বিষয়বস্তুতে চলুন

বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ/দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

উইকিসংকলন থেকে

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

দুই বন্ধু

 ডাক্তার ফার্গুসনের একজন বন্ধু ছিল—নাম ডিক্ কেনেডি। উভয়ের মতি-গতি ও স্বভাব যদিও এক ছিল না, কিন্তু সে জন্য বন্ধুতার কোনো অভাব ছিল না। ডিক্ কেনেডি দৃঢ়-প্রতিজ্ঞ ও সরল ছিলেন। যাহা ধরিতেন তাহাই করিতেন। শিকার করিতে, মৎস্য ধরিতে এডিন্‌বরা-প্রদেশে তাঁহার সমকক্ষ আর কেহ ছিল না। তিনি লিথে বাস করিতেন। তাঁহার সন্ধান এমন অব্যর্থ ছিল যে, দূরে একখানি ছুরি রাখিয়া তিনি বন্দুকের এক গুলিতে উহাকে দুই সমান খণ্ডে ভাঙ্গিয়া দিতে পারিতেন। তাঁহার সবল দেহে সবল মাংসপেশী ছিল। তিনি দেখিতে যেমন সুপুরুষ ছিলেন, তাঁহার চলনভঙ্গীও তদ্রূপ সুন্দর ছিল। রৌদ্রদগ্ধ বদন, চঞ্চল কৃষ্ণতার নয়ন, অদম্য উৎসাহ, অসুরের ন্যায় শক্তি—এ সমস্তই কেনেডির ছিল।

 তিব্বত-ভ্রমণের পর ফার্গুসন্ দুই বৎসর পর্য্যন্ত আর কোনো স্থানে যান নাই। ইহা দেখিয়া কেনেডি মনে করিয়া ছিলেন যে, বন্ধুর পর্য্যটন-স্পৃহা বোধ হয় শেষ হ‍ইয়াছে। তিনি মনে মনে তুণ্টই হইয়াছিলেন। সাক্ষাৎ ঘটিলেই কেনেডি তাঁহার বন্ধুকে বলিতেন “আর ছুটা-ছুটি করে কাজ নাই, বিজ্ঞানের জন্য অনেক করেছ—এখন দু’দিন ঘর-সংসারে মন দাও।” ফার্গুসন্‌ সর্ব্বদাই চিন্তাযুক্ত থাকিতেন, বন্ধুর কথায় কোনো উত্তর দিতেন না।

 জানুয়ারি মাসে ফার্গুসনের সহিত সাক্ষাৎ হইবার পর কেনেডি বিশেষ ভাবে তাঁহার ভাবান্তর লক্ষ্য করিলেন এবং ফার্গুসন্কে‌ বিদায় দিয়া ভাবিতে লাগিলেন,ফার্গুসনের কি হয়েছে? তাকে অত চিন্তাযুক্ত দেখছি কেন? ব্যাপার কি? অকস্মাৎ এক দিন এক খণ্ড ‘ডেইলি টেলিগ্রাফ’ হস্তগত হওয়ায় কেনেডির আর কিছু বুঝিতে বাকী রহিল না। তিনি টেবিলে সজোরে করাঘাত করিয়া বলিয়া উঠিলেন—

 “দেখেছ, কি পাগল! কি বোকা! বেলুনে চড়ে' আফ্রিকা ভ্রমণ করতে চায়। দু’বচ্ছর ধরে’ ফার্গুসন বুঝি এই চিন্তাতেই নিযুক্ত আছে!” নিকটেই কেনেডির ভৃত্য ছিল। সে কহিল, “ও কিছু নয়—নিশ্চয়ই সব ফাঁকি!”

 “তুমি বলছো ফাঁকি! কখনো ফাঁকি নয়। আমি কি আর তাঁকে চিনি না? এমন একটা অসম্ভব প্রস্তার ঠিক তাঁরই উপযুক্ত। দেখছ, আকাশে উড়ে’ বেড়াতে চায়! উঃ কি দুরাকাঙ্ক্ষা! কি দাম্ভিকতা! ঈগল পাখীকেও পরাস্ত, করতে চায়! যাতে তার না যাওয়া হয়, তাই করতে হবে। দেখ্ছি আমি যদি বাধা না দি, তা' হ'লে ফার্গুসন্‌ কবে বা চন্দ্রলোকেই যাত্রা করবে!”

