান, তেমনি লেখকের ব্যক্তিত্বের ছাপও উহাতে বর্তমান। তাঁহার অসাধারণ মনীষা ও অনভূতিপ্রবণ মন এই ইতিহাস গ্রন্থকে অনন্যসাধারণ করিয়া তুলিয়াছে। বর্ধিষ্ণু শিশুর উদ্দেশ্যে লিখিত পত্রের আকারও ইহাতে ক্ষুণ্ণ হয় নাই। ইহার আবেদন সরল এবং ঋজু; কিন্তু বিষয়বস্তুর আলোচনা কোথাও অগভীর নহে। ঘটনার বিবৃতি বা তাৎপর্য বিশ্লেষণ কোথাও অতিমাত্রায় সরলীকৃত হয় নাই। * * *

 লণ্ডন
ভি. কে. কৃষ্ণ মেনন
মে, ১৯৩৯

ইংরেজী চতুর্থ সংস্করণের বিজ্ঞপ্তি

“বিশ্ব-ইতিহাস প্রসঙ্গে”র শেষ সংস্করণটি প্রকাশিত হইবার পর যে তিন বৎসর অতীত হইয়াছে, তাহাতে ভারত তথা সমগ্র পৃথিবীতে বহু ঐতিহাসিক পরিবর্তন সংঘটিত হইয়াছে। ঐ সকল পরিবর্তনের অর্থ এবং আঘাত যেমন ব্যাপক তেমনি বৈপ্লবিক। যাঁহারা ইতিহাস হইতে প্রেরণা ও পথের সংকেত পাইতে চাহেন, যাঁহারা ইতিহাসের সতর্কবাণী এবং তাহার পৌর্বাপৌর্য চেতনার প্রয়োজন উপলব্ধি করেন, তাঁহাদের নিকট এই গ্রন্থ এখন অর্থে ও ইঙ্গিতে আরও সমৃদ্ধ ও তাৎপর্যপূর্ণ হইয়া উঠিয়াছে।

 উপরন্তু এই ঘটনাবলী গ্রন্থকারকে একজন শ্রেষ্ঠ ইতিহাসকাররূপে অভিব্যক্ত করিয়াছে। তিনি নির্ভুল এবং দঃসাহসিক অন্তর্দৃষ্টি দিয়া আমাদের জন্য ইতিহাসের ঘটনা প্রবাহের তাৎপর্যালোচনা করিয়াছেন। সংগ্রামের পথে ভারত স্বাধীনতা লাভ করিয়াছে এবং বর্তমানে সে দৃঢ়তার সহিত শান্ত সমাহিতভাবে বিরাট সমস্যাসমূহের সম্মুখীন হইতেছে। ফলে, যে-সকল ঘটনাবলীর সমাবেশে চলতি ইতিহাস রচিত হয় তাহাতে নবভারতের প্রধান মন্ত্রী ও বহবাঞ্ছিত নেতা পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু এতটা বিজড়িত আছেন যে এই গ্রন্থখানিকে বর্তমান কালপর্যন্ত টানিয়া আনিবার মতো অবসর তাঁহার নাই।

 আমরা অবশ্যই আশা করিয়া থাকিব যে, অনতিদূর ভবিষ্যতে তিনি তাঁহার ব্যাখ্যানপ্রতিভার দ্বারা আমাদিগকে ও ভবিষ্যদ্বংশীয়গণকে উপকৃত করিবার সুযোগ পাইবেন। যাহাই হউক, বর্তমানে যেমনটি আছে তাহাতেও “বিশ্ব-ইতিহাস প্রসঙ্গ”কে সমকালের বলা চলে, কারণ, ইহা সর্বকালের।

 লণ্ডন
ভি. কে. কৃষ্ণ মেনন
মে, ১৯৪৮

প্র স্তা ব না

এই পত্রগুলি কবে ও কোথায় প্রকাশিত হইবে, বা আদৌ প্রকাশিত হইবে কিনা, জানি না। নানা বিচিত্র ঘটনার ভরে ভারতবর্ষ আজ টলমল করিতেছে; ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে কোন কথা বলাই এখন কঠিন ব্যাপার। তবুও এই কয়টি কথা লিখিয়া রাখিতেছি—এখনও আমার লিখিবার মত অবসর আছে, হয়তো পরে আর থাকিবে না।

