পাতা:বিশ্বকোষ প্রথম খণ্ড.djvu/৩৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অন্ত্র ইয়া দেয়, তাহাদের পাকস্থলীর একটী আশ্চৰ্য্য গুণ আছে। ঐ সকল জাতীয় পক্ষীর নিয়পাকস্থলীর দুই দিকে ছুইটী কোষ থাকে। বাচ্ছা হইলে উভয় পক্ষী ও পক্ষিণীর সেই কোষ হইতে দুগ্ধের মত এক প্রকার রস নিস্থত হইয় তাহা ভুক্তদ্রব্যে মিশ্রিত হইয়া যায়। পরে তাহ উগারিয়া শাবককে খাওয়াইলে বাচ্ছাগুলি শীঘ্র হৃষ্ট পুষ্ট হয়। বাচ্ছা বড় হইলে আর ঐ রস নিস্থত झग्न नीं । ক্ষুদ্র বেঙ্গাচীর জলের ছোট ছোট তৃণলতার কোমলাংশ খাইয়া প্রাণ ধারণ করে। এ অবস্থায় তাহাদের পাকস্থলীর গঠন লম্বা, এবং অন্ত্রও বৃহদাকার,—পাক দিয়া উপরে উপরে গুটান থাকে। ক্রমে বড় ভেক হইয়া উঠিলে, উহার কীটপতঙ্গ ধরিয়া থায় তখন অস্ত্রও ছোট হইয়া আসে । মাছের শরীরের চেয়ে অন্ত্র অনেক ছোট। কোন কোন মৎস্তের অন্ত্র সোজা, আবার কোন কোন জাতির অন্ত্র পাক দিয়া গুটান। কেঁচুয়া প্রভৃতি সামান্ত প্রাণীর মৃখ হইতে মলদ্বার পর্য্যন্ত একটা সোজা ছিদ্র আছে । কিন্তু ঐ ছিদ্র এরূপ কৌশলে নিৰ্ম্মিত যে, তাহাতে ভূক্ত দ্রব্যের রস সহজে শোষিত হয়। অনেক প্রকার ছোট ছোট জলকীট আছে তাহাদের মলদ্বার নাই । স্বল্প স্বল্প কীটাণু ধরিয়া খাইলে তাহাদের সত্ব দেহে শোষিত হয়, পরে অসার অংশ উগারিয়া ফেলে । আবার এরূপ অনেক জলকীট আছে যে, তাহাদের মুখও নাই, মলদ্বারও নাই,--শরীরের মধ্যে কোন প্রকার ছিদ্র নাই । তাতার শিকার পাইলে তাহার চারিদিকে নিজের শরীর বেষ্টন করিয়া ধরে। তাহাতেই শিকারের সারাংশ উহাদের দেহ মধ্যে প্রবেশ করে। [ অন্যান্ত বিবরণ পরিপাক শব্দে দেখ ] । গোরু গুতাইলে কিম্বা অন্ত কোন কারণে পেটের চৰ্ম্ম ছিড়িয়া অন্ত্র বাহির হইয়া পড়িলে তৎক্ষণাৎ বিজ্ঞ চিকিৎসককে মানাইবে। চিকিৎসক আসিবার পূৰ্ব্বে রোগীকে বিশেষ রূপে সুস্থির করিয়া রাখিবে। তাহাকে কাশিতে কিম্বা কাদিতে দিবে না। পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তি হইলে ১৪ বিন্দু আফিমের অরিষ্ট অৰ্দ্ধছটাক জলের সঙ্গে মিশাইয়া থাইতে দিবে। দুৰ্ব্বল ব্যক্তিকে এবং স্ত্রীলোককে ৭ বিন্দু প্রয়োগ করিবে। দুই এক বৎসরের শিশুকে আফিম প্রয়োগ করিতে হইলে অনেকটুকু বিজ্ঞতা চাই। কিন্তু অৰ্দ্ধ বিন্দু কিম্বা এক বিন্দু অরিষ্ট [ ৩৩৫ ] অন্ত্ৰজ্বর সেবন করাইলে কোন বিঘ্ন ঘটে না। এই সকল সাবধানত ভিয়, অস্ত্ৰে যেন কাদাধুলা না লাগে তাহার প্রতিও দৃষ্টি রাখা আবখক। নিকটে চিকিৎসক না পাইলে গৃহস্থ নিজে একটু সাহস করিয়া অন্ত্র পেটের ভিতরে প্রবেশ করাইতে পারেন। অন্ত্রের যে দিক্‌ শেষে বাহির হইয়া আসিয়াছে, তাহাই প্রথমে প্রবেশ করাইতে হয়। কাজেই যে অংশ প্রথমে বাহির হইয়। আসে, তাহ সৰ্ব্বশেষে প্রবেশ করানো আবশুক । অন্ত্র প্রবেশ করাইয়া পেটের উপরের চৰ্ম্ম সেলাই করিয়া দিবে। সরু তার দিয়া সেলাই করিতে পারিলে ভাল হয়। কিন্তু তাহার অভাবে স্থতা দিয়া সেলাই করিবে । চৰ্ম্ম যোড়া লাগিলে ঐ তার কিম্বা স্থত। খুলিয়া ফেলিবে । ক্ষত স্থান সেলাই করা হইলে উপরে এক থানি পাতলা বস্ত্র বাধিয়া দিবে। এবং পূর্কের মত রোগীকে অল্প আর আফিম সেবন করাইবে । তিন চারি দিন, দুগ্ধ মাংসের ঝোল প্রভৃতি তরল দ্রব্য ভিন্ন কঠিন পথ্যের ব্যবস্থা করা উচিত নহে। কখন ক খন অস্ত্রে এরূপ আঘাত লাগিলে অভ্যন্ত্রপ্রদাহ এবং পেরিটোনাইটিপ্‌ ঘটিতে পারে। তজ্জন্ত সত্বর বিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ লইবে । অস্ত্রস্তুর বা আন্ত্রিকত্বর। (Enteric or Typhoid fever) এক প্রকার কঠিন একজর। ইহার বিরাম কাল প্রায় বুঝিতে পারা যায় না। অন্যান্ত ইন্দ্রিয়ের অপেক্ষ ইহাতে অস্ত্রই অধিক বিকৃত হয়, তাই ইহার নাম অস্ত্রজ্বর। আমাদের দেশে সচরাচর ইহাকে ত্রিদোয জনিত সান্নিপাতিক বিকার কহে। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে, ঠিক অস্ত্ৰজর ভারতবর্ষে অতি বিরল। মেলেরিয়৷ জনিত স্বল্প বিরাম জরের সঙ্গে কঠিন উদরাময় থাকিলেই কোন কোন স্থলে টাইফয়েড় জরের কতকগুলি উপসর্গ ঘটিয়া থাকে। অনেক স্থলে এই জয় হঠাৎ একেবারে প্রকাশিত হয় না । পীড়ার লক্ষণাদি প্রকাশ পাইবার পূৰ্ব্বে শরীর যেন কেমন কেমন করিতে থাকে। ভাল ক্ষুধা হয় না, আহারে অরুচি জন্মে, ভোজন করিতে বধিলে গা বমি । বমি করে। কোন দিন প্রাতঃকালে পিত্ত এবং অন্ন জল বমন হইয়া যায়। মন সৰ্ব্বদাই অমুখী, কোন কাজ করিতে উদ্যম জন্মে না । রাত্রিতে নিদ্রা হয় না ; অল্প নিদ্রার আবেশ হইলেও রোগী স্বপ্ন দেখিয়া চমকিয়া