 কেনেডি আর বিলম্ব করিলেন না। বন্ধুর জন্য একান্ত চিন্তিত হইয়া সেই রজনীতেই লণ্ডন যাত্রা করিলেন। প্রভাতে ফার্গুসন্‌ যখন নিজের কক্ষে চিন্তামগ্ন ছিলেন, কেনেডি তখন অতিমাত্র ব্যস্ত হইয়া দ্বারে ঘন ঘন করাঘাত করিতে লাগিলেন।

 রুদ্ধ দ্বার মুক্ত করিয়া ফার্গুসন্‌ বিস্মিত হইয়া কহিলেন, “এ কি! ডিক্ যে?” ফার্গুসন্‌ বন্ধুকে ডিক্ বলিয়াই ডাকিতেন। মস্তকের টুপি খুলিয়া কেনেডি কহিলেন,

 “হাঁ আমিই।”

 “এখন ত শিকারের সময়। শিকার ছেড়ে লণ্ডনে যে?”

 “কি করি! একজন পাগলকে ঠাণ্ডা করতে এসেছি।”

 “পাগল? কে সে? ব্যাপার কি?”

 এক খণ্ড ‘ডেইলি টেলিগ্রাফ' পত্রিকা ফার্গুসনের সম্মুখে ধরিয়া কেনেডি কহিলেন:—

 “এতে যা লেখা আছে তা' কি সত্য?”

 “ও তুমি ওই কথা বলছ? কাগজে রোজ রোজ কত আজগুবি খবরই বেরুচ্চে! তা দাঁড়িয়ে রইলে যে! অত ব্যস্ত কি—বসো না।”

 “না আমি বোস্‌ব না। সত্যই কি তুমি বেলুনে যাবে?”

 “নিশ্চয়ই যাব। যাত্রার সব বন্দোবস্তও বেশ ধীরে ধীরে হচ্ছে। আমি—” বাধা দিয়ে কেনেডি বলিলেন “ তোমার বন্দোবস্ত চুলোয় যাক্‌।”

 “আগে তোমাকে খবরটা দিই নাই বলে' দেখছি তুমি রাগ করেছ। আমি বড় বাস্ত ছিলাম। কাজের অন্ত নাই, চিন্তার শেষ নাই। তাই বলে তোমাকে না জানিয়ে আমি কখনই যেতাম না।”

 “না জানিয়ে যেতাম না! আমি যেন সে জন্য বড় বেশী ব্যস্ত হয়ে ব’সে আছি আর কি!”

 “তা নয়—তোমাকেও যে আমি সঙ্গে নিতে চাই।”

 কেনেডি বিস্ময়ে বিদ্যুৎপৃষ্টবৎ একটা লম্ফ প্রদান করিলেন। বলিলেন, “তোমার কি ইচ্ছা যে, আমরা দু'জনেই বেডলেমের পাগলা গারদে আটক থাকি।”

 “ডিক্, তুমি যে যাবে তাতে আমার কোনো সন্দেহই নাই। আমি অনেক সঙ্গী পেয়েছিলেম, কিন্তু তোমার জন্যই তাদের নিতে স্বীকৃত হই নাই।”

 কেনেডি একেবারে হতবুদ্ধি হইয়া গেলেন। ফার্গুসন্ বলিতে লাগিলেন, “তুমি যদি দশ মিনিট স্থির হ’য়ে আমার কথা শোন, তা’হলে নিশ্চয়ই আমাকে ধন্যবাদ না দিয়ে পারবে না।”

 “তুমি ঠাট্টা করছ না ত?”

