পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/২৪৫: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
TarunnoBot (আলোচনা | অবদান) Text from Google OCR |
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা |
(কোনও পার্থক্য নেই)
|
২১:৫১, ১০ জুলাই ২০১৮ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
সতী হরিশ কহিল, পাগল ! উম কহিল, পাগল কেন ? আমাদের দেশে ত পুরুষের বহু-বিবাহ ছিল। হরিশ কহিল, তখন আমরা বর্বর ছিলাম। উমা জিদ করিয়া বলিল, বৰ্ব্বর কিসের ? তোমার দুঃখ আর কেউ না জানে আমি ত জানি। সমস্ত জীবনটা কি এমনিই ব্যর্থ হয়েই যাবে ? হরিশ বলিল, উপায় কি বোন ! স্ত্রী ত্যাগ করে আবার বিয়ে করার ব্যবস্থা পুরুষের আছে জানি, কিন্তু মেয়েদের ত নেই। তোর বৌদিরও যদি এ-পথ খোলা থাকত তোর কথায় রাজি হতাম উমা । তুমি কি যে বল দাদা ! বলিয়া উমা রাগ করিয়া চলিয়া গেল। হরিশ চুপ করিয়া একাকী বসিয়া রহিল। তাহার উপায়হীন অন্ধকার চিত্ততল হইতে কেবল একটি কথাই বারংবার উখিত হইতে লাগিল, পথ নাই ! পথ নাই ! এই আনন্দহীন জীবনে দুঃখই ধ্রুব হইয়া রহিল । তাহার বসিবার ঘরের মধ্যে তখন সন্ধ্যার ছায়া গাঢ়তর হইয়া আসিতেছিল, হঠাৎ তাহার কানে গেল পাশের বাড়ির দরজায় দাড়াইয়া বৈষ্ণব "ভিখারীর দল কীৰ্ত্তনের স্বরে দূতীর বিলাপ গাহিতেছে। দূতী মথুরায় আসিয়া ব্ৰজনাথের হৃদয়হীন নিষ্ঠুরতার কাহিনী বিনাইয়া বিনাইয়া নালিশ করিতেছে । সেকালে ও-অভিযোগের কিরূপ উত্তর দূতীর মিলিয়াছিল হরিশ জানিত না, কিন্তু এখানে সে ব্রজনাথের পক্ষে বিনা পয়সার উকিল দাড়াইয়া তর্কের উপর তর্ক জুড়িয়া মনে মনে বলিতে লাগিল, ওগো দূতী, নারীর একনিষ্ঠ প্রেম খুব ভাল জিনিস, সংসারে তার তুলনা নেই। কিন্তু তুমি ত সব কথা বুঝবে না-বললেও না ! কিন্তু আমি জানি ব্ৰজনাথ কিসের ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন এবং একশ’ বছরের মধ্যে আর ও-মুখে হননি। কংস-টংস সব মিছে কথা। আসল কথা শ্রীরাধার ঐ একনিষ্ঠ প্রেম। একটু থামিয়া বলিতে লাগিল, তবু ত তখনকার কালে ঢের স্ববিধে ছিল, মথুরায় লুকিয়ে থাকা চলত। কিন্তু এ-কাল ঢের কঠিন ! না আছে পালাবার জায়গা, না আছে মুখ দেখাবার স্থান। এখন ভুক্তভোগী ব্ৰজনাথ দয়া করে অধীনকে একটু শীঘ্ৰ পায়ে স্থান দিলেই বাচি ।
- や●