পাতা:মুর্শিদাবাদ কাহিনী.djvu/৩৩৬: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিসংকলন থেকে
Nasirkhan (আলোচনা | অবদান)
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান)
Content fix.
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
দোষী স্থির হন।<ref>Calcutta Review, 1874. Kandi Family.</ref> পরে অনেক অর্থব্যয় করিয়া মুক্তিলাভ করেন। এই মােকর্দমায় রামচন্দ্র দোষী স্থির হইলে, তাহার নিকট হইতে ৯ লক্ষ টাকার জামিন চাওয়া হয়। কিন্তু কলিকাতাদুর্গের অধ্যক্ষসাহেবের সহিত তাহার পরিচয় থাকায় তিনি রামচন্দ্রকে জামিনে খালাস করেন।<ref>চাদরানী ২০২ পৃ:। যাহারা রামচন্দ্রের বিস্তৃত বিবরণ জানিতে চাহেন, তাহাদিগকে চাদরানী পাঠ করিতে অনুরােধ করি।</ref> রামচন্দ্রের সাধুচরিত্রের কথায় বিশ্বাসস্থাপন করতে হইলে, গােলাম আশরফের আবেদনপত্রে অবিশ্বাস করা যায় না। বাস্তবিক রামচন্দ্র তৎকালে বিপন্ন লােকদিগের উদ্ধারের জন্য অত্যন্ত চেষ্টা করিতেন। সুতরাং দেওয়ানজী ও তৎপুত্রের সহিত গােলাম আশরফের যে কোনই সম্পর্ক ছিল না, তাহা একেবারে বলা যায় না। তবে ভাগ্য যাহাদের সহায় হয়, সত্য ঘটনা হইলেও তাহারা কোন স্থলে লাঞ্ছিত হয় না।
দোষী স্থির হন।<ref>Calcutta Review, 1874. Kandi Family.</ref> পরে অনেক অর্থব্যয় করিয়া মুক্তিলাভ করেন। এই মােকর্দমায় রামচন্দ্র দোষী স্থির হইলে, তাহার নিকট হইতে ৯ লক্ষ টাকার জামিন চাওয়া হয়। কিন্তু কলিকাতাদুর্গের অধ্যক্ষসাহেবের সহিত তাহার পরিচয় থাকায় তিনি রামচন্দ্রকে জামিনে খালাস করেন।<ref>চাঁদরানী ২০২ পৃ:। যাঁহারা রামচন্দ্রের বিস্তৃত বিবরণ জানিতে চাহেন, তাহাদিগকে চাঁদরানী পাঠ করিতে অনুরােধ করি।</ref> রামচন্দ্রের সাধুচরিত্রের কথায় বিশ্বাসস্থাপন করতে হইলে, গােলাম আশরফের আবেদনপত্রে অবিশ্বাস করা যায় না। বাস্তবিক রামচন্দ্র তৎকালে বিপন্ন লােকদিগের উদ্ধারের জন্য অত্যন্ত চেষ্টা করিতেন। সুতরাং দেওয়ানজী ও তৎপুত্রের সহিত গােলাম আশরফের যে কোনই সম্পর্ক ছিল না, তাহা একেবারে বলা যায় না। তবে ভাগ্য যাহাদের সহায় হয়, সত্য ঘটনা হইলেও তাঁহারা কোন স্থলে লাঞ্ছিত হয় না।


