বিষয়বস্তুতে চলুন

সংস্কৃত ব্যাকরণের উপক্রমণিকা

উইকিসংকলন থেকে

সংস্কৃত ব্যাকরণের উপক্রমণিকা

INTRODUCTION

TO

SANSKRIT GRAMMAR.

COMPILED IN BENGALI,

For the use

OF

THE GOVT. SANSKRIT COLLEGE

OF CALCUTTA.

BY

ESHWAR CHANDRA VIDYASAGAR

Principal of that Institution.


Calcutta.

PRINTED AT THE SANSKRIT PRESS.

1851.




সংস্কৃত ব্যাকরণের উপক্রমণিকা।


কলিকাতাস্থ


গবর্ণমেণ্ট সংস্কৃত কালেজের


নিমিত্ত


উক্ত বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ


শ্রীযুত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর


কর্তৃক


বাঙ্গালা ভাষায়


প্রণীত



কলিকাতা।

সংস্কৃত যন্ত্রে মুদ্রিত

সংবৎ ১৯০৮



বিজ্ঞাপন।

 কলিকাতাস্থ গবর্ণমেণ্ট সংস্কৃত কালেজে, সাহিত্য শাস্ত্র অধ্যয়ন করিতে আরম্ভ করিষার পুর্ব্বে, বিদ্যার্থি গণ মুগ্ধবোধ ব্যাকরণ আদ্যন্ত এবং ধাতুপাঠ, অমর কোষ ও ভটিকাব্যের কিয়দংশ পাঠ করিয়া থাকে। এই সকল গ্রন্থ পাঠ করিতে প্রায় পাঁচ বৎসর অতীত হয়; কিন্তু সংস্কৃত ভাষায় তাদৃশী ব্যুৎপত্তি জন্মে না। এই নিমিত্ত, ছাত্রেরা, যখন সাহিত্য শাস্ত্র অধ্যয়ন করিতে আরম্ভ করে, উত্তম উত্তম কাব্যের প্রকৃতরূপে অর্থ বোধ ও ভাবগ্রহ করিতে পারে না। বাস্তবিক, ব্যাকরণ শাস্ত্রে সম্যক ব্যুৎপন্ন ও অগ্রে সহজ সহজ গ্রন্থ পাঠ করিয়া সংস্কৃত ভাষায় কিঞ্চিৎ প্রবিষ্ট না হইলে, কোন ক্রমেই উৎকৃষ্ট কাব্য নাটকাদি গ্রন্থের অধ্যয়নে অধিকারী হইতে পারে না। কিন্তু মুগ্ধবোধ ব্যাকরণ, ধাতুপাঠ, অমরকোষ ও ভট্টিকাব্যের কিয়দংশ মাত্র পাঠ করিয়া ব্যাকরণ শাস্ত্রে সম্যক্‌ ব্যুৎপন্ন ও সংস্কৃত ভাষায় অধিকারী হওয়া কোন মতেই সম্ভাবিত নহে।


 মুগ্ধবোধ ব্যাকরণ অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত ও দুরূহ; অল্পবয়স্ক বালকদিগের বুদ্ধিগম্য হইবার ৰিষয় নহে। যাহারা প্রথম অধ্যয়ন করিতে আরম্ভ করে তাহারা গ্রন্থের অর্থ বুঝিতে ও তাৎপর্য্য গ্রহ করিতে কোন ক্রমেই সমর্থ হয় না; অধ্যাপকের মুখে যাহা শুনে তাহাই কণ্ঠস্থ করিয়া রাখে। বিশেষতঃ, বিলক্ষণ রূপে আদ্যন্ত মুগ্ধবোধ পাঠ করিলেও সংস্কৃত ব্যাকরণ শাস্ত্রে সম্যক্‌ ব্যুৎপত্তি জন্মে না। মুগ্ধবোধ ব্যাকরণে ব্যাকরণের সমুদায় বিষয় লিখিত হয় নাই। অনেক স্থলে এরূপে লিখিত হইয়াছে যে সহজে তাৎপর্য্য গ্রহ হওয়া দুর্ঘট। সেই সেই স্থলে টীকাকারদিগের সাহায্য আবশ্যক। কিন্তু যে সকল মহাশয়েরা মুগ্ধবোধের টীকা লিখিয়াছেন, দুর্ভাগ্য ক্রমে, তাঁহারা ব্যাকরণ শাস্ত্রে সম্যক্‌ ব্যুৎপন্ন ছিলেন না। সুতরাং ব্যাকরণের যথার্থমতগ্রহ বিরহে, অনেক স্থলেই, স্বকপোলকল্পিত ব্যাখ্যা দ্বারা অসম্বদ্ধ অপ্রামাণিক অর্থ প্রতিপন্ন করিয়া গিয়াছেন।

