পাতা:প্রবাসী (ঊনত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&bb [ २>* छां★, २ब्र थ* নৈসর্গিক জগৎ নিয়ে আলোচনা বা গবেষণা করবার জন্য খুব বড়ো পুস্তকালয় আর সংগ্রহশালা এই পরিষদে-র সঙ্গে বিদ্যমান। এখানকার পুস্তকাধ্যক্ষের সঙ্গে পরিচয় হ’ল, আর এদেশের নৃতত্ত্ব আর সমাজ-তত্বের সম্বন্ধে একজন মস্ত একপত্রী পণ্ডিত অধ্যাপক Schricke সূক্ষ্মকে-র সঙ্গে আলাপ হ’ল। ডাক্তার বস্-এর সঙ্গে তার পরে মিউজিয়মটা একটু ঘুরে আসা গেল। ইতি মধ্যে ধীরেনবাবু আর স্বরেন বাবু মিউজিয়মে এসে গিয়েছেন, আর র্তারা প্রাচীন প্রস্তরমূৰ্ত্তির সংগ্রহের ঘরে সেখানকার ভাস্কর্য্যের নিদর্শনের মধ্যে এক সৌন্দর্য্য-ভাণ্ডার খোলা পেয়ে, পাত বা’র কবে পেন্সিলে স্কেচ করতে লেগে গিয়েছেন। ডাক্তার বস আমার পিতল আর তামার মূৰ্ত্তির ঘরে আগে নিয়ে গেলেন । প্রাচীন যবদ্বীপের শিল্পের এদিকটা আমার প্রায় কিছুই জানা ছিল না, এখানকার সংগ্রহে সুন্দর স্বন্দর মুক্তি দেখে অবাকৃ হ’য়ে গেলুম। নানা বুদ্ধ আর বোধিসত্ত্ব মুৰ্ত্তি ; বোর্ণিও-দ্বীপ থেকে প্রাপ্ত চমৎকার একটা দাড়ানো বুদ্ধ-মূৰ্ত্তি, প্রায় হাতখানেক লম্বা হবে ; অপূৰ্ব্ব স্বন্দর কতকগুলি দাড়ানো শিবের মুন্তি, আর বল শিব-উমার মূৰ্ত্তি --রাক্ষস-মূৰ্ত্তি, পিতলের ঘণ্টা, বড়ে বড়ো নক্সা-কাটা তামার খালা ; এ সব দেখে মুগ্ধ হ’য়ে গেলুম। ডাক্তার বসু আমায় বলেছিলেন যে যবদ্বীপের এই সব মূৰ্ত্তির সঙ্গে বিহারের নালন্দায় প্রাপ্ত তামার আর পিতলের মূৰ্ত্তির সাদৃশু আছে—আর এই সাদৃশ্নের কারণ, তার মতে, যবদ্বীপের শিল্প ভারতের প্রভাবে জাত ব’লে ঘ’টেছে মনে না করে, যবদ্বীপ থেকেই মাতৃভূমি ভারতে শিল্প বিষয়ে প্রতিপ্রভাব গিয়েছে তাই এই সাদৃগু, এ রকমটাও মনে করা যেতে পারে। যবদ্বীপের ওলন্দাজ প.গুত কারু কারু একটা ধারণ দাড়িয়েছে যে যবদ্বীপের হিন্দু আমলের সংস্কৃতি, তার বাস্তু-শিল্প ভাস্কৰ্য্য আর অন্ত কলাকে অবলম্বন ক’রে যা দাড়িয়েছিল তা বেশীর ভাগই ঘবদ্বীপীয় লোকেদের নিজেদের চেষ্টার ফল, এর কুতিত্ব বেশীর ভাগ ভারতের ব’লে তারা মানতে চান না। একথা কিন্তু সহজে মেনে নেবার নয়। যা হোক, এ বিষয়ে আলোচনা আরম্ভ হ’য়েছে, বিচার চলছে, শেষ কথা এখনও বহু দূরে,-এই তো সবে চর্চার আরম্ভ । একমাত্র ভারতীয় পণ্ডিত যিনি এতাবৎ এই আলোচনায় যোগ দিয়েছেন তিনি হ’চ্ছেন শ্রদ্ধাস্পদ শ্ৰীযুক্ত অৰ্দ্ধেন্দ্রকুমার গঙ্গোপাধ্যায় মহাশয় । পিতল তামার মূৰ্ত্তির ঘরটা মোটামুট সেরে, ডাক্তার বস্ এর সঙ্গে মিউজিয়মের Schats-kamer ‘লখাটুম-কামের বা রত্নভাণ্ডার দেখতে গেলুম। লোহার দরজা কৰাট অণটা এই ঘর, দরজায় প্রহরী, এক