পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (সপ্তম সম্ভার).djvu/২৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ অপেক্ষ সে কম জানিত না, তবুও সৰ্ব্ব প্রকার দৈবাতের ভয়ে অত্যন্ত ব্যথায় স্থানটাকে আগলাইয়া সমস্ত চিত্ত যেমন ছ'শিয়ার হইয়া থাকে, তেমনি করিয়াই তাহার সকল ইঞ্জিয় বাহিরের দরজায় পাহারা দিয়া বসিয়া রহিল। এমনি করিয়া সকাল গেল, দুপুর গেল, সন্ধ্যা গেল। রাত্রে আর তাহার আগমনের সম্ভাবনা নাই জানিয়া নিরুদ্বিগ্ন হইয়া এইবার সে শয্যা আশ্রয় করিল। পাশের টপয়ে শূন্ত ফুলদানী চাপা দেওয়া কোথাকার এক কবিরাজী ঔষধালয়ের স্ববৃহৎ তালিকাপুস্তক ছিল, টানিয়া লইয়া তাহারই পাতার মধ্যে প্রাপ্ত চোখ দুটি মেলিয়া হঠাৎ এক সময়ে সে নিজের দুঃখ ভুলিয়া কোন এক শ্ৰীমন্মহারাজাধিরাজের রোগশান্তি হইতে আরম্ভ করিয়া বামুনঘাটি মাইনর স্কুলের তৃতীয় শিক্ষকের প্লীহা যত্বং আরোগ্য হওয়ার বিবরণ পড়িতে পড়িতে ঘুমাইয়া পড়িল । 8史 বেয়ারা বলিয়াছিল, বাবু ফিরবেন পরশু কিংবা তরুণ্ড কিংবা তাহার পরের দিন নিশ্চয় । কিন্তু এই তাহার পরের দিনের নিশ্চয় তাকে সমস্তদিন ধরিয়া পরীক্ষা করিবার মত শক্তি আর অচলার ছিল না। এই তিনদিনের মধ্যে রামবাবু একদিনও আসেন নাই । তাহার আসাটাকে সে সৰ্ব্বাস্তঃকরণে ভয় করিয়াছে, অথচ এই নাআসার নিহিত অর্থকে কল্পনা করিয়াও তাহার দেহ কাঠ হইয়া গিয়াছে। তিনি অস্বস্থ ছিলেন, এবং ইতিমধ্যে পীড়া যে বাড়িতেও পারে, এ-কথা তাহার মনেও উদয় হয় নাই । কেবল আজ সকালে ও-বাড়ির দরওয়ান আসিয়াছিগ, কিন্তু ভিতরে প্রবেশ না করিয়া বাহিরে পড়েঞ্জির নিকট হইতেই বিদায় লইয়া ফিরিয়া গিয়াছে । সে কেন আসিয়াছিল, কি খবর লইয়া গেল, কোন কথা অচলা ভয়ে কাহাকেও জিজ্ঞাসা পর্য্যস্ত করিতে পারিল না, কিন্তু তাহার পর হইতেই এই বাড়ি, ঘর দ্বার, এই সব লোকজন সমস্ত হইতে ছুটিয়া পলাইতে পারিলে বাচে, তাহার এমনি মনে হইতে লাগিল । বেয়ারাকে ডাকিয়া কহিল, রঘুবীর, তোমার বাড়ি ত এই দিকে, তুমি মাঝুলি গ্রামটা জানো ? সে কহিল, অনেককাল পূৰ্ব্বে একবার বরিয়াত গিয়েছিলাম মাইজী। কতদূর হবে বলতে পারো ? রঘুবীর এদেশের লোক হইলেও বহুদিন বাঙালীর সংস্রবে তাহার অনেকটা হিসাব-বোধ জন্মিয়াছিল, সে মনে মনে আন্দাজ করিয়া কহিল, ক্রোশ ছয়-সাতের कय नग्न भाइँछौ । ३90