মহুয়া
২১০নং কর্ণওয়ালিস ষ্ট্রীট, কলিকাতা।
প্রকাশক—কিশোরীমোহন সাঁতরা।
মহুয়া
প্রথম সংস্করণ (২১০০) আশ্বিন, ১৩৩৬
মূল্য-২৲, বাঁধাই—২।৶, ২৸০
আর্ট প্রেস, ৩১নং সেণ্টাল এভিনিউ, কলিকাতা
নরেন্দ্রনাথ মুখার্জি বি-এ কর্তৃক মুদ্রিত।
পাঠ পরিচয়
“মহুয়া”র অধিকাংশ কবিতা ১৩৩৫ সালের শ্রাবণ হইতে পৌষ মাসের মধ্যে লেখা। সেই সময়ে কথা হয়-যে রবীন্দ্রনাথের কাব্য- গ্রন্থাবলী হইতে প্রেমের কবিতাগুলি সংগ্রহ করিয়া বিবাহ উপলক্ষ্যে উপহার দেওয়া যায় এইরূপ একখানি বই বাহির করা হইবে, এবং কবি এই বইয়ের উপযোগী কয়েকটি নূতন কবিতা লিখিয়া দিবেন। কিন্তু অল্প দিনের মধ্যে কয়েকটির জায়গায় অনেকগুলি নূতন কবিতা লেখা হইয়া গেল; সেই সব কবিতাই এখন “মহুয়া” নামে বাহির হইতেছে।
ইহার কিছু পূর্ব্বে, ১৩৩৫ সালের আষাঢ় মাসে, “শেষের কবিতা” নামে উপন্যাসের জন্য কয়েকটি কবিতা লেখা হয়। ভাবের মিল হিসাবে সেই কবিতাগুলিও এই সঙ্গে ছাপা হইল।[১]
“পূরবী” (শ্রাবণ, ১৩৩২) বাহির হওয়ার পরে এই ৪ বৎসরে আরও অনেক কবিতা লেখা হইয়াছে, কিন্তু সে সব কবিতা “মহুয়া”য় স্থান পায় নাই। তাহার কারণ কবি নিজে সম্প্রতি একখানি চিঠিতে লিখিয়াছেন:—
“লেখার বিষষটা ছিল সংকল্প করা—প্রধানতঃ প্রজাপতির উদ্দেশে—আর তারই দালালী করেন যে-দেবতা তাঁকেও মনে রাখ্তে হ’য়েছিলো। অতএব “মহুয়া’র কবিতাকে ঠিক আমার হালের কবিতা ব’লে শ্রেণীবদ্ধ করা চলে না। ভেবে দেখ্তে গেলে এটা কোনো কাল-বিশেষের নয়, এটা আকস্মিক। আমার সত্যিকার আধুনিক কবিতার সঙ্গে যদি এদের এক পংক্তিতে বসাও তা’হলে তাদের বর্ণভেদ অত্যন্ত পরিস্ফুট হ’য়ে উঠ্বে। কিন্তু আমার সন্দেহ হ’চ্ছে কিছু যেন অত্যুক্তি করা হ’লো। ফরমাস ব্যাপারটা মোটর গাড়ির ষ্টার্টার-এর মতো। চালনাটা শুরু ক’রে দেয় কিন্তু তার প’রে মোটরটা চলে আপন মোটরিক্ প্রকৃতির তাপে। প্রথম ধাক্কাটা একেবারেই ভুলে যায়। মহুয়ার কবিতাগুলিও লেখবার বেগে ফরমাসের ধাক্কা নিঃসন্দেহই সম্পূর্ণ ভুলেছে—কল্পনার আন্তরিক তড়িৎ-শক্তি আপন চিরন্তনী প্রেরণায় তাদের চালিয়ে নিয়ে গেছে। প্রথম হাতল ঘোরানো হতেও পারে বাইরের থেকে, কিন্তু সচলতা সুরু হবা-মাত্রই লেখবার আনন্দই সারথী হ’য়ে বসে। এই জন্য আমার বিশ্বাস তোমরা এই লেখার মধ্যে নতুন কিছু পাবে, আকারে এবং প্রকারে। নতুন লেখার ঝোঁক যখন চিত্তের মধ্যে এসে পড়ে তখন তা’রা পূর্ব্বদলের পুরানো পরিত্যক্ত বাসায় আশ্রয় নিতে চায় না, নতুন বাসা না বাঁধতে পারলে তাদের মানায় না, কুলোয় না। ক্ষণিকার বাসা আর বলাকার বাসা এক নয়।”