 এই পত্রাবলী ইতিহাস লইয়া রচিত, ইহার জন্য একটু কৈফিয়ত ও ব্যাখ্যা প্রয়োজন। পত্রগুলি পড়িতে পড়িতে হয়তো পাঠক নিজেই আমার সে কৈফিয়ত ও ব্যাখ্যাটি বুঝিয়া লইবেন। বিশেষ করিয়া ইহার শেষ পত্রটি পড়িয়া দেখিতে বলিব; হয়তো এই বইটি সেই শেষ অধ্যায় হইতে আরম্ভ করাই সুযুক্তি, কারণ জগৎটাই এখন উল্টোপাল্টা হইয়া আছে।

 পত্রগুলি ক্রমশ বাড়িয়া উঠিয়াছে। এইগুলি লিখিবার পূর্বে আমি কোন সুসংবদ্ধ পরিকল্পনা করিয়া লই নাই; এইগুলি এমন বৃহৎ আকার ধারণ করিবে সে-ধারণাও আমার ছিল না। প্রায় ছয় বৎসর পূর্বের কথা, আমার কন্যার বয়স তখন দশ বৎসর। সেই সময়ে আমি তাহাকে কতকগুলি পত্র লিখিয়াছিলাম, তাহাতে বিশ্বজগতের প্রথম যুগ সম্বন্ধে কিছু সংক্ষিপ্ত ও সরল বিবরণ ছিল। প্রথম-কালের সেই পত্রগুলি পরে পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয়, পাঠকের নিকটেও সেটি আদৃত হইয়াছিল। সেইরূপে পত্র আরও কিছুদূর লিখিয়া চলিব, এই কল্পনা আমার মনে জাগিয়াছিল। কিন্তু রাজনৈতিক কার্যকলাপ লইয়া আমার জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে আমি এত ব্যস্ত যে, কল্পনাকে কার্যে রূপ দিবার অবসর পাই নাই। কারাবাসে সেই অবসর পাইলাম, তাহার সদ্ব্যবহারও করিলাম।

 কারা-জীবনের কতকগুলি সুবিধা আছে: সেখানে কাজের অবসর পাওয়া যায়, মনকে কিছুটা সমাহিত করিয়া আনা যায়। কিন্তু ইহার অসুবিধাগুলিও অতি প্রখর। পুঁথিপত্রের বালাই বন্দীর থাকে না; সে অবস্থায় বই লিখিতে, বিশেষতঃ ইতিহাসের বই লিখিতে বসা দুঃসাহসের কাজ। কিছু কিছু বই অবশ্য আমার হাতে পৌঁছিত, কিন্তু সেগুলিকে হাতের কাছে আটকাইয়া রাখা সম্ভব ছিল না—বই আসিত, আবার চলিয়া যাইত।

 কিন্তু বারো বৎসর পূর্বে আমার দেশের বহু পুরুষ ও নারীর সহিত একত্রে আমি কারাতীর্থের পথে যাত্রা আরম্ভ করিয়াছিলাম; সেই সময়ে একটি বস্তু অভ্যাস করিয়াছিলাম—যে-বই পড়িলাম তাহার সংক্ষিপ্ত টীকা লিখিয়া রাখা। আমার এই টীকার খাতা ক্রমশ সঞ্চিত হইয়াছে; যখন লিখিতে বসিলাম, এই খাতাগুলি আমার সহায় হইল। অবশ্য ইহা ছাড়া আরও বহু বই হইতেও আমি প্রচুর সাহায্য পাইয়াছি, এইচ. জি. ওয়েল্‌স্-এর OUTLINES OF HISTORY ইহাদের অন্যতম। তবুও, দেখিয়া লইবার মত ভাল পুঁথিপত্রের অভাব অত্যন্ত তীব্রভাবে অনুভব করিয়াছি; এই অভাবের জন্যই বহু স্থলে বহু আলোচনাকে অস্পষ্ট রাখিতে হইয়াছে, বহু কালের কাহিনীকে বাদ দিয়া যাইতে বাধ্য হইয়াছি।

 এই চিঠিগুলি একটি বিশেষ ব্যক্তিকে লেখা, ইহার মধ্যে বহুস্থানে এমন একান্ত কথা আছে যাহা শুধু আমার কন্যাকেই উদ্দেশ করিয়া বলা হইয়াছে। সেগুলিকে লইয়া এখন কী করি সেও এক সমস্যা; পত্র হইতে সেগুলিকে বাদ দিতে গেলে এখন আবার অনেক কাটাকুটি করিতে হয়। সুতরাং আমি সেগুলি কিছুই করিলাম না, যেমন ছিল তেমনই রাখিয়া দিলাম।

