পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১৯১: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিসংকলন থেকে
বট পরিষ্কার করছে, কোন সমস্যা?
বট পরিষ্কার করছে, কোন সমস্যা?
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
অর্দ্ধরাত্র সময়ে ভগবান্ ত্রিলোকনাথ দেবকীর গর্ভ হইতে আবির্ভূত হইলেন। তৎকালে দিক্ সকল প্রসন্ন হইল, গগনমণ্ডলে নির্ম্মল নক্ষত্রমণ্ডল উদিত হইল, গ্রামে নগরে নানা মঙ্গল বাদ্য হইতে লাগিল। নদীতে নির্ম্মল জল ও সরোবরে কমল, প্রফুল্ল হইল। বন উপবন প্রভৃতি মধুর মধুকরগীতে ও কোকিলকলকলে অমোদিত হইল এবং শীতল সুগন্ধি মন্দ মন্দ গন্ধবহ বহিতে লাগিল। সাধুগণের আশয় ও জলাশয় সুপ্রসন্ন হইল। দেবলোকে দুন্দুভিধ্বনি হইতে লাগিল। সিদ্ধ, চারণ, কিন্নর, গন্ধর্ব্বগণ গীতিস্তুতি করিতে লাগিল। বিদ্যাধরীগণ অপ্সরাদিগের সহিত নৃত্য করিতে লাগিল। দেব ও দেবর্ষিগণ হর্ষিতমনে পুষ্পবর্ষণ করিতে লাগিল। মেঘসকল মন্দ মন্দ গর্জ্জন করিতে লাগিল।”
অর্দ্ধরাত্র সময়ে ভগবান্ ত্রিলোকনাথ দেবকীর গর্ভ হইতে আবির্ভূত হইলেন। তৎকালে দিক্ সকল প্রসন্ন হইল, গগনমণ্ডলে নির্ম্মল নক্ষত্রমণ্ডল উদিত হইল, গ্রামে নগরে নানা মঙ্গল বাদ্য হইতে লাগিল। নদীতে নির্ম্মল জল ও সরোবরে কমল, প্রফুল্ল হইল। বন উপবন প্রভৃতি মধুর মধুকরগীতে ও কোকিলকলকলে অমোদিত হইল এবং শীতল সুগন্ধি মন্দ মন্দ গন্ধবহ বহিতে লাগিল। সাধুগণের আশয় ও জলাশয় সুপ্রসন্ন হইল। দেবলোকে দুন্দুভিধ্বনি হইতে লাগিল। সিদ্ধ, চারণ, কিন্নর, গন্ধর্ব্বগণ গীতিস্তুতি করিতে লাগিল। বিদ্যাধরীগণ অপ্সরাদিগের সহিত নৃত্য করিতে লাগিল। দেব ও দেবর্ষিগণ হর্ষিতমনে পুষ্পবর্ষণ করিতে লাগিল। মেঘসকল মন্দ মন্দ গর্জ্জন করিতে লাগিল।”


