শিশু/অস্তসখী
অস্তসখী
রজনী একাদশী পোহায় ধীরে ধীরে,
রঙিন মেঘমালা উষারে বাঁধে ঘিরে।
আকাশে ক্ষীণ শশী আড়ালে যেতে চায়,
দাঁড়ায়ে মাঝখানে কিনারা নাহি পায়॥
এ-হেন কালে যেন মায়ের পানে মেয়ে
রয়েছে শুকতারা চাঁদের মুখে চেয়ে।
কে তুমি মরি মরি, একটুখানি প্রাণ-
এনেছ কী না জানি করিতে ওরে দান॥
মহিমা যত ছিল উদয়-বেলাকার
যতেক সুখসাথী এখনি যাবে যার,
পুরানো সব গেল— নূতন তুমি একা
বিদায়কালে তারে হাসিয়া দিলে দেখা॥
ও চাঁদ যামিনীর হাসির অবশেষ,
ও শুধু অতীতের সুখের স্মৃতিলেশ,
তারারা দ্রুতপদে কোথায় গেছে সরে-
পারে নি সাথে যেতে, পিছিয়ে আছে পড়ে॥
তাদেরি পানে ও যে নয়ন ছিল মেলি,
তাদেরি পথে ও যে চরণ ছিল ফেলি,
এমন সময়ে কে ডাকিলে পিছু-পানে
একটি আলোকেরি একটু মৃদু গানে॥
গভীর রজনীর রিক্ত ভিখারিকে
ভোরের বেলাকার কী লিপি দিলে লিখে
সোনার-আভা-মাখা কী নব আশাখানি
শিশিরজলে ধুয়ে তাহারে দিলে আনি॥
অস্ত-উদয়ের মাঝেতে তুমি এসে
প্রাচীন নবীনেরে টানিছ ভালোবেসে—
বধূ ও বর রূপে করিলে এক-হিয়া
করুণ কিরণের গ্রন্থি বাঁধি দিয়া॥
[আলমোড়া
১ ভাদ্র? ১৩১০]