“আমি নিজে মহুয়ার কবিতার মধ্যে দুটো দল দেখ্তে পাই। একটি হ’চ্ছে নিছক গীতি-কাব্য, ছন্দ ও ভাষার ভঙ্গীতেই তা’র লীলা। তাতে প্রণয়ের প্রসাধনকলা মুখ্য। আর-একটিতে ভাবের আবেগ প্রধান স্থান নিয়েছে, তাতে প্রণয়ের সাধন-বেগই প্রবল।”
“মহুয়ার “মায়া” নামক কবিতায় প্রণয়ের এই দুই ধারার পরিচয় দেওয়া হ’য়েছে। প্রেমের মধ্যে সৃষ্টি-শক্তির ক্রিয়া প্রবল। প্রেম সাধারণ মানুষকে অসাধারণ ক’রে রচনা করে—নিজের ভিতরকার বর্ণে রসে রূপে। তা’র সঙ্গে যোগ দেয় বাইরের প্রকৃতি-থেকে নানা গান গন্ধ, নানা আভাস। এম্নি ক’রে অন্তরে বাহিরের মিলনে চিত্তের নিভৃত- লোকে প্রেমের অপরূপ প্রসাধন নির্ম্মিত হ’তে থাকে— সেখানে ভাবে ভঙ্গীতে সাজে সজ্জায় নূতন নূতন প্রকাশের জন্য ব্যাকুলতা, সেখানে অনির্ব্বচনীয়ের নানা ছন্দ, নানা ব্যঞ্জনা। একদিকে এই প্রসাধনের বৈচিত্র্য, আর একদিকে এই উপলব্ধির নিবিড়তা ও বিশেষত্ব। মহুয়ার কবিতা চিত্তেব সেই মায়ালোকের কাব্য; তা’র কোনো অংশে ছন্দে ভাষায় ভঙ্গীতে এই প্রসাধনেব আয়োজন, কোনো অংশে উপলব্ধির প্রকাশ।”
“এই দুয়ের মধ্যে নূতনের বাসন্তিক স্পর্শ নিশ্চয় আছে—নইলে লিখ্তে আমার উৎসাহ থাক্তো না। তুমি তো জানোই কত অল্প সময়ের মধ্যে এগুলি সমাধা ক’রেছি। তা’র কারণ প্রবর্তনার বেগ মনে সতেজ ছিল। তাই অন্যমনস্কভাবে এই পত্রের পূর্ব্বাংশে তোমাকে যা লিখেছি অপরাংশে তা’র প্রতিবাদ ক’র্তে হ’লো। ব’লেছিলুম এ লেখাগুলি আকস্মিক। ভুলেছিলুম সব কবিতাই যখনি লেখা যায় তখনি আকস্মিক। সব কবিতা ব’ল্লে হয়তো বেশি বলা হয়। এক একটা সময়ের এক একটা নতুন ঝাঁকের কবিতা। বারো মাসে পৃথিবীর ছয় ঋতু বাঁধা, তাদের পুনরাবর্ত্তন ঘটে। কিন্তু আমার বিশ্বাস, একবার আমার মন থেকে যে-ঋতু যায় সে আর-এক অপরিচিত ঋতুর জন্যে জায়গা ক’রে বিদায় গ্রহণ করে। পূর্ব্বকালের সঙ্গে কিছু মেলে না এ হ’তেই পারে না, কিন্তু সে যেন শরতের সঙ্গে শীতের মিলের মতো। মনের যে-ঋতুতে মহুয়া লেখা সে আকস্মিক ঋতুই, ফরমাসের ধাক্কায় আকস্মিক নয়, স্বভাবতই আকস্মিক। এগুলি যখন লিখ্ছিলুম অপূর্ব্বকুমার প্রায় রোজ এসে শুনে