বিষয়বস্তুতে চলুন

ব্রজাঙ্গনা কাব্য (১৮৬৪)/১০

উইকিসংকলন থেকে

১০

বংশী ধ্বনি।

কেও বাজাইছে বাঁশী, স্বজনি,
মৃদু মৃদু স্বরে নিকুঞ্জ বনে?
নিবার উহারে; শুনি ও ধ্বনি
দ্বিগুণ আগুন জ্বলে লাে মনে!—
এ আগুনে কেনে আহুতি দান?
অমনি নারে কি জ্বালাতে প্রাণ?

বসন্ত অন্তে কি কোকিলা গায়
পল্লববসনাশাখাসদনে?
নীরবে নিবিড় নীড়ে সে যায়—
বাঁশী ধ্বনি আজি নিকুঞ্জ বনে?
হায়, ও কি আর গীত গাইছে?
না হেরি শ্যামে ও বাঁশী কাঁদিছে?

শুনিয়াছি, সই, ইন্দ্র রুষিয়া
গিরিকুল পাখা কাটিলা যবে,
সাগরে অনেক নগ পশিয়া

রহিল ডুবিয়া—জলধিভবে।
সে শৈল সকল শির্ উচ্চ করি
নাশে এবে সিন্ধুগামিনী তরী।

8

কে জানে কেমনে প্রেমসাগরে
বিচ্ছেদ পাহাড় পশিল আসি?
কার প্রেমতরী নাশ না করে—
ব্যাধ যেন পাখী পাতিয়া ফাঁশি—
কার প্রেমতরী মগনে না জলে
বিচ্ছেদ পাহাড়—বলে কি ছলে!

হায় লো সখি, কি হবে স্মরিলে
গত সুখ? তারে পাব কি আর?
বাসি ফুলে কি লো সৌরভ মিলে?
ভুলিলে ভাল যা—স্মরণ তার?
মধুরাজে ভেবে নিদাঘ জ্বালা,
কহে মধু, সই, ব্রজের বালা!