 মুগ্ধবোধ ব্যবসায়িরা মুগ্ধবোধ শব্দের দুই প্রকার ব্যুৎপত্তি করিয়া থাকেন[]। তদনুসারে এই দুই অর্থ নিষ্পন্ন হয়। এক অর্থ এই যে, মুগ্ধবোধ পাঠে ব্যাকরণে বিলক্ষণ ব্যুৎপত্তি জন্মে। দ্বিতীয় এই যে, এই গ্রন্থ পাঠ করিলে মূঢ় জনেরও সম্যক্‌ ব্যাকরণ জ্ঞান জন্মে। কিন্তু এই দুই কথাই অলীক ও অপ্রামাণিক। মুগ্ধবোধব্যবসায়িরা, ব্যাকরণ মাত্র পাঠ করিয়া, ব্যাকরণ শাস্ত্রে ব্যুৎপন্ন হইতে পারেন না; এবং অত্যন্ত সুবুদ্ধি না হইলে মুগ্ধবোধে বোধাধিকার হয় না। ফলতঃ মুগ্ধবোধের অধ্যয়নে ও অধ্যাপনে যাদৃশ পরিশ্রম ও কষ্ট, কোন ক্রমেই তদনুযায়ি ফল লাভ হয় না।

 ধাতুপাঠ ও অমরকোষ, সম্যক্‌ রূপে অর্থ সঙ্কলন পূর্ব্বক, আদ্যন্ত কণ্ঠস্থ করিয়া রাখিতে পারিলে অন্যান্য শাস্ত্রের অধ্যয়ন কালে শব্দার্থ পরিজ্ঞান বিষয়ে কিছু কিছু আনুকুল্য হয় যথার্থ বটে; কিন্তু ঐ দুই গ্রন্থ আদ্যন্ত কণ্ঠস্থ করিতে যেরূপ আয়াস ও পরিশ্রম স্বীকার করিতে হয়, ঐ আনুকুল্যে তদনুরূপ উপকার বোধ হয় না। বরং, ঐ গ্রন্থ দ্বয় কণ্ঠস্থ করিতে যে সময় যায় ও যে পরিশ্রম হয় সেই সময় ও সেই পরিশ্রম, বিবেচনা পূর্ব্বক বিষয় বিশেষে নিয়োজিত হইলে, তদপেক্ষা অনেক অংশে সমধিক ফলোপধায়ক হইতে পারে।

 এই সমস্ত পর্য্যালোচনা করিয়া শিক্ষাসমাজের অধ্যক্ষ মহোদয়েরা মুগ্ধবোধ, ধাতুপাঠ, অমরকোষ এই গ্রন্থ ত্রিতয়ের পাঠনা রহিত করিয়া সিদ্ধান্তকৌমুদী অধ্যয়নের আদেশ প্রদান করিয়াছেন। সংস্কৃত ভাষায় যত ব্যাকরণ আছে, সিদ্ধান্তকৌমুদী সর্বোৎকৃষ্ট। সিদ্ধান্তকৌমুদী আদ্যন্ত পাঠ হইলে, ব্যাকরণের অবশ্যজ্ঞেয় কোন কথাই অপরিজ্ঞাত থাকে না।

