পাতা:পঞ্চভূত - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮০: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিসংকলন থেকে
Shahriar Kabir Pavel (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
+
বৈধকরণ

২২:২৮, ৩ জুন ২০১৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।



অখন্ডতা


 দীপ্তি কহিল, ‘সত্য কথা বলিতেছি, আমার তো মনে হয়, আজকাল প্রকৃতির স্তব লইয়া তোমরা সকলে কিছু বাড়াবাড়ি আরম্ভ করিয়াছে।’

 আমি কহিলাম, ‘দেবী, আর কাহারও স্তব বুঝি তোমাদের গায়ে সহে না?’

 দীপ্তি কহিল, ‘যখন স্তব ছাড়া আর বেশি কিছু পাওয়া যায় না তখন ওটার অপব্যয় দেখিতে পারি না।’

 সমীর অত্যন্ত বিনম্রমনোহর হাস্যে গ্রীবা আনমিত করিয়া কহিল, ‘ভগবতী, প্রকৃতির স্তব এবং তোমাদের স্তবে বড়ো একটা প্রভেদ নাই। ইহা বোধ হয় লক্ষ্য করিয়া দেখিয়া থাকিবে, যাহারা প্রকৃতির স্তবগান রচনা করিয়া থাকে তাহারা তোমাদেরই মন্দিরের প্রধান পূজারি।’

 দীপ্তি অভিমানভরে কহিল, ‘অর্থাৎ যাহারা জড়ের উপাসনা করে তাহারাই আমাদের ভক্ত।’

 সমীর কহিল, ‘এত বড়ো ভুলটা বুঝিলে, কাজেই একটা সুদীর্ঘ কৈফিয়ত দিতে হয়। আমাদের ভূতসভার বর্তমান সভাপতি শ্রদ্ধাস্পদ শ্রীযুক্ত ভূতনাথবাবু তাঁর ডায়ারিতে মন-নামক একটা দুরন্ত পদার্থের উপদ্রবের কথা বর্ণনা করিয়া যে একটি প্রবন্ধ লিথিয়াছেন, সে তোমরা সকলেই পাঠ করিয়াছ। আমি তাহার নীচেই গুটিকতক কথা লিখিয়া রাখিয়াছি, যদি সভ্যগণ অনুমতি করেন তবে পাঠ করি— আমার মনের ভাবটা তাহাতে পরিষ্কার হইবে।’

 ক্ষিতি করজোড়ে কহিল, ‘দেখো ভাই সমীরণ, লেখক এবং পাঠকে যে সম্পর্ক সেইটেই স্বাভাবিক সম্পর্ক— তুমি ইচ্ছা করিয়া লিখিলে, আমি ইচ্ছা করিয়া পড়িলাম, কোনো পক্ষে কিছু বলিবার রহিল না। যেন খাপের সহিত তরবারি মিলিয়া গেল। কিন্তু তরবারি যদি অনিচ্ছুক

৭০