যেতো, সে যে- উত্তেজনা প্রকাশ ক’র্তো সেটা অপূর্ব্বতায়ই উত্তেজনা। রূপের দিকে বা ভাবের দিকে একটা কিছু নতুন পাচ্ছে ব’লেই তা’র আগ্রহ—তখন সুধীন্দ্র দত্তও ছিল তা’র সঙ্গী। তা’র থেকে আমার বিশ্বাস আপনার এই সমর্থন পেতো যে, মনের মধ্যে রচনার একটি বিশেষ ঋতুর সমাগম হ’য়েছে—তাকে পূরবীর ঋতু বা বলাকার ঋতু ব’ল্লে চ’ল্বেনা।”
“পূরবী ও মহুয়ার মাঝখানে আর-একদল কবিতা আছে,— সেগুলি অন্য জাতের। তাদের মধ্যে নটরাজ ও ঋতুরঙ্গই প্রধান। নৃত্যা- ভিনয়ের উপলক্ষ্য নিয়ে এগুলি রচিত হ’য়েছিলো কিন্তু এরাও স্বভাবতই উপলক্ষ্যকে অতিক্রম ক’রেছে। আর কোনোখানেই শান্তিনিকেতনের মতো ঋতুর লীলারঙ্গ দেখিনি—তা’রই সঙ্গে মানব-ভাষায় উত্তর প্রত্যুত্তর কিছুকাল থেকে আমার চ’লছে। তা’র রীতিমতো শুরু হ’য়েছে শারদোৎসবে—তা’রপরে ঋতুগীতির প্রবাহ বেয়ে এসে প’ড়েছিলে। ঋতু-রঙ্গে। বিষয় এক তবু প্রভেদ যথেষ্ট। সেই প্রভেদ যদি না থাক্তো তা’হলে লেখবার উৎসাহই থাক্তো না। মহুয়ার কবিতা যখন প’ড়্বে তখন আমার স্বভাবের এই কথাটা মনে রেখো। এই বইয়ের প্রথমে ও সব শেষে যে-গুটিকয়েক কবিতা আছে সেগুলি মহুয়া পর্য্যায়ের নয়। সেগুলি ঋতু-উৎসব পর্য্যায়ের। দোল-পূর্ণিমায় আবৃত্তির জন্যেই এদের রচনা করা হ’য়েছিলো। কিন্তু নব-বসন্তের আবির্ভাবই মহুয়া কবিতার উপযুক্ত ভূমিকা বলে নকীবের কাজে ওদের এই গ্রন্থে আহ্বান করা হ’য়েছে।”
“মহুয়া নামটা নিয়ে তোমার মনে একটা দ্বিধা হ’য়েছিলো জানি। কাব্যের বা কাব্য-সংকলন গ্রন্থের নামটাকে ব্যাখ্যামূলক ক’র্তে আমার প্রবৃত্তি হয় না। নামের দ্বারা আগে-ভাগে কবিতার পরিচয়কে সম্পূর্ণ বেঁধে দেওয়াকে আমি অত্যাচার মনে করি। কবিতার অতি- নির্দিষ্ট সংজ্ঞা প্রায়ই দেওয়া চলে না। আমি ইচ্ছা ক’রেই মহুয়া নামটি দিয়েছি, নাম পাছে ভাষ্যরূপে কর্ত্তৃত্ব করে এই ভয়ে। অথচ কবিতাগুলির সঙ্গে মহুয়া নামের একটুখানি সঙ্গতি আছে—মহুয়া বসন্তেরই অনুচর, আর ওর রসের মধ্যে প্রচ্ছন্ন আছে উন্মাদনা। যাই হোক্ অর্থের অত্যন্ত বেশি সুসঙ্গতি নেই ব’লেই কাব্যগ্রন্থের পক্ষে এ নামটি উপযুক্ত ব’লে আমি বিশ্বাস করি।”
বইয়ের আরম্ভে বসন্তের আগমনী সম্বন্ধে ৫ টি কবিতা, আর বইয়ের শেষে বসন্তের বিদায় সম্বন্ধে ৪টি কবিতা ১৩৩৩-১৩৩৪ সালের লেখা। ঐ সময়ের আর একটি মাত্র কবিতা “সাগরিকা” এই বইতে স্থান পাইয়াছে।