{{gap}}এইরূপ প্রায় সর্বস্থলেই হেস্টিংস গঙ্গাগােবিন্দকে সমস্ত বিপদ হইতে উদ্ধার করিয়াছেন। আমরা বারংবার বলিয়াছি যে, যদিও দুই এক স্থলে হেস্টিংস তাহার উপর কৃত্রিম ক্রোধ প্রকাশ করিয়াছেন, এবং তাহার বিশ্বস্ততার উপর সন্দিহান হইয়াছিলেন, তথাপি তাহার উপর আন্তরিক অসন্তুষ্ট ছিলেন না। তিনি ভারতবর্ষপরিত্যাগের পূর্বে কাউন্সিলের নিকট গঙ্গাগােবিন্দের কার্যের পুরস্কারের জন্য অনুরােধ করিয়া যান। হেস্টিংস ১৭৮৫ খ্রীঃ অব্দের ১৬ই ফেব্রুয়ারি কাউন্সিলের নিকট অনুরােধ করেন যে, গঙ্গাগােবিন্দ সিংহ বাল্যকাল হইতে কোম্পানীর কার্য করিয়াছে এবং তাহার অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার জন্য তাহাকে ১১ বৎসর ব্যাপিয়া কমিটির দেওয়ানী পদে নিযুক্ত রাখা হইয়াছে। সে যেরূপ বিশ্বস্ততা, তৎপরতা ও দক্ষতার সহিত কোম্পানীর রাজবিভাগের কার্য নির্বাহ করিয়াছে, তাহাকে তজ্জন্য বিশেষরূপে পুরস্কৃত করা উচিত। এক্ষণে সে ভিন্ন ভিন্ন জেলায় তাহার ট্রস্টী রাধাগােবিন্দ ঘোেষ ও ব্রজকিশাের ঘােষের নামে কতকগুলি জমাজমি চাহিতেছে। গঙ্গাগােবিন্দ ২,৩৮,০৬১৮৫ খাজনায় সেই সমস্ত জমি বন্দোবস্ত করিতে চাহে। অতএব তাহার প্রার্থনা পূরণ করিয়া তাহার কার্যের পুরস্কার প্রদান করা হউক।”<ref>Evidence taken in W. H's Trial, p. 1191.</ref>
{{gap}}এইরূপ প্রায় সর্বস্থলেই হেস্টিংস গঙ্গাগােবিন্দকে সমস্ত বিপদ হইতে উদ্ধার করিয়াছেন। আমরা বারংবার বলিয়াছি যে, যদিও দুই এক স্থলে হেস্টিংস তাহার উপর কৃত্রিম ক্রোধ প্রকাশ করিয়াছেন, এবং তাহার বিশ্বস্ততার উপর সন্দিহান হইয়াছিলেন, তথাপি তাহার উপর আন্তরিক অসন্তুষ্ট ছিলেন না। তিনি ভারতবর্ষপরিত্যাগের পূর্বে কাউন্সিলের নিকট গঙ্গাগােবিন্দের কার্যের পুরস্কারের জন্য অনুরােধ করিয়া যান। হেস্টিংস ১৭৮৫ খ্রীঃ অব্দের ১৬ই ফেব্রুয়ারি কাউন্সিলের নিকট অনুরােধ করেন যে, গঙ্গাগােবিন্দ সিংহ বাল্যকাল হইতে কোম্পানীর কার্য করিয়াছে এবং তাহার অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার জন্য তাহাকে ১১ বৎসর ব্যাপিয়া কমিটির দেওয়ানী পদে নিযুক্ত রাখা হইয়াছে। সে যেরূপ বিশ্বস্ততা, তৎপরতা ও দক্ষতার সহিত কোম্পানীর রাজবিভাগের কার্য নির্বাহ করিয়াছে, তাহাকে তজ্জন্য বিশেষরূপে পুরস্কৃত করা উচিত। এক্ষণে সে ভিন্ন ভিন্ন জেলায় তাহার ট্রস্টী রাধাগােবিন্দ ঘোেষ ও ব্রজকিশাের ঘােষের নামে কতকগুলি জমাজমি চাহিতেছে। গঙ্গাগােবিন্দ ২,৩৮,০৬১৮৫ খাজনায় সেই সমস্ত জমি বন্দোবস্ত করিতে চাহে। অতএব তাহার প্রার্থনা পূরণ করিয়া তাহার কার্যের পুরস্কার প্রদান করা হউক।"<ref>Evidence taken in W. H's Trial, p. 1191.</ref>


{{gap}}হেস্টিংসের কৃপায় গঙ্গাগােবিন্দ বাঙ্গলায় অনেক স্থানের জমিদারী লাভ করিয়। ছিলেন। যে দিনাজপুরের অপ্রাপ্তবয়স্ক রাজার তত্ত্বাবধানের ভার তাহার হস্তে ন্যস্ত হইয়াছিল, তিনি তাহার সর্বনাশ করিতে তুটি করেন নাই ; তাহাকে জমিদারী দেওয়ার কালে তাহার নিকট হইতে যে ৪ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়, তদ্ব্যতীত তাহার জমিদারীর কত অংশ গঙ্গগগাবিন্দ গ্রাস করিয়া বসেন। তিনি নাবালক রাধানাথকে ভুলাইয়া তাহার নিকট হইতে সালবাড়ী পরগণা অল্পমূল্যে ক্রয় করিয়া, তাহার কোন আত্মীয়ের সম্মতি লিখাইয়া লন। কিন্তু রাজার পক্ষীয় অন্যান্য লােকেরা নাবালকের
{{gap}}হেস্টিংসের কৃপায় গঙ্গাগােবিন্দ বাঙ্গলায় অনেক স্থানের জমিদারী লাভ করিয়। ছিলেন। যে দিনাজপুরের অপ্রাপ্তবয়স্ক রাজার তত্ত্বাবধানের ভার তাহার হস্তে ন্যস্ত হইয়াছিল, তিনি তাহার সর্বনাশ করিতে তুটি করেন নাই; তাহাকে জমিদারী দেওয়ার কালে তাহার নিকট হইতে যে ৪ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়, তদ্ব্যতীত তাহার জমিদারীর কত অংশ গঙ্গগগাবিন্দ গ্রাস করিয়া বসেন। তিনি নাবালক রাধানাথকে ভুলাইয়া তাহার নিকট হইতে সালবাড়ী পরগণা অল্পমূল্যে ক্রয় করিয়া, তাহার কোন আত্মীয়ের সম্মতি লিখাইয়া লন। কিন্তু রাজার পক্ষীয় অন্যান্য লােকেরা নাবালকের

