পাতা:সুকুমার রায় রচনাবলী-প্রথম খণ্ড.djvu/৬১: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
Bodhisattwa (আলোচনা | অবদান) সম্পাদনা সারাংশ নেই |
Kaushik sur (আলোচনা | অবদান) |
||
পাতার অবস্থা | পাতার অবস্থা | ||
- | + | মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে | |
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে): | পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে): | ||
৩ নং লাইন: | ৩ নং লাইন: | ||
সিংহাসনে বস্ল রাজা বাজল কাঁসর ঘন্টা, |
সিংহাসনে বস্ল রাজা বাজল কাঁসর ঘন্টা, |
||
ছট্ফটিয়ে উঠল কেঁপে মন্ত্রীবুড়োর মনটা। |
ছট্ফটিয়ে উঠল কেঁপে মন্ত্রীবুড়োর মনটা। |
||
বললে রাজা, “মন্ত্রী |
বললে রাজা, “মন্ত্রী তোমার জামায় কেন গন্ধ?” |
||
মন্ত্রী বলে, “এসেন্স দিছি—গন্ধ |
মন্ত্রী বলে, “এসেন্স দিছি—গন্ধ তো নয় মন্দ!” |
||
রাজা বলেন, “মন্দ ভালো দেখুক শুঁকে বদ্যি,” |
রাজা বলেন, “মন্দ ভালো দেখুক শুঁকে বদ্যি,” |
||
বদ্যি বলে, “আমার নাকে বেজায় হল সর্দি।” |
বদ্যি বলে, “আমার নাকে বেজায় হল সর্দি।” |
||
রাজা হাঁকেন |
রাজা হাঁকেন, “বোলাও তবে—রাম নারায়ণ পাত্র।” |
||
পাত্র বলে, “নস্যি নিলাম এক্ষনি এইমাত্র— |
পাত্র বলে, “নস্যি নিলাম এক্ষনি এইমাত্র— |
||
নস্যি দিয়ে বন্ধ যে নাক গন্ধ কোথায় ঢুকবে?” |
নস্যি দিয়ে বন্ধ যে নাক গন্ধ কোথায় ঢুকবে?” |
||
রাজা বলেন, “কোটাল তবে এগিয়ে এস, |
রাজা বলেন, “কোটাল তবে এগিয়ে এস, শুঁকবে।” |
||
কোটাল বলে, “পান খেয়েছি মশলা তাহে কর্পূর, |
কোটাল বলে, “পান খেয়েছি মশলা তাহে কর্পূর, |
||
গন্ধে তারি |
গন্ধে তারি মুণ্ড আমার এক্কেবারে ভরপুর।” |
||
রাজা বলেন, “আসুক তবে শের পালোয়ান ভীমসিং,” |
রাজা বলেন, “আসুক তবে শের পালোয়ান ভীমসিং,” |
||
ভীম বলে |
ভীম বলে “আজ কচ্ছে আমার সমস্ত গা ঝিম্ ঝিম্। |
||
রাত্রে আমার বোখার হল বলছি হুজুর ঠিক বাৎ,” |
রাত্রে আমার বোখার হল বলছি হুজুর ঠিক বাৎ,” |
||
ব’লেই শুল রাজসভাতে চক্ষু বুজে চিৎপাত। |
ব’লেই শুল রাজসভাতে চক্ষু বুজে চিৎপাত। |
||
রাজার শালা |
রাজার শালা চন্দ্রকেতু তারেই ধ’রে শেষটা |
||
বল্ল রাজা, “তুমিই নাহয় কর না ভাই চেষ্টা।” |
বল্ল রাজা, “তুমিই নাহয় কর না ভাই চেষ্টা।” |
||
চন্দ্র বলেন, “মারতে চাও |
চন্দ্র বলেন, “মারতে চাও তো ডাকাও নাকো জল্লাদ, |
||
গন্ধ শুঁকে |
গন্ধ শুঁকে মরতে হবে এ আবার কি আহ্লাদ?” |
||
ছিল হাজির বৃদ্ধ নাজির বয়সটি তার নব্বই, |
ছিল হাজির বৃদ্ধ নাজির বয়সটি তার নব্বই, |
||
ভাবল মনে, “ভয় কেন আর একদিন তো মরবই—” |
ভাবল মনে, “ভয় কেন আর একদিন তো মরবই—” |
০৫:০২, ৯ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
গন্ধ বিচার
সিংহাসনে বস্ল রাজা বাজল কাঁসর ঘন্টা,
ছট্ফটিয়ে উঠল কেঁপে মন্ত্রীবুড়োর মনটা।
বললে রাজা, “মন্ত্রী তোমার জামায় কেন গন্ধ?”
মন্ত্রী বলে, “এসেন্স দিছি—গন্ধ তো নয় মন্দ!”
রাজা বলেন, “মন্দ ভালো দেখুক শুঁকে বদ্যি,”
বদ্যি বলে, “আমার নাকে বেজায় হল সর্দি।”
রাজা হাঁকেন, “বোলাও তবে—রাম নারায়ণ পাত্র।”
পাত্র বলে, “নস্যি নিলাম এক্ষনি এইমাত্র—
নস্যি দিয়ে বন্ধ যে নাক গন্ধ কোথায় ঢুকবে?”
রাজা বলেন, “কোটাল তবে এগিয়ে এস, শুঁকবে।”
কোটাল বলে, “পান খেয়েছি মশলা তাহে কর্পূর,
গন্ধে তারি মুণ্ড আমার এক্কেবারে ভরপুর।”
রাজা বলেন, “আসুক তবে শের পালোয়ান ভীমসিং,”
ভীম বলে “আজ কচ্ছে আমার সমস্ত গা ঝিম্ ঝিম্।
রাত্রে আমার বোখার হল বলছি হুজুর ঠিক বাৎ,”
ব’লেই শুল রাজসভাতে চক্ষু বুজে চিৎপাত।
রাজার শালা চন্দ্রকেতু তারেই ধ’রে শেষটা
বল্ল রাজা, “তুমিই নাহয় কর না ভাই চেষ্টা।”
চন্দ্র বলেন, “মারতে চাও তো ডাকাও নাকো জল্লাদ,
গন্ধ শুঁকে মরতে হবে এ আবার কি আহ্লাদ?”
ছিল হাজির বৃদ্ধ নাজির বয়সটি তার নব্বই,
ভাবল মনে, “ভয় কেন আর একদিন তো মরবই—”
সাহস ক’রে বল্লে বুড়ো, “মিথ্যে সবাই বকছিস,
শুঁকতে পারি হুকুম পেলে এবং পেলে বক্শিশ্।”
রাজা বলেন, “হাজার টাকা ইনাম পাবে সদ্য”,
তাই না শুনে উৎসাহতে উঠল বুড়ো মন্দ।
জামার পরে নাক ঠেকিয়ে—শুঁকল কত গন্ধ,
রইল অটল দেখল লোকে বিস্ময়ে বাক্ বন্ধ।
রাজ্যে হল জয় জয়কার বাজ্ল কাঁসর ঢক্কা,
বাপ রে কি তেজ বুড়োর হাড়ে, পায় না সে যে অক্কা?