পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/১১৭: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিসংকলন থেকে
TarunnoBot (আলোচনা | অবদান)
Text from Google OCR
 
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
 
(কোনও পার্থক্য নেই)

২২:০১, ১০ জুলাই ২০১৮ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেনা-পাওনা এ-সকল তাহার প্রতিদিনের নিয়ম ; তাই প্রতিদিনের মত আজও তাহার মনের মধ্যে অসমাপ্ত কৰ্ম্মের তাগিদ উঠতে লাগিল, কিন্তু প দুটা কোনমতেই আজ খাড়া হইতে চাহিল না ; এবং যে দরজা উন্মুক্ত রহিল, উঠি উঠি করিয়াও তাহাকে সে বন্ধ না করিয়া তেমনি জড়ের মত স্থির হইয়া প্রদীপের সম্মুখে বসিয়া রহিল । সে সাগরের কথা ভাবিতেছিল। মন্দিরের অনতিদূরবর্তী ভূমিজ পল্লীস্থ এই দুঃস্থ ও দুরন্ত লোকগুলিকে সে শিশুকাল হইতেই ভালবাসিত এবং বড় হইয়া ইহাদের দুঃখ-দুর্দশার চিহ্ন যতই বেশি করিয়া তাহার চোখে পড়িতে লাগিল ততই স্নেহ তাহার সস্তানের প্রতি মাতৃস্নেহের ন্যায় দৃঢ় ও গভীর হইয়া উঠিতে লাগিল । সে দেখিল, চণ্ডীগডের ইহারাই একপ্রকার আদিম অধিবাসী, এবং একদিন সকলেই ইহারা গৃহস্থ কৃষক ছিল ; কিন্তু এখন অধিকাংশই ভূমিহীন—পরের ক্ষেতে মজুরী করিয়া বহু দুঃখে দিনপাত করে । সমস্ত জমিজমা হয় জনাৰ্দ্দন, না হয় জমিদারের কৰ্ম্মচারী স্বনামে বেনামে গিলিয়া খাইয়াছে। ভূতপূৰ্ব্ব ভৈরবীদের আমলে অনেক জমি মন্দিরের নিজ জোতে ছিল, তাহাদের যথেচ্ছামত সেগুলি প্রতি বৎসর ভাগে বিলি হইত, এবং এই উপলক্ষ্যে প্রজায় প্রজায় দাঙ্গা-হাঙ্গামার অবধি থাকিতনা। অথচ লাভ কিছুই ছিল না ; তত্ত্বাবধান ও বন্দোবস্তের অভাবে প্রাপ্য অংশের কিছু-বা প্রজারা লুটিয়া খাইত, এবং অবশিষ্ট আদায় যদি বা হইত অপব্যয়েই নিঃশেষ হইত। এই সকল ভূমিই সে ভূমিহীন ভূমিজ প্রজাদিগকে বছর ছয়-সাত পূৰ্ব্বে, ফকিরসাহেবের নির্দেশমত নির্দিষ্ট হারে বন্দোবস্ত করিয়া দেয় । জনাৰ্দ্দন রায় ও এককড়ি নদীর সহিত তাহার বিবাদের স্বত্রপাতও তখন হইতে । এবং সেই কলহই পরবর্তীকালে নানা অজুহাতে নানা তুচ্ছ কাজে আজ এই আকারে আসিয়া দাড়াইয়াছে। সাগর ও হরিহর সর্দার তথন জেল খাটিতেছিল । খালাস পাইয়া তাহারা মন্দিরে ষোড়শীর কাছে আসিয়া একদিন হাত জোড় করিয়া দাড়াইল । কহিল, মা, আমরা খুড়ো-ভাইপোয়েই কি কেবল কুল্‌কিনারা পাবো না, শুধু ভেসে ভেসে বেড়াব ? ষোড়শী রাগ করিয়া কহিল, তোরা ভাসতে যাবি কেন হরিহর—জেলের অমন সৰ ৰাড়িঘর হয়েচে তবে কিসের জন্যে ? সাগর নিঃশবে মুখ ফিরাইয়া মাথা উচু করিয়া রহিল ; কিন্তু বুড়ো হরিহর তেমনি জোড়-হাতে কহিল, মা, আমরা তোমার কুপুত্র বলে তুমিও কি কুমাতা হবে ? আমাদেরও একটা পথ করে দাও। ষোড়শী একটু নরম হইয়া কহিল, তোমার কথাগুলি ত ভাল হরিহর, তা ছাড়া ভূমি বুড়ো হয়েও গেছ, কিন্তু তোমার ভাইপোটি ত অহঙ্কারে মুখ ফিরিয়ে রইল, রোবটুকু পৰ্যন্ড স্বীকার করলে না-ও কি কখনো শাস্ত হতে পারবে ? ነቅ ወ ፩ው