 ব্যাকরণ পাঠ না হইলে সংস্কৃত ভাষায় অধিকার হয় না। কিন্তু সংস্কৃত ব্যাকরণ সংস্কৃত ভাষায় রচিত। সুতরাং, যাহারা প্রথম ব্যাকরণ পাঠ করিতে আরম্ভ করে তাহারা অধীয়মান গ্রন্থের অর্থ বোধ ও তাৎপর্য্য গ্রহ করিতে পারে না। এই নিমিত্ত, সংস্কৃত ব্যাকরণ পাঠ করিতে এত সময় নষ্ট ও এত কষ্ট হয়। বিশেষতঃ সংস্কৃত কালেজে যাহারা অধ্যয়ন করিতে আরম্ভ করে, তাহারা নিতান্ত শিশু; শিশুগণের পক্ষে সংস্কৃত ভাষা লিখিত সংস্কৃত ব্যাকরণ পাঠ কোন ক্রমেই সহজ ও সুসাধ্য নয়। যাঁহারা ইঙ্গরেজী অধ্যয়ন করেন তাঁহাদের মধ্যেও অনেকেই সংস্কৃত ভাষা শিক্ষা করিতে অত্যন্ত উৎসুক ও অত্যন্ত অভিলাষী হইয়া থাকেন। কিন্তু সংস্কৃত ব্যাকরণ অত্যন্ত দুরূহ ও অত্যন্ত নীরস বলিয়া সাহস করিয়া অধ্যয়নে প্রবৃত্ত হইতে পারেন না। বস্তুতঃ সংস্কৃত ব্যাকরণ ও সংস্কৃত ভাষা উভয়ের পরস্পর সাপেক্ষতা থাকাতেই সংস্কৃত ভাষা শিক্ষা এরূপ দুরূহ হইয়া রহিয়াছে।

 অতএব, প্রথমেই সংস্কৃত ভাষা লিখিত সংস্কৃত ব্যাকরণ, এবং ব্যাকরণ সমাপ্ত করিয়াই একবারে রঘুবংশ প্রভৃতি উৎকৃষ্ট কাব্য, পড়িতে আরম্ভ করা কোন ক্রমেই শ্রেয়স্কর বোধ না হওয়াতে, শিক্ষাসমাজের সম্মতিক্রমে এই নিয়ম নির্দ্ধারিত হইয়াছে; ছাত্রেরা, প্রথমতঃ, অতি সরল বাঙ্গালা ভাষায় সঙ্কলিত সংস্কৃত ব্যাকরণ, ও অতি সহজ সংস্কৃত গ্রন্থ, পাঠ করিবেক; তৎপরে, সংস্কৃত ভাষায় কিঞ্চিৎ বোধাধিকার জন্মিলে, সিদ্ধান্তকৌমুদী ও রঘুবংশাদি পাঠ করিতে আরম্ভ করিবেক। তদনুসারে সরল বাঙ্গালা ভাষায় ব্যাকরণ সঙ্কলন ও দুই তিন খানি সহজ সংস্কৃত পুস্তক প্রস্তুত করা অত্যাবশ্যক বোধ হওয়াতে, প্রথম পাঠার্থে সংস্কৃত ব্যাকরণের উপক্রমণিকা নামে এই পুস্তক প্রস্তুত ও প্রচারিত হইল।

