পাতা:প্রবাসী (ঊনত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭৬৪ প্রবাসী—চৈত্র, ১৩৩৬ [ ২৯শ ভাগ, ২য় খণ্ড সকল ঘটনা আমরা অনবরতই মানিয়া লইতেছি, যাহাদের বিষয় অনেক সময় কোন জিজ্ঞাস্ত আছে বলিয়া আমাদের মনে হয় না, তাহাই বৈজ্ঞানিকের গবেষণার বিষয়। কিন্তু "facts' শূন্তে ঘুরিয়া বেড়ায় না। যতক্ষণ না কেহ সেই ঘটনাবস্তু অনুভব করিতেছেন, প্রত্যক্ষ করিতেছেন, ততক্ষণ fact-এর অস্তিত্বই থাকে না । স্বতরাং অমুভূতির বিষয়-সমূহই বৈজ্ঞানিকের অনুসন্ধানের বস্তু। শুধু বিজ্ঞান কেন, সাহিত্য বলুন, দশন বলুন, সকলের উৎপত্তিই ঐ বিষয়াচুভূতি হইতে। তবে, তাহাদের মধ্যে প্রভেদ কোথায় ? প্রভেদ তাহাদের outlook অর্থাৎ লক্ষ্যে এবং উদ্দেশ্যে। বিজ্ঞান বাস্তব জগত লইয়া কাৰ্য্য করে। বিজ্ঞানের তথ্যের মধ্যে উদেখ, মূলা, সামাজিক উপকারিতার কোন কথা নাই। বস্তুকে বিজ্ঞান শুধু তাহার বস্তুত্ব হিসাবেই অনুসন্ধান করে। পৃথিবীতে তাহার দাম কি, সমাজে তাহার প্রয়োজনীয়তা কি, সে-সমস্ত নিরূপণ করা বিজ্ঞানের মুখ্য উদ্দেশু নহে। "বৈজ্ঞানিকের বাস্তব অবস্থিতির উপর স্বাভাবিক আসক্তি প্রকাশিত হয়, যখন, ব্যবহার ও উন্ধেশ্ব, স্বশৃঙ্খল সার্থকতা, সৌন্দৰ্য্য, সামাজিক উপকারিতা, ও ব্যক্তিগত সম্বন্ধ ইতাদির অপসারণ করা হয়। বৈজ্ঞানিক ঘটনাবলীর অনাড়ম্বর ‘কেন’তেই স্পষ্টত সাড়া দেন, আরও অধিক নমোযোগ বা গুণগ্রহণের দাবি করিলে তিনি অস্বীকারস্থচক সাড়া দিয়া থাকেন।”—{Titchener Systematic Psychology, 1929 pp. 32-33) তাই বিজ্ঞানের কার্য্যপ্রণালী sg observation <! সমীক্ষা । অভিনিবেশপূৰ্ব্বক ধৈয্যের সহিত ঘটনাবলীর সমীক্ষণ এবং বর্ণন-ইহাই বৈজ্ঞানিকের কার্য্যধারা। তাই যত অধিক তথ্য অঙ্গুসন্ধান করা হইতে থাকে, বিজ্ঞান ততই সমৃদ্ধিশালী হইয়া উঠে। কিন্তু বিবিধ বৈজ্ঞানিক বিষয়ের জ্ঞানলাভ করিলেই যে অধিকতর গভীরভাবে দার্শনিক হওয়া যায় তাহা নহে। একই ঘটনার নানা দিক, তাই নানা বিজ্ঞান। বস্তু "ন্ধে সম্পূৰ্ণ জ্ঞান অর্জন করিতে হইলে অনেক দিক হইতে তাহাকে লক্ষা করিতে হয়। ক্ষুধার সময় খাওয়৷ &#ffT (T, fisE GL Physics, Chemistry, Physiology, Psychology Tom isoft worso বিষয় হইতে পারে। তাই যদিও বিষয়-হিসাবে আমরা সাধারণতঃ বিজ্ঞানের শ্রেণী বিভাগ করি, মূলতঃ আমাদের attitude অথবা দেখিবার পদ্ধতির উপরেই উহt নির্ভর করে। বিজ্ঞানের উদ্দেশ্য এবং কাৰ্য্যপ্রণালী সম্বন্ধে মোটামুটি কিছু আভাস দিয়াছি, এখন দেখা যাক শিক্ষার সহিত বিজ্ঞানের সংস্পশ কোথায় । আমরা ‘শিক্ষা’ শব্দটির যথেষ্ট অপব্যবহার করি বলিয়া আমার মনে হয়। সাধারণতঃ ‘শিক্ষিত অর্থে এম্-এ, বি-এ পাশ করা, এইরূপ ধারণা করিয়া লই। অর্থাৎ বুদ্ধিবৃত্তির উৎকৰ্ধসাধনকেই শিক্ষা বলিয়া মানিয়া লই। আরও স্বাক্ষভাবে বিচার করিলে দেখা যাইব্রেবুদ্ধিবৃত্তিও নহে, শুধু স্মৃতিশক্তির উৎকর্যই আমাদের কাছে ‘শিক্ষা’ নামে অভিহিত হয়। কারণ এম্-এ, বি-এ পাশ করা অনেক সময় শুধু স্মৃতিশক্তির উপরই নির্ভর করে । ইহার দুইটি কারণ আছে বলিয়া মনে করি। একটি অর্থনৈতিক ; কিছুদিন আগে পৰ্য্যন্ত লোকে দেখিতে এম-এ, বি-এ পাশ করিলেই অর্থোপার্জনের সুবিধা হয়, তাই জীবন-সংগ্রাম যত প্রবল হইতে লাগিল, অন্য মনোবৃত্তি অপেক্ষ বুদ্ধিবৃত্তির পরিচর্য্যা করাই বাঞ্ছনীয় হইয়া উঠিল। কালক্রমে ইহাই “শিক্ষা’ শব্দের একমাত্র অর্থ হইয়া দাড়াইল। এ বিষয়ে আমার বিশেষ বলিবার কিছু নাই। শিক্ষার এই সঙ্কীর্ণ অর্থ যে অসম্পূর্ণ এবং কাৰ্য্যকরীও নহে আমরা আবার তাহা বুঝিতে আরম্ভ করিয়াছি। আর একটি কারণ, বুদ্ধিবৃত্তি বিষয়ে সাধারণ লোকের একটি উচ্চ ধারণা আছে। সকল মনোবৃত্তি অপেক্ষ বুদ্ধিবৃত্তিকেই সৰ্ব্বোচ্চ স্থান সকলে দিয়া থাকে, এবং তাহারা বিশ্বাস করে যে, বুদ্ধিবৃত্তি মার্জিত হইলে অন্ত সকল বিষয়েও আশাচুরূপ ও সন্তোষজনক ফল লাভ হইবে। বুদ্ধিবৃত্তি মানবতার ভিত্তি ; তাই এই বৃত্তির উৎকর্ষসাধনই শিক্ষার মন্ত্র । সেইজন্য এই অর্থে উচ্চশিক্ষিত