পাতা:প্রবাসী (ঊনত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○○がネ একচেটিয়া নয়। উভয়কেই প্রাচ্যের বৈশিষ্ট্য বুল। যাক্টতে পারে। মাঝে মাঝে শুনিতে পাই, ইংরেজি যুগে বাঙ্গালীর কাবা খাট বাঙ্গলার সঙ্গে যোগসূত্র ছিন্ন করিয়াছে । এজন্ত বিশেষ দুঃখ প্রকাশ করা হইয়া থাকে। ছোটথাটো বিষয়ে একথা কথঞ্চিৎ সভ্য হইলেও মোটের উপর ইহা সত্য নহে । পশ্চিমের সংঘর্ষে আসিয়া যোগস্থত্র ছিন্ন করিবার চেষ্টা কিছু কিছু হইয়াছিল, কিন্তু বাঙ্গালীর প্রকৃতি, ও প্রতিভা তাহার বিরোধী বলিয়া, সে চেষ্টা সফল হইতে পারে নাই ৷ মাইকেলকেও ব্ৰজাঙ্গন কাব্য লিখিতে হইয়াছিল এবং সে-লখা তাহার প্রাণ দিয়াই লেখা। ভানুসিংহের পদাবলী ৰে নিতান্তই রবীন্দ্রনাথের কিশোর বয়সের খেয়াল মাত্র নয়, তাহ। তাহার প্রবীণ বয়সের ব্রহ্ম ও বাউল সঙ্গীত দেখিলেই প্রতীয়মান হয় । ধারা একই রহিয়াছে মাঝে মাঝে বাক ফিরিয়াছে মাত্র । বহু বিজ্ঞ লোকের মুখে শুনিয়াছি, বাঙ্গলা কাব্য স্বকীয় বিশেষত্ব হারাইতেছে ; পুনরায় নিজেদের সনাতন স্বরূপ চিনিয়া সেইথানে তাহার ফিরিয়া যাওয়ার প্রয়োজন । আমি বলিয়াছি, রূপ কিছু বদলাইলেও তাহার স্বরূপের বদল হয় নাই ; কিন্তু এই ধে ফিরিয়া ধাইবার ফরমাইস্ আইসে সে কোথায় ? সেই যাত্রা, কীৰ্ত্তন, কথকতা, পদাবলী, পাচালীর যুগে বাঙ্গালীর যে culture ফেলিয়া আসিয়াছি, সেইখানে ? মাঝে মাঝে ফিরিতে লোভ হয় বটে ; কিন্তু ভাবিয়া দেখিলে, কি দেখিতে পাই ? স্থদীর্ঘ দাস-জীবনের দৈবনির্ভরশীল সহজ নিশ্চিস্ততা এবং অনায়াসলঞ্জ শঙ্গসম্পদ-সভূত কৰ্ম্মবিমুখ আলগুপ্রিয়তা যে আনন্দের মূলে, সে আনন্দ অপেক্ষা আজিকার দুঃখ ও যে বরণীয়। কাব্যসাহিত্যে বাঙ্গালীর যে বিশিষ্ট culture এর পরিচয় পাইয়াছি তাহা বক্তিয়ার থিলিঞ্জি আসিবার পূর্বের নহে, পরের—একথা ভুলিবার কথা নহে। সেইখানে ফিরিয়া সনাতন দাশু রসকে ভাবী বাঙ্গলার সাহিত্যের মধ্যেও বনিয়াদী করিয়া তুলিতে হইবে, একথা সঙ্গউ মনে করি না । অদ্যকার বাঙ্গালী জীবনের দুঃখের প্রবাসী – মাঘ, ১৩৩৬ [ ২৯শ ভাগ, ২য় খণ্ড SS SSAAAASA SAASAASAASAASAASAA মূল সেই পুরাতনের মধ্যেই রস সংগ্ৰহ করিতেছিল, অতীতের আবিষ্ণুষ্যকারিভাই বর্তমানকে এমন ঐহীন করিয়াছে । তথাপি পিতামহদের ক্ষেতভর ধান ও দেহভরা স্বাস্থ্য ছিল ; দুঃখ তখনও আজকার মত এমন মুৰ্ত্ত হইয়াও দেখা দেয় নাই ; দুঃখ অসহ ছিল না বলিয়া তাহাকে লইয়া তখন ঘর করা এমন কি আনন্দ করাও চলিত, কিন্তু আজ তাহা অষ্ঠায় হইবে, আজ বাঙ্গালীর দুঃখের অবধি নাই ; কল্পনায় নিজেকে সৰ্ব্ব দুঃখের উৰ্দ্ধে তুলিয়া রাখিয়া আজি আমর। কাব্যে বাঙ্গলা সাহিত্যের বৈশিষ্ট্য বজায় রাখিয়াছি । কিন্তু বৰ্ত্তমান জীবনে আজ তাহা নিতান্তই আত্ম-প্রবঞ্চনা হইয়া উঠিভেছে, একথা বিন্দুমাত্র অতু্যক্তি. নহে । । ফরমাইসে কাব্য রচিত হয় না ; কিন্তু ফরমাইস যদি দিতেই হয় তবে বলিতে হয়, পুরাতনে প্রত্যাবৰ্ত্তন না করিয়া বাঙ্গলার কাব্য-আদর্শ নৃতন রূপ গ্রহণ করুকৃ । জগৎকে যদি প্রেম ভক্তির মন্ত্র দানই এই সাহিত্যের কার্ষ্য হয়, তবে তাহাকে এখন শক্তি ও মুক্তি পথের পথিক হইতে হইবে, স্বদেশী গান রচনা করিতে হইবে বলিতেছি না, কারণ তাহার বোধ করি অভাব নাই ; যে সাহিত্যে আত্মনির্ভরশীল মৎস্য দুঃখের সহিত মুখোমুখি পরিচয় স্থাপন করিয়া আপনাকে মুক্ত করিতে পারে, অকুষ্ঠিত শক্তির সাহায্যে জয়ের সাধন করে, ভক্তিভরে কেবলই রফা করিয়া পথ চলে ন!—ণে সাহিত্যের রূপ কিরূপ হুইবে বলিতে পারি না । আত্ম-প্রত্যয়ী শক্তিমানের নিকট হষ্টতে ভিন্ন কেহই কোন দান গ্রহণ করিবে না, প্রেমের দান তো নহেই । যাহা আছে তাহাও রক্ষিত্ত হুইবে না যদি আমরা তাহাকে চিৰদিনই স্থঙ্কুমার করিয়া রাখি । কিন্তু আশার . কথা এই, বাঙ্গালী তাহার কাব্যের সম্মুখে যে আদর্শমূৰ্ত্তি ধরিয়াছে, তাহ যেমন মধুর তেমনি বিরাট ৷ 'বাঙ্গুলার ও বাঙ্গল গীতিকাব্যের প্রাণ কৃষ্ণলীলায় মুগ্ধ ; শ্রীকৃষ্ণের জন্মও দাসত্বের মধ্যে—কংশকারাগারে । র্তার আত্মবিশ্বত কৈশোরের মধুর লীলা বাঙ্গালীর কাব্যে সজীব ও শু্যামল, কিন্তু সেই ঐকৃষ্ণের যৌবন তো বৃন্দাবন ছাড়িয়া সম্পূর্ণ ভিন্ন পথের পথিক