পাতা:জাপানে-পারস্যে-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৭: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিসংকলন থেকে
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
Mouryan (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{RunningHeader||জাপানে-পারস্যে|৯৭}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{gap}}থেকে আমরা যেটুকু পাই, তার বেশি আমাদের পক্ষে দুর্লভ। কিন্তু
জাপানে وه
য়ুরােপীয় শিক্ষা আমাদের দেশে যদি সম্পূর্ণ সুগম হত, তাহলে কোনো
থেকে আমরা যেটুকু পাই, তার বেশি আমাদের পক্ষে দুর্লভ। কিন্তু যুরোপীয় শিক্ষা আমাদের দেশে যদি সম্পূর্ণ সুগম হত, তাহলে কোনে সন্দেহ নেই, বাঙালি সকল দিক থেকেই তা সম্পূর্ণ আয়ত্ত করত। আজ নানা দিক থেকে বিদ্যাশিক্ষা আমাদের পক্ষে ক্রমশই দুমূল্য হয়ে উঠছে— তবু বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকীর্ণ প্রবেশদ্বারে বাঙালির ছেলে প্রতিদিন মাথ৷ খোড়াখুড়ি করে মরছে। বস্তুত ভারতের অন্য সকল প্রদেশের চেয়ে বাংলাদেশে যে-একটা অসন্তোষের লক্ষণ অত্যন্ত প্রবল দেখা যায়, তার একমাত্র কারণ আমাদের প্রতিহত গতি । যা-কিছু ইংরেজি, তার দিকে বাঙালির উদ্বোধিত চিত্ত একান্ত প্রবলবেগে ছুটেছিল ; ইংরেজের অত্যস্ত কাছে যাবার জন্যে আমরা প্রস্তুত হয়েছিলুম—এ সম্বন্ধে সকল রকম সংস্কারের বাধা লঙ্ঘন করবার জন্য বাঙালিই সর্বপ্রথমে উদ্যত হয়ে উঠেছিল। কিন্তু এইখানে ইংরেজের কাছেই যখন বাধা পেল, তখন বাঙালির মনে যে প্রচণ্ড অভিমান জেগে উঠল—সেটা হচ্ছে তার অনুরাগেরই বিকার । ©
সন্দেহ নেই, বাঙালি সকল দিক থেকেই তা সম্পূর্ণ আয়ত্ত করত। আজ
এই অভিমানই আজ নবযুগের শিক্ষাকে গ্রহণ করবার পক্ষে বাঙালির মনে সকলের চেয়ে বড়ো অন্তরায় হয়ে উঠেছে । আজ আমরা যে সকল কুটতর্ক ও মিথ্যা যুক্তি দ্বারা পশ্চিমের প্রভাবকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করবার চেষ্টা করছি, সেটা আমাদের স্বাভাবিক নয়। এইজন্যই সেটা এমন সুতীব্র—সেটা ব্যাধির প্রকোপের মতো পীড়ার দ্বারা এমন করে আমাদের
নানা দিক থেকে বিদ্যাশিক্ষা আমাদের পক্ষে ক্রমশই দুর্মূল্য হয়ে উঠছে
তবু, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকীর্ণ প্রবেশদ্বারে বাঙালির ছেলে প্রতিদিন মাথা
খোঁড়াখুঁড়ি করে মরছে। বস্তুত ভারতের অন্য সকল প্রদেশের চেয়ে
বাংলাদেশে যে-একটা অসন্তোষের লক্ষণ অতান্ত প্রবল দেখা যায়, তার
একমাত্র কারণ আমাদের প্রতিহত গতি। যা-কিছু ইংরেজি, তার দিকে
বাঙালির উদ্বোধিত চিত্ত একান্ত প্রবলবেগে ছুটেছিল ; ইংরেজের অত্যন্ত
কাছে যাবার জন্যে আমরা প্রস্তুত হয়েছিলুম—এ সম্বন্ধে সকল রকম
সংস্কারের বাধা লঙ্ঘন করবার জন্য বাঙালিই সর্বপ্রথমে উদ্যত হয়ে
উঠেছিল। কিন্তু এইখানে ইংরেজের কাছেই যখন বাধা পেল, তখন
বাঙালির মনে যে প্রচণ্ড অভিমান জেগে উঠল—সেটা হচ্ছে তার।
অনুরাগেরই বিকার।