 দৈহিক নিষ্ক্রিয়তার ফলে অন্তর্দৃষ্টির অভ্যাস বাড়ে, মানষের মন ও চেতনায় ক্রমাগত পরিবর্তন ঘটিতে থাকে। এক এক সময়ে আমার মনে এক এক রূপ ভাব দেখা দিয়াছে, সেই পরিবর্তনের ছাপ এই পত্রগুলির মধ্যেও অত্যন্ত স্পষ্ট হইয়া উঠিয়াছে, ইতিহাসের বর্ণনা যেরূপে নির্লিপ্ত ও নৈর্ব্যক্তিক হওয়া উচিত, এই পত্রের বর্ণনা সেরূপ হয় নাই। আমি ইতিহাসকার নহি, ইতিহাস লিখি নাই। এই পত্রাবলীর মধ্যে বহু স্থলে অপরিণত শিশুর নিকটে বলা সহজ আলোচনা এবং পরিণতবুদ্ধি ব্যক্তির যোগ্য গুরু-গম্ভীর আলোচনার অসম মিশ্রণ ঘটিয়াছে, বহু স্থলে একই কথার পুনরাবৃত্তি হইয়াছে। বস্তুত, কত রকম ত্রুটি যে এই পত্রগুলির মধ্যে আছে তাহার সীমা নাই। এগুলি আর কিছুই নয়, কতকগুলি ভাসাভাসা বর্ণনা আর কাহিনী, গল্প বলার সূক্ষ্ম সূত্র দিয়া কোনক্রমে একত্র গাঁথা, এই মাত্র। কাহিনীর মধ্যে যেসকল তথ্য ও জল্পনার উল্লেখ করিয়াছি, তাহাও আমি সংগ্রহ করিয়াছি বিশৃঙ্খল ভাবে—যখন যে-বইটি হাতের কাছে পাইয়াছি তাহা হইতে। অতএব এই বিবরণের মধ্যে ভুলত্রুটিও অনেক থাকা সম্ভব। আমার ইচ্ছা ছিল—কোন দক্ষ ইতিহাসবেত্তাকে দিয়া পত্রগুলি আগাগোড়া সংশোধন করাইয়া লইব। কিন্তু কারাগারের বাহিরে যে অল্প কয়টা দিন কাটাইয়া যাইতেছি, তাহার মধ্যে সেরূপ কোন ব্যবস্থা করিবার অবসর আমি পাইলাম না।

 এই পত্রগুলির মধ্যে আমি বহু স্থলে আমার মতামত অত্যন্ত তীব্র ভাষায় ব্যক্ত কারিয়াছি; সে মতামত আমার এখনও বদলায় নাই। কিন্তু পত্রগুলি যেসময়ে লিখিতেছিলাম সেই সময়ের মধ্যেই জগতের ইতিহাস সম্বন্ধে আমার ধারণা ক্রমশ বদলাইয়া যাইতেছিল। পত্রগুলি তখন লিখিয়াছি; এখন যদি লিখিতে হইত তবে ইহার অনেক কথা আমি অন্যভাবে ও অন্যভঙ্গীতে লিখিতাম। কিন্তু যেকথা একবার বলিয়াছি তাহা মুছিয়া ফেলিয়া আবার নূতন করিয়া বলিব, ইহাও আমার পক্ষে সম্ভব নয়।

১লা জানুয়ারী,
জওহরলাল নেহরু
 ১৯৩৪

সূ চী প ত্র

সেণ্ট্রাল জেল: নাইনি
পৃষ্ঠাঙ্ক
 
১১
১৪
১৫
১৮
১০ ২০
১১ ২৩
১২ ২৬
১৩ ২৮
১৪ ৩১
১৫ ৩৫
১৬ ৩৯
১৭ ৪২
১৮ ৪৬
এস. এস. ক্রাক্রোভিয়া-জাহাজ: আরব সাগর
১৯
    