 “না—ঠাট্টা কেন।”

 “আচ্ছা মনে কর, আমি যদি না যাই।”

 “তুমি নিশ্চয়ই যাবে।”

 “যদি না যাই—”

 “তা’ হ’লে আমি একাই যাব।”

 “কথাটা ক্রমেই গুরুতর হ'য়ে উঠছে দেখছি। এ যদি তোমার ঠাট্টা না হয়, তা’ হ'লে বিশেষ বিবেচনা করে' দেখতে হচ্ছে।”

 “বেশ ত—এস না প্রাতর্ভোজন করতে করতেই সব শুনবে।”

 দুই বন্ধু তখন একখানি ক্ষুদ্র টেবিলের পার্শ্বে বসিয়া প্রাতর্ভোজন করিতে লাগিলেন। কতকগুলি স্যাণ্ডউইচ্ এবং বড় পাত্রে চা টেবিলের উপর সজ্জিত ছিল। আহার করিতে করিতে কেনেডি কহিলেন,— “ফার্গুসন্, তোমার প্রস্তাবটি পাগলেরই উপযুক্ত। এ ঘে কোন দিন সম্ভব হ’বে, তা’ত বোধ হয় না।”

 “চেষ্টা করে’ না দেখলে কেমন করে বলা যাবে যে, সম্ভব হ'বে কি না।”

 “আরে ভাই! সেই চেষ্টাই ত করা সম্ভব নয়!”

 “কেন?”

 ‘এতে যে কত বিপদ্ আছে তা' জান? তার উপর বাধাবিঘ্ন ত আছেই।”

 “বাধা!” ফার্গুসন্ গম্ভীর হইয়া কহিলেন, “বাধা! সে ত মুহূর্ত্তে দূর হ'বে। বাধা কি চিরদিন থাকে। দূর হ'বার জন্যই তার জন্ম। আর বিপদের কথা বল্‌ছ? কোথায় বিপদ নাই ভায়া? এই খানার টেবিলে বসে থাকতে থাকতেই কত বিপদ্ ঘটতে পারে। ওই টুপিটা তুলে মাথায় দিতে দিতেই কত বিপদ্ আসতে পারে। ভাই, এটা জেনো যে, যা‍’ ঘটবার তা’ ঘটেই রয়েছে—কেউ তা’ বারণ কর্‌তে পার্‌বে না। ভবিষ্যৎটা এই বর্ত্তমানেরই ছায়া—ছায়াটা একটু দূরে আছে বৈ ত নয়?”

 “ব্যস্, এই ত তোমার বক্তব্য? দেখছি তুমি এখনো বড় অদৃষ্টবাদীই আছ।”

 “চিরদিনই ত তাই। অদৃষ্টবাদের যতটুকু ভাল, আমি সর্ব্বদা তার পক্ষপাতী। বিধাতা কপালে কি লিখে রেখেছেন, সে চিন্তায় আমাদের কাজ নাই। তবে লোকে কথায় বলে, ফাঁসীকাঠে যার মৃত্যু লেখা আছে, সে কখনও জলে ডুবে মরে না। এ কথাটা খুবই সত্য।”

 এ কথার যদিও কোনো সদুত্তর ছিল না, কিন্তু কেনেডি নানাবিধ তর্ক করিতে লাগিলেন। প্রায় এক ঘণ্টা ধরিয়া তর্কবিতর্কের পর কহিলেন—“আচ্ছা যদি আফ্রিকা ভ্রমণ করাই তোমার উদ্দেশ্য হয়, তা' হ'লে এ বিদ্‌ঘুটে উপায়টা ছেড়ে দিয়ে প্রচলিত পন্থা ধর না কেন?”

