পাতা:১৯০৫ সালে বাংলা.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

[ 8৭ ]

পারিলাম না বলিয়া বড়ই দুঃখিত হইয়াছি। অদ্যকার সভার কার্য্যে আমার আস্তরিক সহানুভূতি আছে। এই সকল লাঞ্ছিত মহাত্মাগণকে রাজদণ্ডে দণ্ডিত জ্ঞানে ঘৃণা করা বড়ই নীচতার পরিচায়ক। দেশের মঙ্গলের জন্য যাঁহারা রাজদণ্ড দেখিয়াও বিচলিত হন নাই, তাঁহাদিগকে ঘৃণা করা ঐতিহাসিক অথবা দার্শনিক কাহারও দৃষ্টিতে যুক্তিসঙ্গত নহে। রাজপুরুষগণ অনেক সময়ে ভ্রমে পতিত হইয়া প্রকৃত মহাত্মাদিগকে লাঞ্ছিত করেন সত্য, কিন্তু মহাত্মারা কখনও রাজপুরুষগণের ভ্রুকুটী ভঙ্গীতে বিচলিত হন না। যে যিশুখৃষ্টকে আজ সমগ্র ইউরোপ পূজা করিতেছেন বলিয়া প্রকাশ, সেই খৃষ্টও বিধিসঙ্গত বিচারালয়ে রাজদণ্ডে দণ্ডিত হইয়াছিলেন; ফ্রান্সের উদ্ধারকর্ত্রী জোয়ান অফ আর্ককে রাজপুরুষগণ রাজ বিধানের দোহাই দিয়া দগ্ধ করিয়াছিল; মার্টিন লুথার, গ্যালিলিও এবং আমাদের সমকালে বহু সংখ্যক নন্‌কনফাৰ্মিষ্ট মন্ত্রী কারাদণ্ড ভোগ করিয়াছেন। যে সকল মহাত্মা সমগ্র পৃথিবীর নিকট সপ্রমাণ করিয়াছেন যে, বাঙ্গালী কেবল বাক্যবীর নহেন, কর্ম্মবীর, তাঁহারাও দেশের কল্যাণের জন্য সকল প্রকার উৎপীড়ন সহ্য করিতে পারেন, সেই সকল মহাত্মা বাস্তবিকই আমদের আস্তরিক ধন্যবাদের পাত্র। অদ্যকার সভাতে আমরা যাহা উপহার জিতেছি, তাহাই তাঁহাদের চরম পুরস্কার নহে; দেশের সকলেই যে তাঁহাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করিতে চেষ্টা করিবে, ইহাই তাঁহাদের প্রকৃত পুরস্কার। যিনি দুর্ব্বল ও বলবান্‌কে সমদৃষ্টিতে দেখিয়া সমান