{{gap}}কেবল সংস্কৃত-ভাযাভিজ্ঞ পণ্ডিতের রচিত বাঙ্গালা ভাষায় এ পরিপাটী কি কম প্রশংসনীয়। সংস্কৃতে অভিজ্ঞ হইলেই যে এরূপ বাঙ্গালা ভাষা লিখিবার শক্তি হয়, এ কথা বলিতে পারিনা। রাজা রামমোহন রায়, রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র ও পাদরী কৃষ্ণ মোহন বন্দ্যোপাধ্যায় তো সংস্কৃত ভাষায় অল্প-বিস্তর অধিকার লাভ করিয়াছিলেন। তাঁহারা বাঙ্গালা গদ্য-সাহিত্যের পুষ্টিসাধন জন্য সামান্য প্রয়াস পান নাই। বাঙ্গালা ভাষার পুষ্টিসাধনকল্পে তাঁহারাও কম সহায় নহেন। সে জন্য তাঁহারা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ন্যায় চিরস্মরণীয় হইবার যোগ্যপাত্র, সন্দেহ নাই।<ref>বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পাঠ্যাবস্থায় ১৮৩৩ খৃষ্টাব্দের ২৭শে সেপ্টেম্বর রাজা
{{gap}}কেবল সংস্কৃত-ভাযাভিজ্ঞ পণ্ডিতের রচিত বাঙ্গালা ভাষায় এ পরিপাটী কি কম প্রশংসনীয়। সংস্কৃতে অভিজ্ঞ হইলেই যে এরূপ বাঙ্গালা ভাষা লিখিবার শক্তি হয়, এ কথা বলিতে পারিনা। রাজা রামমোহন রায়, রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র ও পাদরী কৃষ্ণ মোহন বন্দ্যোপাধ্যায় তো সংস্কৃত ভাষায় অল্প-বিস্তর অধিকার লাভ করিয়াছিলেন। তাঁহারা বাঙ্গালা গদ্য-সাহিত্যের পুষ্টিসাধন জন্য সামান্য প্রয়াস পান নাই। বাঙ্গালা ভাষার পুষ্টিসাধনকল্পে তাঁহারাও কম সহায় নহেন। সে জন্য তাঁহারা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ন্যায় চিরস্মরণীয় হইবার যোগ্যপাত্র, সন্দেহ নাই।<ref>বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পাঠ্যাবস্থায় ১৮৩৩ খৃষ্টাব্দের ২৭শে সেপ্টেম্বর রাজা রামমোহন রায় বিলাতে ব্রিষ্টলসহরে ৬১ বৎসর বয়সে মানবলীলা সংবরণ করেন। রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র ও পাদরী কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, বিদ্যাসাগরের সময়ে বাঙ্গালা সাহিত্যের প্রসারে প্রবৃত্ত ছিলেন। ইঁহারা উভয়ে ইংরেজীতে পারদর্শিতা লাভ করিয়াছিলেন, কিন্তু কৃষ্ণ বন্দ্য খৃষ্টান হইয়াছিলেন। ইঁহাদের বাঙ্গালা ভাষার হিতৈষণ প্রকৃতই প্রশংসার যোগ্য। ১৮৯৭ খৃষ্টাব্দে ৭০ বৎসর বয়সে রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র ও ১৮৮৪ খৃষ্টাব্দের ৮৫ বৎসর বসে কৃষ্ণ বন্দ্য মানবলীলা সংবরণ করেন। রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্রের সহিত বিদ্যাসাগর মহাশয়ের এক সময় অনেকটা ঘনিষ্ঠতা ছিল। “ওয়ার্ডস ইনষ্টিটিউশনের” কোন কার্য্যালোচনার পর উভয়ের সে ঘনিষ্ঠতা বিচ্ছিন্ন হয়। কৃষ্ণ বন্দ্যর সহিত মৌখিক আলাপ প্রীতিময় ছিল।
রামমোহন রায় বিলাতে ব্রিষ্টলসহরে ৬১ বৎসর বয়সে মানবলীলা সংবরণ
করেন। রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র ও পাদরী কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, বিদ্যাসাগরের
সময়ে বাঙ্গালা সাহিত্যের প্রসারে প্রবৃত্ত ছিলেন। ইঁহারা উভয়ে ইংরেজীতে পারদর্শিতা লাভ করিয়াছিলেন, কিন্তু কৃষ্ণ বন্দ্য খৃষ্টান হইয়াছিলেন।
ইঁহাদের বাঙ্গালা ভাষার হিতৈষণ প্রকৃতই প্রশংসার যোগ্য। ১৮৯৭ খৃষ্টাব্দে
৭০ বৎসর বয়সে রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র ও ১৮৮৪ খৃষ্টাব্দের ৮৫ বৎসর বসে
কৃষ্ণ বন্দ্য মানবলীলা সংবরণ করেন। রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্রের সহিত
বিদ্যাসাগর মহাশয়ের এক সময় অনেকটা ঘনিষ্ঠতা ছিল। “ওয়ার্ডস
ইনষ্টিটিউশনের” কোন কার্য্যালোচনার পর উভয়ের সে ঘনিষ্ঠতা বিচ্ছিন্ন হয়।
কৃষ্ণ বন্দ্যর সহিত মৌখিক আলাপ প্রীতিময় ছিল।
</ref>
</ref>
{{rule}}
{{rule}}