১৪:১৬, ৭ নভেম্বর ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৩০
মুর্শিদাবাদ-কাহিনী

দোষী স্থির হন।[১] পরে অনেক অর্থব্যয় করিয়া মুক্তিলাভ করেন। এই মােকর্দমায় রামচন্দ্র দোষী স্থির হইলে, তাহার নিকট হইতে ৯ লক্ষ টাকার জামিন চাওয়া হয়। কিন্তু কলিকাতাদুর্গের অধ্যক্ষসাহেবের সহিত তাহার পরিচয় থাকায় তিনি রামচন্দ্রকে জামিনে খালাস করেন।[২] রামচন্দ্রের সাধুচরিত্রের কথায় বিশ্বাসস্থাপন করতে হইলে, গােলাম আশরফের আবেদনপত্রে অবিশ্বাস করা যায় না। বাস্তবিক রামচন্দ্র তৎকালে বিপন্ন লােকদিগের উদ্ধারের জন্য অত্যন্ত চেষ্টা করিতেন। সুতরাং দেওয়ানজী ও তৎপুত্রের সহিত গােলাম আশরফের যে কোনই সম্পর্ক ছিল না, তাহা একেবারে বলা যায় না। তবে ভাগ্য যাহাদের সহায় হয়, সত্য ঘটনা হইলেও তাঁহারা কোন স্থলে লাঞ্ছিত হয় না।

 এইরূপ প্রায় সর্বস্থলেই হেস্টিংস গঙ্গাগােবিন্দকে সমস্ত বিপদ হইতে উদ্ধার করিয়াছেন। আমরা বারংবার বলিয়াছি যে, যদিও দুই এক স্থলে হেস্টিংস তাহার উপর কৃত্রিম ক্রোধ প্রকাশ করিয়াছেন, এবং তাহার বিশ্বস্ততার উপর সন্দিহান হইয়াছিলেন, তথাপি তাহার উপর আন্তরিক অসন্তুষ্ট ছিলেন না। তিনি ভারতবর্ষপরিত্যাগের পূর্বে কাউন্সিলের নিকট গঙ্গাগােবিন্দের কার্যের পুরস্কারের জন্য অনুরােধ করিয়া যান। হেস্টিংস ১৭৮৫ খ্রীঃ অব্দের ১৬ই ফেব্রুয়ারি কাউন্সিলের নিকট অনুরােধ করেন যে, গঙ্গাগােবিন্দ সিংহ বাল্যকাল হইতে কোম্পানীর কার্য করিয়াছে এবং তাহার অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার জন্য তাহাকে ১১ বৎসর ব্যাপিয়া কমিটির দেওয়ানী পদে নিযুক্ত রাখা হইয়াছে। সে যেরূপ বিশ্বস্ততা, তৎপরতা ও দক্ষতার সহিত কোম্পানীর রাজবিভাগের কার্য নির্বাহ করিয়াছে, তাহাকে তজ্জন্য বিশেষরূপে পুরস্কৃত করা উচিত। এক্ষণে সে ভিন্ন ভিন্ন জেলায় তাহার ট্রস্টী রাধাগােবিন্দ ঘোেষ ও ব্রজকিশাের ঘােষের নামে কতকগুলি জমাজমি চাহিতেছে। গঙ্গাগােবিন্দ ২,৩৮,০৬১৮৫ খাজনায় সেই সমস্ত জমি বন্দোবস্ত করিতে চাহে। অতএব তাহার প্রার্থনা পূরণ করিয়া তাহার কার্যের পুরস্কার প্রদান করা হউক।"[৩]

 হেস্টিংসের কৃপায় গঙ্গাগােবিন্দ বাঙ্গলায় অনেক স্থানের জমিদারী লাভ করিয়। ছিলেন। যে দিনাজপুরের অপ্রাপ্তবয়স্ক রাজার তত্ত্বাবধানের ভার তাহার হস্তে ন্যস্ত হইয়াছিল, তিনি তাহার সর্বনাশ করিতে তুটি করেন নাই; তাহাকে জমিদারী দেওয়ার কালে তাহার নিকট হইতে যে ৪ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়, তদ্ব্যতীত তাহার জমিদারীর কত অংশ গঙ্গগগাবিন্দ গ্রাস করিয়া বসেন। তিনি নাবালক রাধানাথকে ভুলাইয়া তাহার নিকট হইতে সালবাড়ী পরগণা অল্পমূল্যে ক্রয় করিয়া, তাহার কোন আত্মীয়ের সম্মতি লিখাইয়া লন। কিন্তু রাজার পক্ষীয় অন্যান্য লােকেরা নাবালকের

  1. Calcutta Review, 1874. Kandi Family.
  2. চাঁদরানী ২০২ পৃ:। যাঁহারা রামচন্দ্রের বিস্তৃত বিবরণ জানিতে চাহেন, তাহাদিগকে চাঁদরানী পাঠ করিতে অনুরােধ করি।
  3. Evidence taken in W. H's Trial, p. 1191.