 এই গ্রন্থে অল্পবয়স্ক বালকদিগের প্রথম শিক্ষোপযোগি স্থূল স্থূল বিষয় সকল সঙ্কলিত হইয়াছে। ইহা পাঠ করিয়া সংস্কৃত ব্যাকরণে ব্যুৎপত্তি জন্মিবেক না যথার্থ বটে কিন্তু উপদেশসাপেক্ষ হইয়া সহজ সহজ সংস্কৃত গ্রন্থ সকল সহজে অধ্যয়ন করিবার ক্ষমতা জন্মিবেক, সন্দেহ নাই। এবং ইহাই এই পুস্তক প্রস্তুত করিবার মুখ্য তাৎপর্য্য। প্রায় সমুদায় সংস্কৃত গ্রন্থ দেবনাগর অক্ষরে মুদ্রিত; বাস্তবিকও যাবতীয় সংস্কৃত গ্রন্থ দেবনাগর অক্ষরেই মুদ্রিত ও অনুশীলিত হওয়া উচিত। এই নিমিত্ত বালকদিগের দেবনাগর অক্ষর পরিচয় অত্যাবশ্যক বোধ হওয়াতে, এই পুস্তকের শেষে, সহজে উক্ত অক্ষর পরিচয়ের উপায় বিধান করা গিয়াছে। আর হিতোপদেশ, পঞ্চতন্ত্র, রামায়ণ, মহাভারত, বিষ্ণুপুরাণ, ভট্টিকাব্য, ঋতু সংহার, বেণীসংহার এই কয়েক গ্রন্থ হইতে বালকদিগের পাঠোপযোগি অংশ সকল সঙ্কলন করিয়া ঋজুপাঠ নামে তিন খানি পুস্তক প্রস্তুত হইয়াছে। এতদ্ব্যতিরিক্ত মুগ্ধবোধ অথবা লঘুকৌমুদীতে ব্যাকরণের যত বিষয় লিখিত আছে, সেই সমুদায় বাঙ্গালা ভাষায় সঙ্কলন করিয়া অতি ত্বরায় ব্যাকরণকৌমুদী নামে আর এক খানি পুস্তক প্রস্তুত করা যাইবেক।

 সংস্কৃত কালেজে প্রথম প্রবিষ্ট ছাত্রেরা প্রথম বৎসরে অগ্রে সংস্কৃত ব্যাকরণের উপক্রমণিকা পাঠ করিয়া ঋজুপাঠের প্রথম ভাগ পাঠ করিবেক। দ্বিতীয় বৎসর, ব্যাকরণকৌমুদী ও ঋজুপাঠের দ্বিতীয় ভাগ। এই সকল পাঠ করিয়া, ব্যাকরণে এক প্রকার ব্যুৎপত্তি জন্মিলে, এবং সংস্কৃত ভাষায় কিঞ্চিৎ প্রবেশ হইলে, তৃতীয় ও চতুর্থ বৎসরে সিদ্ধান্তকৌমুদী, ঋজুপাঠের তৃতীয় ভাগ এবং রঘুবংশ ও কুমারসম্ভব পাঠ করিবেক। এইরূপে চারি পাঁচ বৎসরে ব্যাকরণে অসাধারণ ব্যুৎপত্তি ও সংস্কৃত ভাষাতেও বিলক্ষণ বোধাধিকার জন্মিতে পারিবেক।

 
শ্রীঈশ্বরচন্দ্র শর্ম্মা।

কলিকাতা। সংস্কৃত কালেজ।

সংবৎ ১৯০৮। ১লা অগ্রহায়ণ।

পরিচ্ছেদসমূহ (মূল গ্রন্থে নেই)

সূচীপত্র

 ৫৬
 ৮৫

এই লেখাটি বর্তমানে পাবলিক ডোমেইনের আওতাভুক্ত কারণ এটির উৎসস্থল ভারত এবং ভারতীয় কপিরাইট আইন, ১৯৫৭ অনুসারে এর কপিরাইট মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। লেখকের মৃত্যুর ৬০ বছর পর (স্বনামে ও জীবদ্দশায় প্রকাশিত) বা প্রথম প্রকাশের ৬০ বছর পর (বেনামে বা ছদ্মনামে এবং মরণোত্তর প্রকাশিত) পঞ্জিকাবর্ষের সূচনা থেকে তাঁর সকল রচনার কপিরাইটের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়। অর্থাৎ ২০২৫ সালে, ১ জানুয়ারি ১৯৬৫ সালের পূর্বে প্রকাশিত (বা পূর্বে মৃত লেখকের) সকল রচনা পাবলিক ডোমেইনের আওতাভুক্ত হবে।

  1. মুগ্ধঃ সুন্দরমূঢ়য়োরিতি বিশ্বপ্রকাশঃ। মুগ্ধঃ সুন্দরো বোধোজ্ঞানং ভবত্যস্মাদিতি, মুগ্ধান্‌ মূঢ়ান্‌ বোধয়তীতি বা মুগ্ধবোধম্‌॥