প্রত্যেক কবিতার নীচে লেখার তারিখ দেওয়া হইয়াছে। যেখানে ঠিক তারিখ জানা নাই অথচ মোটামুটিভাবে নির্দ্ধারণ করা যায় সেখানে একটি প্রশ্নসূচক (?) চিহ্ণ দেওয়া হইল। “শুধায়োনা কবে কোন্ গান” কবিতাটি ১৩৩৫ সালের ভাদ্র অথবা আশ্বিন মাসে লেখা।
শব্দের আদিতে “্যা”-উচ্চারণ দেখাইবার জন্য রবীন্দ্রনাথের নির্দ্দেশ অনুসারে “ে”-চিহু ব্যবহার করা হইয়াছে। যেমনঃ— ‘দেখো’ (= দেখিও) আর ‘দেখো’ (দ্যাখো =দেখহ); ‘ফেলো’ (=ফেলিও) আর ‘ফেলো’ (ফ্যালো =ফেলহ) ইত্যাদি।
অ-কারের ও-ধ্বনি ’ চিহ্ণ (ইলেক-চিহ) দ্বারা নির্দেশ করা হইয়াছে। যেমনঃ— “করে” আর “ক’রে” (= কোরে, অসমাপিকা করিয়া অর্থে); “বলে” আর “ব’লে” (=বোলে, বলিয়া অর্থে) ইত্যাদি।
আর একটি কথা উল্লেখযোগ্য—নাম-পত্রখানি কবির স্বহস্ত-অঙ্কিত।
সূচিপত্র | |||||
পৃষ্ঠা | |||||
"শুধায়োনা কবে কোন গান" | |||||
উজ্জীবন | ভস্ম-অপমান শয্যা ছাড়ো, পুষ্পধনু |
১ | |||
বোধন | মাঘের সূর্য্য উত্তরায়ণে |
১ | |||
বসন্ত | ওগো বসন্ত, হে ভুবনজয়ী, |
৬ | |||
বরযাত্রা | পবন দিগন্তের দুয়ার নাড়ে, |
৮ | |||
মাধবী | বসন্তের জয়রবে দিগন্ত কাঁপিল যবে |
১০ | |||
বিজয়ী | বিবশ দিন, বিরস কাজ |
১১ | |||
প্রত্যাশা | প্রাঙ্গণে মোর শিরীষশাখায় |
১২ | |||
অর্ঘ্য | সূর্য্যমুখীর বর্ণে বসন লই রাঙায়ে, |
১৪ | |||
দ্বৈত | আমি যেন গোধূলি গগন |
১৭ | |||
সন্ধান | আমার নয়ন তব নতনের নিবিড় ছায়ায় |
১৯ | |||
উপহার | মণিমালা হাতে নিয়ে |
২০ | |||
শুভযোগ | যে-সন্ধ্যায় প্রসন্ন লগনে |
২২ | |||
মায়া | চিত্ত কোণে ছন্দে তব বাণীরূপে |
২৪ | |||
নির্ঝরিণী | ঝর্না, তোমার স্ফটিক জলের |
২৬ | |||
শুকতারা | সুন্দরী তুমি শুকতারা |
২৮ | |||
প্রকাশ | আচ্ছাদন হ'তে ডেকে লহো মোরে |
৩০ | |||
বরণডালা | আজি এ নিরালা কুঞ্জে, |
৩২ | |||
মুক্তি | ভোরের পাখী নবীন আঁখি দুটি |
৩৪ | |||
উদ্ঘাত | অজানা জীবন বাহিনু, |
৩৬ | |||
অসমাপ্ত | বোলো তা'রে, বোলো, |
৩৮ | |||
নিবেদন | অজানা খণির নূতন মণির গেঁথেছি হার, |
৪১ | |||
*অচেনা | রে অচেনা, মোর মুষ্টি ছাড়াবি কী ক'রে, |
৪৩ | |||
অপরাজিত | ফিরাবে তুমি মুখ, |
৪৫ | |||
নির্ভয় | আমরা দুজনা স্বর্গ-খেলনা |
৪৮ | |||
*পথের বাঁধন | পথ বেঁধে দিল বন্ধনহীন গ্রন্থি, |
৫০ | |||