১৬:৩৪, ২২ অক্টোবর ২০২১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬২
বিদ্যাসাগর।

অর্দ্ধরাত্র সময়ে ভগবান্ ত্রিলোকনাথ দেবকীর গর্ভ হইতে আবির্ভূত হইলেন। তৎকালে দিক্ সকল প্রসন্ন হইল, গগনমণ্ডলে নির্ম্মল নক্ষত্রমণ্ডল উদিত হইল, গ্রামে নগরে নানা মঙ্গল বাদ্য হইতে লাগিল। নদীতে নির্ম্মল জল ও সরোবরে কমল, প্রফুল্ল হইল। বন উপবন প্রভৃতি মধুর মধুকরগীতে ও কোকিলকলকলে অমোদিত হইল এবং শীতল সুগন্ধি মন্দ মন্দ গন্ধবহ বহিতে লাগিল। সাধুগণের আশয় ও জলাশয় সুপ্রসন্ন হইল। দেবলোকে দুন্দুভিধ্বনি হইতে লাগিল। সিদ্ধ, চারণ, কিন্নর, গন্ধর্ব্বগণ গীতিস্তুতি করিতে লাগিল। বিদ্যাধরীগণ অপ্সরাদিগের সহিত নৃত্য করিতে লাগিল। দেব ও দেবর্ষিগণ হর্ষিতমনে পুষ্পবর্ষণ করিতে লাগিল। মেঘসকল মন্দ মন্দ গর্জ্জন করিতে লাগিল।”

 কেবল সংস্কৃত-ভাযাভিজ্ঞ পণ্ডিতের রচিত বাঙ্গালা ভাষায় এ পরিপাটী কি কম প্রশংসনীয়। সংস্কৃতে অভিজ্ঞ হইলেই যে এরূপ বাঙ্গালা ভাষা লিখিবার শক্তি হয়, এ কথা বলিতে পারিনা। রাজা রামমোহন রায়, রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র ও পাদরী কৃষ্ণ মোহন বন্দ্যোপাধ্যায় তো সংস্কৃত ভাষায় অল্প-বিস্তর অধিকার লাভ করিয়াছিলেন। তাঁহারা বাঙ্গালা গদ্য-সাহিত্যের পুষ্টিসাধন জন্য সামান্য প্রয়াস পান নাই। বাঙ্গালা ভাষার পুষ্টিসাধনকল্পে তাঁহারাও কম সহায় নহেন। সে জন্য তাঁহারা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ন্যায় চিরস্মরণীয় হইবার যোগ্যপাত্র, সন্দেহ নাই।[১]


  1. বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পাঠ্যাবস্থায় ১৮৩৩ খৃষ্টাব্দের ২৭শে সেপ্টেম্বর রাজা রামমোহন রায় বিলাতে ব্রিষ্টলসহরে ৬১ বৎসর বয়সে মানবলীলা সংবরণ করেন। রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র ও পাদরী কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, বিদ্যাসাগরের সময়ে বাঙ্গালা সাহিত্যের প্রসারে প্রবৃত্ত ছিলেন। ইঁহারা উভয়ে ইংরেজীতে পারদর্শিতা লাভ করিয়াছিলেন, কিন্তু কৃষ্ণ বন্দ্য খৃষ্টান হইয়াছিলেন। ইঁহাদের বাঙ্গালা ভাষার হিতৈষণ প্রকৃতই প্রশংসার যোগ্য। ১৮৯৭ খৃষ্টাব্দে ৭০ বৎসর বয়সে রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র ও ১৮৮৪ খৃষ্টাব্দের ৮৫ বৎসর বসে কৃষ্ণ বন্দ্য মানবলীলা সংবরণ করেন। রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্রের সহিত বিদ্যাসাগর মহাশয়ের এক সময় অনেকটা ঘনিষ্ঠতা ছিল। “ওয়ার্ডস ইনষ্টিটিউশনের” কোন কার্য্যালোচনার পর উভয়ের সে ঘনিষ্ঠতা বিচ্ছিন্ন হয়। কৃষ্ণ বন্দ্যর সহিত মৌখিক আলাপ প্রীতিময় ছিল।