মণিপুরের সেনাপতি (শেষ অংশ)/ত্রয়োবিংশ পরিচ্ছেদ

উইকিসংকলন থেকে

ত্রয়োবিংশ পরিচ্ছেদ।


ইংরাজের পরাজয় ও হত্যা।

 যেমন তাঁহারা বহির্গত হইলেন, অমনি গ্রিমউড সাহেবের উপর অস্ত্রাঘাত হইল; তিনি সেই স্থানে যেমন পতিত হইলেন, অমনি ইহলোক পরিত্যাগ করিলেন।

In the meantime an infuriated mob assembled on all sides. The Senapati ordered his buglers “order order”, but this orders had no effect. The mob were labouring under an impression that, in their holy books it is said, that there will be a great war at Manipur which will not be won, till the blood of 5 of the enemies was given to certain Gods, and their heads buried in a certain ditch, When the Senapati orderd them to dispurse, some said, “We are giving our lives only for you and you are the cause of this war: if you still obstruct, we will kill you too,” The Chief then wanted to return. The Senapati pointed to him the danger on the way and repeatedly told the party not to leave the palace."

Amrita Bazar Patrika,
Dated 4th July, 1891,
 চিফ কমিশনর প্রভৃতি অপর কয়েক ব্যক্তিও সৈন্যগণ কর্তৃক ধৃত হইয়া প্রধান জল্লাদ সাগনসেনকা-দানা সিংহের হস্তে অর্পিত হইলেন। সেই সকল সৈন্যের মধ্যে থঙ্গেল জেনারেল ছিলেন। সৈন্যমাত্রই সেই বৃদ্ধের আজ্ঞাধীন, তাঁহার বিনা অনুমতিতে কেহই কিছু করিতে সমর্থ নহে; সুতরাং এই ইংরাজ কয়েকজনকে হত্যা করিবার অনুমতি তাহার নিকট প্রার্থনা করিল। তিনি উহাদিগকে হত্যা করিবার আদেশ প্রদান করিলেন। কেহ কেহ বলেন, টিকেন্দ্রজিৎও সেই সময় সেইস্থানে উপস্থিত ছিলেন, এবং তিনিও ইহার অনুমোদন করিলেন। পরিশেষে তাঁহাদের অদৃষ্টেও যাহা ঘটিয়াছিল, তাহা সকলেই বুঝিতে পারিতেছেন। মহারাণীর পাঁচ জন প্রধান কর্মচারী সেই প্রাসাদের ভিতরই মানবলীলা সম্বরণ করিলেন। সেই সময় হইতে পুনরায় গুলি চলিতে আরম্ভ হইল। আবার ইংরাজ সৈন্যগণও অস্ত্রধারণ করিল, আবার উভয় পক্ষে ঘোর যুদ্ধ উপস্থিত হইল। রাত্রি ২টা পর্যন্ত এইরূপ যুদ্ধ চলিতে লাগিল; ইংরাজ-সৈন্যের গুলিবারুদ প্রভৃতি যাহা ছিল, সমস্তই নিঃশেষ হইয়া গেল। তখন অনন্যোপায় হইয়া অবশিষ্ট ইংরাজ-সৈন্য পলায়ন করিল। সকলেই রেসিডেনসির পশ্চাৎ দরজা দিয়া বহির্গত হইয়া প্রাণভয়ে কাছাড়-অভিমুখে দ্রুতপদে ছুটিতে লাগিল। গ্রিমউড সাহেবের স্ত্রীও অনন্যোপায় হইয়া তাহাদিগের পশ্চাৎ পশ্চাৎ ছুটিলেন। তাঁহার পরিধানে একমাত্র কাপড় ও পদে একযোড়া সামান্য বিনামা ভিন্ন আর কিছুই ছিল না; এমন কি, তাহার টুপিটিী পর্য্যন্ত লইতেও তিনি অসমর্থ হইয়াছিলেন।

 রেসিডেন্‌সি হইতে যেমন সকলে বহির্গত হইল, মণিপুরিগণও অমনি তাহার ভিতর প্রবেশ করিল। তাহার ভিতর ধন-ভাণ্ডার ছিল, উহা লুট হইয়া গেল। দেখিতে দেখিতে রেসিডেনসিতে অগ্নি জ্বলিয়া উঠিল, ও মুহূর্ত্ত মধ্যে উহা ভস্মে পরিণত হইল।

 যে সকল সৈন্য সেই স্থান হইতে পলায়ন করিয়াছিল, তাহারা সকলেই নিরাপদে গমন করিতে পারিল না; প্রায় অনেকেই মণিপুরী সৈন্য কর্তৃক ধৃত হইয়া কারারুদ্ধ হইল। পলায়ন করিতে গিয়া যাহারা কয়েদী অবস্থায় পরিণত হইয়াছিল, তাহারা কিন্তু কেহই কয়েদীর যন্ত্রণা ভোগ করে নাই। পরে টিকেন্দ্রজিৎ সকলকেই অভয় প্রদান-পূর্ব্বক মুক্তি-প্রদান করিয়াছিলেন।

 ইংরাজের এই ভয়ানক দুর্ঘটনার কথা ক্রমে প্রকাশ হইল। কিন্তু প্রধান প্রধান কর্ম্মচারিগণ যে কাল-কবলে নিপতিত হইয়াছেন, তখন তাহা কেহই জানিতে পারিল না। সকলেই জানিল যে, তাহারা বন্দী হইয়াছেন; সকলেই শুনিল যে, ইংরাজ কর্ম্মচারী ও সৈনিকের দ্বারা মণিপুর-কারাগার পরিপূর্ণ হইয়াছে।

 এই সংবাদ ক্রমে সুদূর সিমলা-শৈলে গিয়া উপস্থিত হইল; মহারাণীর প্রতিনিধির কর্ণে গিয়া পৌছিল। কোন উপায় অবলম্বন করা কর্তব্য, গবর্ণর জেনারেল সাহেব তখন তাহাই ভাবিতে লাগিলেন।