৪৯
২০
    
৫০
ডিস্ট্রিক্ট জেল: বেরিলী
২১ ৫১
২২ ৫৩
২৩
    
৫৫
২৪ ৫৭
২৫ ৬০
২৬ ৬২
২৭ ৬৫
২৮ ৬৮
২৯ ৭২
৩০ ৭৪
৩১ ৭৭
৩২ ৮০
৩৩ ৮৩
৩৪ ৮৫
৩৫ ৮৭
৩৬ ৮৯
৩৭ ৯৩
৩৮ ৯৫
৩৯ ৯৬
৪০ ৯৭
৪১ ১০০
৪২ ১০৪
৪৩ ১০৭
৪৪ ১১০
৪৫ ১১৩
৪৬ ১১৫
৪৭ ১১৮
৪৮ ১২১
৪৯ ১২৪
৫০ ১২৮
৫১ ১৩১
৫২ ১৩৪
৫৩ ১৩৯
৫৪ ১৪২
৫৫ ১৪৪
ডিস্ট্রিক্ট জেল: দেরাদুন
৫৬ ১৪৬
৫৭ ১৪৮
৫৮ ১৫৩
৫৯ ১৫৬
৬০ ১৬০
৬১ ১৬২
৬২ ১৬৬
৬৩ ১৭১
৬৪ ১৭৭
৬৫ ১৮০
৬৬ ১৮৪
৬৭
    
১৮৬
৬৮ ১৯১
৬৯
    
১৯৪
৭০ ১৯৭
৭১ ২০০
৭২ ২০২
৭৩ ২০৬
৭৪ ২১১
৭৫ ২১৫
৭৬ ২১৯
৭৭
    
২২২
৭৮ ২২৫
৭৯ ২২৮
৮০ ২৩১
৮১ ২৩৫
৮২ ২৩৮
৮৩ ২৪১
৮৪ ২৪৪
৮৫ ২৪৮
৮৬ ২৫২
৮৭ ২৫৭
৮৮
    
২৬১
৮৯
    
২৬৫
৯০ ২৭১
৯১ ২৭৫
৯২ ২৭৯
৯৩ ২৮৪
৯৪ ২৮৭
৯৫ ২৯০
৯৬ ২৯৪
৯৭ ২৯৯
৯৮ ৩০৩
৯৯ ৩০৭
১০০ ৩১২
১০১
    
৩১৬
১০২ ৩২১
১০৩ ৩২৬
১০৪
    
৩২৮
১০৫
    
৩৩৪
১০৬
    
৩৩৯
১০৭ ৩৪২
১০৮ ৩৪৬
১০৯ ৩৫২
১১০ ৩৫৯
১১১ ৩৬৪
১১২ ৩৭১
১১৩ ৩৭৮
১১৪ ৩৮৬
১১৫
    
৩৯২
১১৬ ৩৯৬
১১৭ ৪০৩
১১৮ ৪০৮
১১৯ ৪১২
১২০ ৪১৮
১২১ ৪২১
১২২ ৪২৫
১২৩ ৪২৯
১২৪ ৪৩৩
১২৫ ৪৩৯
১২৬ ৪৪৪
১২৭ ৪৫০
১২৮ ৪৫৫
১২৯ ৪৬১
১৩০ ৪৬৬
১৩১ ৪৭২
১৩২ ৪৭৮
১৩৩ ৪৮৪
১৩৪ ৪৯০
১৩৫ ৪৯৬
১৩৬ ৫০২
১৩৭ ৫০৮
১৩৮ ৫১৫
১৩৯ ৫২০
১৪০ ৫২৭
১৪১ ৫৩২
১৪২ ৫৪০
১৪৩ ৫৪৭
১৪৪ ৫৫২
১৪৫ ৫৫৭
১৪৬ ৫৬২
১৪৭ ৫৭০
১৪৮ ৫৭৬
১৪৯
    
৫৮২
১৫০ ৫৮৯
১৫১ ৫৯৬
১৫২ ৬০৪
১৫৩ ৬১৩
১৫৪ ৬১৯
১৫৫ ৬২৬
১৫৬ ৬৩৭
১৫৭ ৬৪৩
১৫৮ ৬৫০
১৫৯ ৬৫৯
১৬০ ৬৬৬
১৬১ ৬৭৪
১৬২ ৬৮২
১৬৩ ৬৯১
১৬৪ ৬৯৯
১৬৫ ৭০৫
১৬৬ ৭১২
১৬৭ ৭১৯
১৬৮ ৭২৫
১৬৯ ৭৩১
১৭০ ৭৩৮
১৭১ ৭৪৫
১৭২ ৭৫২
১৭৩ ৭৫৮
১৭৪ ৭৬৫
১৭৫ ৭৭৪
১৭৬ ৭৮৩
১৭৭ ৭৮৯
১৭৮ ৭৯৭
১৭৯ ৮০৭
১৮০ ৮১৫
১৮১ ৮২১
১৮২ ৮৩০
১৮৩ ৮৩৬
১৮৪ ৮৪১
১৮৫
    