{{gap}}এই অভিমানই আজ নবযুগের শিক্ষাকে গ্রহণ করবার পক্ষে বাঙালির
মনে সকলের চেয়ে বড়ো অন্তরায় হয়ে উঠেছে। আজ আমরা যে সকল
কূটতর্ক ও মিথ্যা যুক্তি দ্বারা পশ্চিমের প্রভাবকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করবার
চেষ্টা করছি, সেটা আমাদের স্বাভাবিক নয়। এইজন্যই সেটা এমন
সুতীব্র—সেটা ব্যাধির প্রকোপের মতাে পীড়ার দ্বারা এমন করে আমাদের
সচেতন করে তুলেছে।
সচেতন করে তুলেছে।

বাঙালির মনের এই প্রবল বিরোধের মধ্যেও তার চলন-ধর্মই প্রকাশ পায় । কিন্তু বিরোধ কখনো কিছু স্বষ্টি করতে পারে না। বিরোধে দৃষ্টি কলুষিত ও শক্তি বিকৃত হয়ে যায়। যত বড়ো বেদনাই আমাদের মনে থাক, এ-কথা আমাদের ভুললে চলবে না যে, পূর্ব ও পশ্চিমের
{{gap}}বাঙালির মনের এই প্রবল বিরােধের মধ্যেও তার চলন-ধর্মই প্রকাশ
পায় । কিন্তু বিরােধ কখনাে কিছু সৃষ্টি করতে পারে না। বিরােধে
দৃষ্টি কলুষিত ও শক্তি বিকৃত হয়ে যায়। যত বড়ো বেদনাই আমাদের
মনে থাক, এ-কথা আমাদের ভুললে চলবে না যে, পূর্ব ও পশ্চিমের

১৩:০৯, ১৭ জুলাই ২০১৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জাপানে-পারস্যে
৯৭

 থেকে আমরা যেটুকু পাই, তার বেশি আমাদের পক্ষে দুর্লভ। কিন্তু য়ুরােপীয় শিক্ষা আমাদের দেশে যদি সম্পূর্ণ সুগম হত, তাহলে কোনো সন্দেহ নেই, বাঙালি সকল দিক থেকেই তা সম্পূর্ণ আয়ত্ত করত। আজ নানা দিক থেকে বিদ্যাশিক্ষা আমাদের পক্ষে ক্রমশই দুর্মূল্য হয়ে উঠছে তবু, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকীর্ণ প্রবেশদ্বারে বাঙালির ছেলে প্রতিদিন মাথা খোঁড়াখুঁড়ি করে মরছে। বস্তুত ভারতের অন্য সকল প্রদেশের চেয়ে বাংলাদেশে যে-একটা অসন্তোষের লক্ষণ অতান্ত প্রবল দেখা যায়, তার একমাত্র কারণ আমাদের প্রতিহত গতি। যা-কিছু ইংরেজি, তার দিকে বাঙালির উদ্বোধিত চিত্ত একান্ত প্রবলবেগে ছুটেছিল ; ইংরেজের অত্যন্ত কাছে যাবার জন্যে আমরা প্রস্তুত হয়েছিলুম—এ সম্বন্ধে সকল রকম সংস্কারের বাধা লঙ্ঘন করবার জন্য বাঙালিই সর্বপ্রথমে উদ্যত হয়ে উঠেছিল। কিন্তু এইখানে ইংরেজের কাছেই যখন বাধা পেল, তখন বাঙালির মনে যে প্রচণ্ড অভিমান জেগে উঠল—সেটা হচ্ছে তার। অনুরাগেরই বিকার।

 এই অভিমানই আজ নবযুগের শিক্ষাকে গ্রহণ করবার পক্ষে বাঙালির মনে সকলের চেয়ে বড়ো অন্তরায় হয়ে উঠেছে। আজ আমরা যে সকল কূটতর্ক ও মিথ্যা যুক্তি দ্বারা পশ্চিমের প্রভাবকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করবার চেষ্টা করছি, সেটা আমাদের স্বাভাবিক নয়। এইজন্যই সেটা এমন সুতীব্র—সেটা ব্যাধির প্রকোপের মতাে পীড়ার দ্বারা এমন করে আমাদের সচেতন করে তুলেছে।

 বাঙালির মনের এই প্রবল বিরােধের মধ্যেও তার চলন-ধর্মই প্রকাশ পায় । কিন্তু বিরােধ কখনাে কিছু সৃষ্টি করতে পারে না। বিরােধে দৃষ্টি কলুষিত ও শক্তি বিকৃত হয়ে যায়। যত বড়ো বেদনাই আমাদের মনে থাক, এ-কথা আমাদের ভুললে চলবে না যে, পূর্ব ও পশ্চিমের