 “কেন ধরি না জান? আজ পর্য্যন্ত যিনি সে পথে অগ্রসর হয়েছেন, তাঁর চেষ্টাই বিফল হয়েছে। মাঙ্গোপার্ক থেকে আরম্ভ করে' ভোগেল্ পর্য্যন্ত কেউ সফলকাম হ'তে পারেন নাই। মাঙ্গোপার্কের দশা জান? নাইগারের তীরে তিনি নৃশংসভাবে নিহত হয়েছিলেন। আর ভোগেল্? তিনি ওয়াদেই-এর অতল সলিলে চিরদিনের মত অন্তর্হিত হয়েছেন। জান ত আউদ্নির মৃত্যু ঘটেছিল মুর্মুরে, ক্ল্যাপার্টনের সমাধি হয়েছিল সাকাটুতে! শোননি কি যে, ফরাসী-পর্য্যটক মৈজান্কে আফ্রিকার অসভ্য লোকেরা টুক্‌রা টুক্‌রা করে’ কেটে ফেলেছিল—মেজর ল্যাং, রোসার প্রভৃতির শোণিতে আফ্রিকার ভূমি সিক্ত হয়েছিল। তোমাকে অমন কত জনের নাম করবো—শত শত পর্য্যটক আফ্রিকায় জীবন দান করেছেন। দারুণ ক্ষুধা, নিদারুণ শীত, ভীষণ জ্বর, হিংস্র পশু, পশু অপেক্ষাও অধিক হিংস্র অসভ্য বর্ব্বর মনুষ্য—আফ্রিকায় এদের হাত থেকে কারো নিস্তার নাই! যে পথে অগ্রসর হ'য়ে সকলেরই এক দশা ঘটেছে, সেই পথ পরিহার করে’ নূতন পথে যাওয়াই কি সঙ্গত নয়? আমরা যখন আফ্রিকার ভিতর দিয়ে কিছুতেই যেতে পারব না—তখন তার উপর দিয়েই উড়ে' যেতে হবে।”

 কেনেডি কহিলেন “ভায়া শুনলেম ত সব—কিন্তু এ যে পাখীর মত উড়ে' যাবার কথা—”

 বাধা দিয়া ফার্গুসন্ কহিলেন,

 “তাতে ভয় কি? বেলুনটা উড়তে উড়তে যাতে আকাশ থেকে না পড়ে’ যায় তার ব্যবস্থা করেছি। আর ধর নিতান্তই যদি পড়ে’ যায় তা' হ'লে অন্যান্য পর্য্যটকদের মত আমাদেরও পদব্রজেই যেতে হ’বে। কিন্তু ঠিক জেনো যে, আমার বেলুন কখনো পড়বে না।”

 “পড়তেও ত পারে।”

 “কখনো না। আফ্রিকার পূর্ব্ব থেকে পশ্চিম প্রান্ত পর্য্যন্ত না যেয়ে আর আমি বেলুনটাকে ছাড়ছি না। বেলুন থাকলে সবই সম্ভব হ'বে। আর না থাকলে, বুঝতেই পারছ—অন্যের দশাও যা’ হয়েছে আমাদেরও তাই হ’বে। বেলুনে গেলে সুবিধা কত। ঝড় বৃষ্টি পশু পক্ষী, এমন কি নরখাদক মানুষ— কিছুতেই ভয় নাই। এই ধর না—যখন খুব গরম বোধ হ'বে, বেলুন নিয়ে উপরে উঠে যাব। যদি উপরে বেশী শীত লাগে নেবে আসব। সম্মুখে যদি দুরারোহ গিরিশৃঙ্গ বাধে অনায়াসে তার চূড়ার উপর দিয়ে উড়ে চলে’ যাব। দুরতিক্রম্য নদনদীই বল, আর দারুণ ঝড়-তুফানই বল—কিছুতেই আমাদের গতি রোধ করতে পারবে না। কত সুবিধা দেখ দেখি। ভ্রমণে ক্লান্তি নাই, বিশ্রামের জন্যও চিন্তা নাই। আমরা কত কত নূতন জনপদের উপর দিয়ে অনায়াসে ভেসে চলে যাব—বেগশালী বায়ুপ্রবাহে গা ঢেলে দিয়ে নক্ষত্রবেগে অগ্রসর হ'ব। ভাবো দেখি একবার—কখনো মেঘের আড়ালে, কখনো বা ভূপৃষ্ঠ থেকে দু’চার হাত মাত্র উপর দিয়ে—যখন যেমন সুবিধা, তখন তেননি করে’ চলে’ যাব—আর অপরিজ্ঞাত আফ্রিকার নগ্ন দৃশ্যাবলী যেন সজীব হ'য়ে আমাদের চরণতলে নেচে বেড়াবে।

