পাতা:রাধারাণী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२8 রাধারাণী রা। এক্ষণে আমার সাহস বাড়িল । জানিলাম যে, আপনি আমার স্বজাতি। এখন স্পৰ্দ্ধ হইতেছে, আজি আপনাকে আমার আতিথ্য স্বীকার করাই । দেবেন্দ্র। সে কথা পরে হবে। রাধারাণী কৈ ? রা। ভোজনের পর সে কথা বলিব । দে। মনে দুঃখ থাকিলে ভোজনে তৃপ্তি হয় না। রা। রাধারাণীর জন্য এত দুঃখ ? কেন ? দে। তা জানি না, বড় দুঃখ–আট বৎসরের ছঃখ, তাই জানি । র। হঠাৎ রাধারাণীর পরিচয় দিতে আমার কিছু সঙ্কোচ হইতেছে। আপনি রাধারাণীকে পাইলে কি করিবেন ? দে। কি আর করিব ? একবার দেখিব। রা। একবার দেখিবার জন্য এই আট বৎসর এত কাতর ? দে। রকম রকমের মানুষ থাকে । - রা। আচ্ছ, আমি ভোজনের পরে আপনাকে আপনার রাধারাণী দেখাইব। ঐ বড় আয়না দেখিতেছেন ; উহার ভিতর দেখাইব। চাক্ষুষ দেখিতে পাইবেন না। দে। চাক্ষুষ সাক্ষাতেই বা কি আপত্তি ? আমি যে আট বৎসর কাতর। ভিতরে ভিতরে দুই জনে দুই জনকে বুঝিতেছেন কি না জানি না, কিন্তু কথা বার্তা এইরূপ হইতে লাগিল। রাধারাণী বলিতে লাগিল, “সে কথাটায় তত বিশ্বাস হয় না। আপনি আট বৎসর পূৰ্ব্বে তাহাকে দেখিয়াছিলেন, তখন তাঙ্গার বয়স কত ?” দে। এগার হইবে । রা। এগার বৎসরের বালিকার উপর এত অল্পরাগ ? দে। হয় না কি ? রা। কখনও শুনি নাই । দে। তবে মনে করুন কৌতুহল ! র। সে আবাব কি ? দে। শুধুই দেখিবার ইচ্ছা । রা। তা, দেখাইব, ঐ বড় আয়নার ভিতর। আপনি বাহিরে থাকিবেন। দে। কেন, সম্মুখ সাক্ষাতে আপত্তি কি ?