পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (তৃতীয় ভাগ).djvu/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

وكteض= far Bh=s প্রথম পরিচ্ছেদ রাজপথে 艇拳 Thero— now lean on me : Place your foot hele ஆ Manfred. কোন লেখক বলিয়াছেন, “মনুষ্যের জীবন কাব।বিশেষ ” কপালকুণ্ডলার জীবনকাব্যের এক সর্গ সমাপ্ত হইল। পরে কি হইবে ? নবকুমার মেদিনীপুরে আসিয়া অধিকারীর প্রদত্ত ধনবলে কপালকুণ্ডলার জঙ্গ এক জন দাসী, এক জন রক্ষক ও শিবিকাবাহক নিযুক্ত করিঘুl, তাহাকে শিবিকারোহণে পাঠাইলেন । অর্থের অপ্রাচুর্য হেতু স্বয়ং পদব্রজে চলিলেন। নবকুমার পূৰ্ব্বদিনের পরিশ্রমে কাস্ত ছিলেন, মধ্যাহ্নভোজনের পর বাহকের তাহাকে অনেক পশ্চাৎ করিয়া গেল। ক্রমে সন্ধ্য হইল । শীতকালের অনিবিড় মেঘে আকাশ আচ্ছন্ন হইয়াছে । সন্ধ্যাও অতীত হইল । পৃথিবী অন্ধকারমরী হুইল । অল্প অল্প বৃষ্টিও পড়িতে লাগিল । নবকুমার কপাল কুণ্ডলার সহিত একত্র হইবার জন্য ব্যস্ত হইলেন । মনে মনে স্থির-জ্ঞান ছিল যে, প্রথম সরাইতে র্তাহার সাক্ষাৎ পাইবেন, কিন্তু সরাইও আপাততঃ দেখা যায় ন। প্রায় রীত্রি ঢারি ছয় দণ্ড হইল । নবকুমার দ্রুতপাদবিক্ষেপ করিতে করিতে চলিলেন । অকস্মাৎ কোন কঠিন দ্রব্যে র্তাহার চরণ-স্পর্শ হইল পদভরে সে বস্তু খড় খড় মড়মড় শব্দে ভাঙ্গিয় গেল ; নব - কুমার দাড়াইলেন, পুনৰ্ব্বার পদচালনা করিলেন, পুনৰ্ব্বার ঐরূপ হইল। পদম্পূষ্ট বস্তু স্তে করিয়৷ তুলিয়া লইলেন । দেখিলেন, ঐ বস্তু তক্তাভাঙ্গার মত | . আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হইলেও সচরাচর এমন অন্ধ কার হয় না যে, অনাবৃত স্থানে স্থল বস্তুর অবয়ব লক্ষ্য হয় না। সম্মুখে একটা বৃহৎ বস্তু পড়িয়াছিল ; নবকুমার অনুভব করিয়া দেখিলেন যে, সে ভগ্ন শিবিকা ; অমনি তাহার হৃদয়ে কপালকুণ্ডলার বিপদ আশঙ্কা হইল । শিবিকার দিকে যাইতে আবার ভিন্নপ্রকার পদার্থে তাহার পদম্পর্শ হইল। এ স্পর্শ কোমল ৩ষু—২১ মনুষ্যশরীরস্পর্শের স্যায় বোধ হইল। বসিয়া হাত । বুলাইয়া দেখিলেন, মনুষ্যশরীর বটে। স্পর্শ অত্যন্ত শীতল, তৎসঙ্গে দ্রবপদার্থের স্পর্শ অনুভূত হইল । নাড়ীতে হাত দিয়া দেখিলেন, স্পন্দন নাই, প্রাণবিয়োগ হইয়াছে। বিশেষ মনঃসংযোগ করিয়া দেখিলেন, যেন নিশ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দ শুন যাইতেছে। নিশ্বাস আছে, তবে নাড়ী নাই কেন ? এ কি রোগী ? নাসিকার নিকট হাত দিয়৷ দেখিলেন, নিশ্বাস বহিতেছে না। তবে শব্দ কেন ? হয় ত কোন জীবিত ব্যক্তিও এখানে আছে, এই ভাবিয়' জিজ্ঞাসা করিলেন, “এখানে কেহ জীবিত ব্যক্তি আছে ?” মূঢ়স্বরে এক উদ্ভব হইল, “আছি ।" নবকুমার কহিলেন, “কে তুমি ?" উত্তর হইল, “তুমি কে ?” নবকুমারের কর্ণে স্বর স্ত্রীকণ্ঠজাত বোধ হইল । বাগ হইয়া জিজ্ঞাসা করি লেন, “কপালকুণ্ডলা না কি ?” স্ত্রীলোক কহিল, “কপালকুণ্ডল কে, তা জানি ন৷ --আমি পথিক, আপাততঃ দস্থ হস্তে নিস্কুণ্ডল৷ হুইয়াছি ?” - বাঙ্গ শুনিয়া নবকুমার ঈষৎ প্রসন্ন হইলেন । জিজ্ঞাসিলেন, “কি হইয়াছে ?” উত্তরকারিণী কহিলেন, “দস্ল্যুতে আমার পান্ধী ভাঙ্গিয়া দিয়াছে, আমার এক জন বাহককে মারিয়৷ ফেলিয়াছে, আর সকলে পলাইয়া গিয়াছে । দস্থ্যর আমার তাঙ্গের অলঙ্কার সকল লইয়। আমাকে পান্ধীভে বঁধিয়া রাখিয়া গিয়াছে।" নবকুমার অন্ধকারে অনুধাবন করিয়া দেখিলেন, যথার্থই একটি স্ত্রীলোক শিবিকাতে বস্ত্র দ্বারা দৃঢ়তর বন্ধনযুক্ত আছে । নবকুমার শীঘ্রহস্তে তাহার বন্ধন মোচন করিয়া কহিলেন, “তুমি উঠিতে পারিবে কি ?” স্ত্রীলোক কহিল,“আমাকেও এক ঘা লাঠি লাগিয়াছিল, এ জন্য পায়ে বেদন আছে, কিন্তু বোধ হয়, অল্প সাহায্য করিলে উঠিতে পারিব।” নবকুমার হস্ত বাড়াইয়া দিলেন । রমণী তৎসাহায্যে গাত্ৰোখান করিলেন । নবকুমার জিজ্ঞাসা করিলেন, “চলিতে পারিবে-কি ?” -- স্ত্রীলোক উত্তর না করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “আপনার পশ্চাতে কেহ পথিক আসিতেছে দেখিয়াছেন ?”