দূত | ছিনু আমি বিষাদে মগনা |
৫২ | |||
পরিচয় | তখন বর্ষণহীন অপরাহ্ন মেঘে |
৫৪ | |||
দায়-মোচন | চিরকাল র'বে মোর প্রেমের কাঙাল |
৫৭ | |||
সবলা | নারীকে আপন ভাগ্য জয় করিবার |
৬০ | |||
প্রতীক্ষা | তোমার প্রত্যাশা ল'য়ে আছি, প্রিয়তমে, |
৬৩ | |||
লগ্ন | প্রথম মিলন দিন, সে কি হবে |
৬৬ | |||
সাগরিকা | সাগর জলে সিনান করি' সজল এলোচুলে |
৭০ | |||
বরণ | পুরাণে ব'লেছে একদিন নিয়েছিলো |
৭৪ | |||
পথবর্ত্তী | দূর মন্দিরে সিন্ধু কিনারে |
৭৮ | |||
মুক্তরূপ | তোমারে আপন কোণে স্তব্ধ করি যবে |
৮০ | |||
স্পর্দ্ধা | শ্লথ প্রাণ দুর্ব্বলের স্পর্দ্ধা আমি কভু সহিব না! |
৮২ | |||
রাখী-পূর্ণিমা | কাহারে পরাবো রাখী যৌবনের |
৮৩ | |||
আহ্বান | কোথা আছ? ডাকি আমি। |
৮৪ | |||
বাপী | একদা বিজনে যুগল তরুর মূলে |
৮৫ | |||
মহুয়া | বিরক্ত আমার মন কিংশুকের এত গর্ব্ব দেখি' |
৮৮ | |||
দীনা | তোমারে সম্পূর্ণ জানি হেন মিথ্যা |
৯১ | |||
সৃষ্টি-রহস্য | সৃষ্টির রহস্য আমি তোমাতে ক'রেছি |
৯৪ |- | নাম্নী | ||
শ্যামলী | সে যেন গ্রামের নদী বহে নিরবধি |
৯৫ | |||
কাজলী | প্রচ্ছন্ন দাক্ষিণ্যভারে চিত্ত তা'র নত |
৯৭ | |||
হেঁয়ালী | যারে সে বেসেছে ভালো তা'রে সে কাঁদায়। |
৯৯ | |||
খেয়ালী | মধ্যাহ্নে বিজন বাতায়নে সুদূর গগনে |
১০১ | |||
কাকলী | কলছন্দে পূর্ণ তা'র প্রাণ,— |
১০৩ | |||
পিয়ালী | চাহনি তাহার, সব কোলাহল হ'লে সারা |
১০৪ | |||
দিয়ালী | জনতার মাঝে দেখিতে পাইনে তা'রে |
১০৫ | |||
নাগরী | ব্যঙ্গ-সুনিপুণা, শ্লেষবাণ-সন্ধান-দারুণা! |
১০৬ | |||
সাগরী | বাহিরে সে দুরন্ত আবেগে |
১০৯ | |||
জয়তী | যেন তা'র চক্ষুমাঝে |
১১০ | |||
ঝামরী | সে যেন খসিয়া-পড়া তারা, |
১১১ | |||
মূরতী | যে শক্তির নিত্যলীলা নানা বর্ণে আঁকা, |
১১৩ | |||
মালিনী | হাসি-মুখ নিয়ে যায় ঘরে ঘরে, |
১১৫ | |||
করুণী | তরুলতা যে-ভাষায় কয় কথা |
১১৬ | |||
প্রতিমা | চতুর্দ্দশী এলো নেমে |
১১৮ | |||
নন্দিনী | প্রথম সৃষ্টির ছন্দখানি |
১২০ | |||
ঊষসী | ভোরের আগের যে-প্রহরে |
১২১ | |||
ছায়ালোক | যেথায় তুমি গুণী জ্ঞানী, যেথায় তুমি মানী, |
১২৩ | |||
প্রচ্ছন্না | বিদেশে ঐ সৌধশিখর 'পরে |
১২৬ | |||
দর্পণ | দর্পণ লইয়া তা'রে কী প্রশ্ন শুধাও একমনে |
১২৯ | |||