৮৪৭
১৮৬ ৮৫৪
১৮৭ ৮৬২
১৮৮ ৮৭১
১৮৯ ৮৭৪
১৯০ ৮৭৯
১৯১ ৮৯০
১৯২ ৮৯৪
১৯৩ ৯০০
১৯৪ ৯০৫
১৯৫ ৯১১
১৯৬
    
৯১৯
 
    
৯২৬

মা ন চি ত্র

পৃষ্ঠাঙ্ক
পশ্চিম এশিয়ার সভ্যতা এবং দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপ
    
১২
চৈনিক সভ্যতার অভ্যুদয়
    
২৪
গ্রীক ও পারশিকগণ
    
৩৭
আলেকজাণ্ডারের সাম্রাজ্য
    
৪৩
অশোকের সাম্রাজ্য: ২৬৮—২২৬ খৃষ্টপূর্বাব্দ
    
৬১
রোমের সাম্রাজ্যে পরিণতি
    
৬৯
কুষাণ-আমলে ভারতবর্ষ
    
৭৫
ভারতের উপনিবেশ-স্থাপন
    
৯০
তাও সাম্রাজ্য
    
১০২
১০
আরবজাতির দিগ্বিজয়
    
১২৬
১১
নবম শতাব্দীতে ইউরোপ
    
১৩৬
১২
খৃষ্টীয় দশম শতকে এশিয়া ও ইউরোপ
    
১৫০
১৩
মায়া সভ্যতা
    
১৫৮
১৪
ত্রয়োদশ শতাব্দীতে ইউরোপ
    
১৭২
১৫
চেঙ্গিস—“বিধাতার অভিশাপ”
    
১৮৮
১৬
দেশ ও সমদ্রপথের আবিষ্কার
    
২০৮
১৭
রোমের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ
    
২৪৫
১৮
আকবরের সাম্রাজ্য
    
২৬৭
১৯
ভারতে ইঙ্গ-ফরাসি দ্বন্দ্ব
    
২৮০
২০
চীয়েন-লুঙের সাম্রাজ্য
    
২৮৯
২১
আমেরিকার বিচ্ছেদ
    
৩০৯
২২
ইউরোপে নেপোলিয়নের প্রভুত্ব
    
৩৩০
২৩
১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের সময়কার ভারতবর্ষ
    
৩৫৪
২৪
ব্রিটেন ও চীন
    
৩৮৭
২৫
জাপানের অগ্রগতি
    
৩৯৮
২৬
বৃহত্তর ভারত ও পূর্ব-ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ
    
৪১৪
২৭
অটোম্যান সাম্রাজ্য: ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীতে
    
৪২৭
২৮
রাশিয়া ও পারশ্য
    
৪৪১
২৯
১৮১৫ সালে ইতালি
    
৪৫২
৩০
জর্মনির সম্প্রসারণ
    
৪৫৮
৩১
যুক্তরাষ্ট্রের সম্প্রসারণ
    
৫১০
৩২
ব্রিটেনের মিশর অধিকার
    
৫৩৪
৩৩
ইউরোপে তুর্কিদের শেষ অধিকার
    
৫৪২
৩৪
ইউরোপ: ১৯১৪—১৫
    
৫৬৪
৩৫
ইউরোপ: ১৯১৮
    
৫৭৮
৩৬
সোভিয়েট রাশিয়া: ১৯১৮—১৯
    
৬০৬
৩৭
উত্তরাধিকার রাষ্ট্রসমূহ
    
৬২৭
৩৮
ইউরোপের নবগঠিত রাষ্ট্রসমূহ
    
৬৩০
৩৯
মুস্তাফা কামালের তুরস্ক-রক্ষা
    
৬৫২
৪০
পশ্চিম এশিয়ার পুনর্জাগরণ
    
৭০৮
৪১
আরব রাষ্ট্রসমূহ
    
৭১৪
৪২
ইব্‌নে সৌদের আরব-সাম্রাজ্য
    
৭২৬
৪৩
আফগানিস্থান
    
৭৪০
৪৪
ইউরোপে ফরাসি প্রভাব
    
৭৬৭
৪৫
ইতালি ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল
    
৭৭৭
৪৬
চীন বিপ্লব
    
৭৯২
৪৭
চীনে জাপানের যুদ্ধ
    
৮০২
৪৮
সোভিয়েট রাশিয়া কর্তৃক মধ্য-এশিয়ার উন্নয়ন
    
৮০৯
৪৯
স্পেনে গৃহযুদ্ধ
    
৮৭৬
৫০
বার্লিন-রোম মৈত্রী
    
৯৪৪