 ফার্গুসনের উৎসাহ ও উদ্দীপনা ক্রমেই কেনেডির হৃদয় অধিকার করিতেছিল বটে, কিন্তু যখনই তিনি মানস-নয়নে নীল—আকাশ-গাত্রে মেঘমালার অন্তরালে উড্ডীয়মান বেলুন দর্শন করিতেছিলেন, তখনই তাঁহার মস্তক ঘুরিয়া উঠিতেছিল। তিনি যুগপৎ বিস্ময়-বিমিশ্রিত গৌরব ও ভীতির সহিত বন্ধুর দিকে চাহিতে লাগিলেন। তাঁহার যেন মনে হইতে লাগিল তিনি অনন্ত শূন্য বায়ুরাশির মধ্যে চলিতেছেন! কিছুক্ষণ পর কেনেডি কহিলেন—

 “বেলুনকে চালিয়ে নিয়ে যাবার কোনো একটা উপায় তা' হ'লে তুমি আবিষ্কার করেছ?”

 “তা’ কি কখনো সম্ভব। সে একটা আকাশ-কুসুম মাত্র।”

 “তা’ হ’লে তুমি—”

 “ভগবান্ যেখানে নিয়ে যাবেন সেইখানেই যেতে হ’বে। তবে পূর্ব্ব থেকে পশ্চিমে যে যেতে পারে তা'তে আর সন্দেহ নাই।”

 “কেমন করে?”

 “বাণিজ্য-বায়ুর নাম শোননি কি? আফ্রিকার পূর্বাঞ্চলে পশ্চিমে সমান ভাবে বয়ে চলেছে—বিরাম নাই—বিচ্ছেদ নাই—মার্গচ্যুতিও নাই। সেই বাণিজ্য-বায়ুর আশ্রয় নিলেই হবে।”

 “হাঁ হাঁ, ঠিক বলেছ। বাণিজ্য-বায়ুর স্রোতে বেলুনটাকে ছাড়তে পারলে পূর্বব থেকে পশ্চিমে যাওয়া যেতে পারে বটে।”

 ইংরাজ গভর্ণমেণ্ট আমাদের জন্য একখানা জাহাজ ছেড়ে দিয়েছেন। যে সময় আমাদের আফ্রিকার পশ্চিম তীরে পৌঁছানোর কথা, সেই সময়ের তিন চার খানি জাহাজ আমাদের সন্ধানে পশ্চিম উপকূলে সমুদ্রের মধ্যে ঘুরে বেড়াবে। আমরা বোধ হয় তিন মাসের মধ্যেই জান্‌জিবারে যেতে পারব। সেখানেই বেলুনে গ্যাস পূর্ণ করে’ যাত্রা করা যাবে।”

 কেনেডি চমকিত হইয়া কহিলেন, “আমরা! তুমি আর কে?”

 “কেন, আমি আর তুমি। তোমার যেতে কিছু আপত্তি আছে না কি?”

 “কিছু কেমন? আমার সহস্র আপত্তি আছে। তার একটা বলি শোন। যদি দেশটা দেখতে চাও, তা' হ'লে ত তোমাকে অনেকবার উঠা-নামা করতে হ’বে। গ্যাস ছেড়ে না দিলে ত আর নাম্তে পারবে না। উঠা-নামা করতেই ত বেলুনের সব গ্যাস ফুরিয়ে যাবে।”

 “তোমার ভুল হয়েছে ডিক্—আমার এক বিন্দু গ্যাসও নষ্ট হবে না!”

 “গ্যাস না ছেড়ে তুমি নামতে পারবে? পারলে আর কি?”

 “পারবো বৈ কি?”

 “কেমন করে?”

 “ওই খানেই ত আমার গুপ্ত কৌশল আছে। ভায়া, আমার উপর ভরসা রাখ, আমারই মত বল—“ভগবানের ইচ্ছা পূর্ণ হোক।” কেনেডি যন্ত্রচালিতবৎ বলিলেন,—“ভগবানের ইচ্ছা পূর্ণ হোক।”