ভাবিনী | ভাবিছ যে-ভাবনা একা-একা |
১৩০ | |||
একাকী | চন্দ্রমা আকাশরশ্মি আজি ওই তরুণ প্রভাতে |
১৩২ | |||
আশীর্ব্বাদ | জ্বলিল অরুণরশ্মি আজি ওই তরুণ প্রভাতে |
১৩৪ | |||
নববধূ | চ'লেছে উজান ঠেলি' তরণী তোমার, |
১৩৬ | |||
পরিণয় | শুভখন আসে সহসা আলোক জ্বেলে |
১৩৯ | |||
মিলন | সৃষ্টির প্রাঙ্গণে দেখি বসন্তে অবণ্যে |
১৪১ | |||
বন্দিনী | তুমি বনের পূব পবনের সাথী |
১৪৪ | |||
গুপ্তধন | আরো কিছুখন না হয় বসিয়ো পাশে, |
১৪৬ | |||
প্রত্যাগত | দূরে গিয়েছিলে চলি'; |
১৪৮ | |||
পুরাতন | যে-গান গাহিয়াছিনু কবেকার দক্ষিণ |
১৫০ | |||
ছায়া | আঁখি চাহে তব মুখপানে, |
১৫১ | |||
*বাসর ঘর | তোমারে ছাড়িয়ে যেতে হবে |
১৫৩ | |||
বিচ্ছেদ | রাত্রি যবে সাঙ্গ হ'লো, দূরে চলিবারে |
১৫৪ | |||
বিদায় | কালের যাত্রার ধ্বনি |
১৫৫ | |||
প্রণতি | কত ধৈর্য্য ধরি' ছিলে কাছে |
১৬০ | |||
নৈবেদ্য | তোমারে দিইনি সুখ, মুক্তির নৈবেদ্য |
১৬২ | |||
অশ্রু | সুন্দর, তুমি চক্ষু ভরিয়া |
১৬৩ | |||
অন্তর্দ্ধান | তব অন্তর্দ্ধান পটে হেরি তব রূপ চিরন্তন।৭ |
১৬৪ | |||
বিরহ | শঙ্কিত আলোক নিয়ে দিগন্তে উদিল |
১৬৫ | |||
বিদায় সম্বল | যাবার দিকের পথিকের 'পরে |
১৬৭ | |||
দিনান্তে | বাহিরে তুমি নিলে না মোরে, দিবস গেল |
১৬৯ | |||
অবশেষ | বাহির পথে বিবাগী হিয়া |
১৭১ | |||
শেষ মধু | বসন্ত বায় সন্ন্যাসী হায় চৈৎ-ফসলের |
১৭৩ |

এই লেখাটি বর্তমানে পাবলিক ডোমেইনের আওতাভুক্ত কারণ এটির উৎসস্থল ভারত এবং ভারতীয় কপিরাইট আইন, ১৯৫৭ অনুসারে এর কপিরাইট মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। লেখকের মৃত্যুর ৬০ বছর পর (স্বনামে ও জীবদ্দশায় প্রকাশিত) বা প্রথম প্রকাশের ৬০ বছর পর (বেনামে বা ছদ্মনামে এবং মরণোত্তর প্রকাশিত) পঞ্জিকাবর্ষের সূচনা থেকে তাঁর সকল রচনার কপিরাইটের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়। অর্থাৎ ২০২৫ সালে, ১ জানুয়ারি ১৯৬৫ সালের পূর্বে প্রকাশিত (বা পূর্বে মৃত লেখকের) সকল রচনা পাবলিক ডোমেইনের আওতাভুক্ত হবে।

- ↑ “শেষের কবিতা”র জন্য লেখা কবিতাগুলিকে সুচিপত্রে তারকা (*) চিহ্নিত করা হইয়াছে। ইহাদের মধ্যে ২টি কবিতা “বিচ্ছেদ” (১৫৪ পৃঃ) আর “বিরহ” (১৬৫ পৃঃ) “শেষের কবিতা”র জন্য লেখা হইলেও ঐ উপস্যাসে ব্যবহার করা হয় নাই।