সঙ্গে এক জনের বেশী ঢুকতে বা বেরুতে পারে না । ভিতরে গিয়ে দেখলুম, সোনা রূপোর জহরতের কাজে বড়ো বড়ো আলমারী ভরা ; পাচট রাজকন্যার বিবাহের যৌতুক যেন সাজানো রয়েছে। প্রাচীন স্থমাত্র যবদ্বীপ বলিদ্বীপের সোনার কাজের প্রচুর নমুনা ; সব চেয়ে বিস্ময়কর হচ্ছে বলিদ্বীপের সোনার কাজ। বিস্তর ক্রীস বা ছোরা আর ছোট তলওয়ারের খাপ, সোনার নকাশী কাজ করা, হাতল গুলিতে সোনার রাক্ষসমূৰ্ত্তি , বলিদ্বীপের শিল্পের এ একটি বৈশিষ্ট-যুক্ত স্বষ্টি , আর বলিদ্বীপের সোনা রূপে মোড়া মূৰ্ত্তি, আর খাটা সোনার ভারী ভারী পাত্ৰ—পানের বাট, পান-পাত্ৰ, থালা-বাটী। অপরূপ লতা-পাত, হিন্দু দেব দেবীর মূৰ্ত্তি, রাক্ষস মূৰ্ত্তি, এই সব পাত্রের গায়ে করেছে। প্রাচীন যবদ্বীপের প্রচুর সোনার মুদ্রাযুক্ত অঙ্গুরীয়-সীল আংটী—দেগলুম যবদ্বীপীয় অক্ষরে নাম গোদা রয়েছে, বা পদ্মফুল, মাছ ইত্যাদি মালঙ্গ্য-চিহ্ন,জার “শ্ৰী” শব্দটা প্রাচীন অক্ষরে লেখা রয়েছে ; সোনার ছোট একটা অঙ্গুলিত্রাণ দেখলুম, অতি সূক্ষ্ম কাজে সেটাতে পাহাড় গাছ-পালা হরিণ প্রভূতি খোদাই করা । এ-ছাড়া রূপার আর সোনার নানা দেব দেবীর মূৰ্ত্তি আছে। - এই ঘরট বেশ করে দেখে যখন বেরুলুম, তখন দেপি অনেক দেরী হয়ে গিয়েছে ; শীঘ্র শীঘ্ৰ হোটেলে ফিরতে হবে, খাওয়া-দাওয়া ক’রতে হ’বে, যাত্রার জন্য প্রস্তুত হ'তে হবে। তাই তাড়াতাড়ি মিউজিয়মের অন্ত অংশ গুলি যথা সম্ভব সংক্ষেপে ঘুরে এলুম। নীচের তালায় পাথরের ছোটো বড়ো মূৰ্ত্তি সব এনে রেখেছে। এখানেই অনায়াসে দুতিন ঘণ্টা কাটানে। যায়। এ যাত্রা একবারের মতন পালি চোখ বুলিয়ে নিলুম মাত্র, বলিদ্বীপ থেকে ফিরে ভালো ক’রে দেখবার জন্য রেখে দিলুম—এ সব না দেখে যেতে বড়ো কষ্ট হ’ল। স্বরেনবাবু আর ধীরেনবাবু ইতি মধ্যে তাদের স্কেচ-বইয়ের বিস্তর পৃষ্ঠা পেন্সিলে আঁকা ছবিতে ভরিয়ে ফেলেছেন। পাথরের মূৰ্ত্তির ঘরে, ছবির সাহায্যে" পূৰ্ব্বেই পরিচিত কতকগুলি মূৰ্ত্তি দেপলুম। মজপহিতের প্রথম রাজা কৃতরাজস জন্মবন্ধনের মূৰ্ত্তি, হরিহররূপে কল্পিত— বিরাট ভাব-দ্যোতক অতিকায় আকারের মূৰ্ত্তি—খ্ৰীষ্টীয় চোদর শতকের ; এইট, আর জয়বৰ্দ্ধনের প্রধান মহিষীর এরই অজুরূপ একটী মূৰ্ত্তি, পাৰ্ব্বতী রূপে কল্পিত,—এই দুইট, পাথরের মূৰ্ত্তির ঘরে প্রবেশ করবার দরজার ছু-ধারে দণ্ডায়মান ; দেখে আগেই মনে বিশেষ শ্রদ্ধ-বিস্ময় জনিত আনন্দের উদয় হয়, পরে আমরাঁ ঘরের ভিতরে যেতে পারি। ভিতরে বহু বহু অন্ত মূৰ্ত্তির মধ্যে, তিনটী অতি গম্ভীর ভাবদ্যোতক দেবমূৰ্ত্তি দেখে অার চোখ ফেরাতে ইচ্ছে করে না—মনে শুদ্ধ-ভাব হয় এই তিনটী মূৰ্ত্তি দেখে, দেব-দর্শনের উদ্বেগু বা তাই