পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৮৪: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিসংকলন থেকে
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
+
বৈধকরণ
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|৪৬|রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ ।|}}
{{RunningHeader|৪৬|রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ।|}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
নৌকাযোগে গৃহাভিমুখে যাত্রা করিলোম। পরদিন হইতেই শরীর সুস্থ
নৌকাযোগে গৃহাভিমুখে যাত্রা করিলোম। পরদিন হইতেই শরীর সুস্থ হইতে আরম্ভ হইল।”
হইতে আরম্ভ হইল।”


{{gap}}এখন মফস্বল হইতে পীড়িত হইয়া লোকে সুস্থ হইবার জন্য কলিকাতা নগরীতে আগমন করে; তখন কলিকাতাতে দুইমাস থাকিলেই লোকের শরীর ভগ্ন হইত এবং কলিকাতা হইতে বাহির হইলে তৎপর দিনই শরীর সুস্থ হইতে আরম্ভ হইত! সে সময়ে কলিকাতার যে অবস্থা ছিল তাহাতে এরূপ ঘটনা কিছুই বিচিত্র ছিল না। তখন জলের কল ছিল না; প্রত্যেক ভবনে এক একটী কূপ ও প্রত্যেক পল্লীতে দুই চারিটী পুষ্করিণী ছিল। এই সকল পচা দুর্গন্ধময় জলপূর্ণ পুষ্করিণীতে কলিকাতা পরিপূর্ণ ছিল। অনুমান করি, যখন কলিকাতার পত্তন হয় তখন বর্ত্তমান রাজধানীর আদিম স্থানে দুই একটী ক্ষুদ্র গ্রাম ভিন্ন সমগ্র স্থান ধানের ক্ষেত ছিল। সহর যেমন বাড়িয়াছে লোকে ধানের ক্ষেতে পুষ্করিণী খনন করিয়া করিয়া বাস্তু ভিটা প্রস্তুত করিয়াছে। এইরূপে প্রত্যেক গৃহস্থের গৃহের সঙ্গে সঙ্গে এক একটী ক্ষুদ্র পুষ্করিণী হইয়াছে। এই অনুমানের আর একটী প্রমাণ এই যে উক্ত পুষ্করিণী সকল সহরের পূর্ব্বাংশেই অধিক পরিমাণে দৃষ্ট হইত; কারণ সুতানুটী, গোবিন্দপুর প্রভৃতি আদিম গ্রাম সকল নদী পার্শ্বেই অবস্থিত ছিল; সেখানে অধিক পুষ্করিণীর প্রয়োজন ছিল না।
{{gap}}এখন মফস্বল হইতে পীড়িত হইয়া লোকে সুস্থ হইবার জঠ্য কলিকাতা।
নগরীতে আগমন। করে; তথন কলিকাতাতে দুইমাস থাকিলেই লোকের
শরীর ভগ্ন হইত এবং কলিকাতা হইতে বাহির হইলে তৎপর দিনই শরীর সুস্থ
হইতে আরম্ভ হইত! সে সময়ে কলিকাতার যে অবস্থা ছিল তাহাতে এরূপ
ঘটনা কিছুই বিচিত্র ছিল না॥ তথন জলের কল ছিল না।; প্রত্যেক ভবনে।
এক একটী কৃপ ও প্রত্যেক পল্লীতে দুই চারিটী পুষ্করিণী ছিল। এই সকল।
পচা দুৰ্গন্ধময় জলপূর্ণ পুষ্করিণীতে কলিকাতা পরিপূর্ণ ছিল। অহুমান করি, যখন।
কলিকাতার পত্তন হয় তখন বর্তমান রাজধানীর আদিম স্থানে ছুই একটী সূত্র
গ্রাম ভিন্ন সমগ্র স্থান ধানের ক্ষেত ছিল। সহর যেমন বাড়িয়াছে লোকে ধানের
ক্ষেতে পুষ্করিণী খনন করিয়া করিয়া বাস্তু ভিটা প্ৰস্তুত করিয়াছে। এইরূপে
প্রত্যেক গৃহস্থের গৃহের সঙ্গে সঙ্গে এক একটী ক্ষুদ্র পুষ্করিণী হইয়াছে। এই
অনুমানের আর একটী প্রমাণ এই যে উক্ত পুষ্করিণী সকল সহরের পূর্বাংশেই
অধিক পরিমাণে দৃষ্ট হইত; কারণ সুতানুটী, গোবিন্দপুর প্রভৃতি আদিম গ্রাম
সকল নদী পাইে অবস্থিত ছিল; সেখানে অধিক পুষ্করিণীর প্রয়োজন ছিল না।


{{gap}}এই পুষ্করিণীগুলি জ্বরের উৎস স্বরূপ ছিল। এতদ্ভিন্ন গবর্ণমেন্ট স্থানে স্থানে কয়েকটী দীঘিকা খনন করিয়াছিলেন, তাহাতে কাহাকেও স্নান করিতে দিতেন না; সেইগুলি লোকের পানার্থ ছিল। তন্মধ্যে লালদিঘী সর্ব্বপ্রধান ছিল। উড়িয়া ভারিগণ ঐ জল বহন করিয়া গৃহে গৃহে যোগাইত। যখন জলের এই প্রকার দুরবস্থা তখন অপরদিকে সহরের বহিরাকৃতি অতি ভয়ঙ্কর ছিল। এখনকার ফুটপাথের পরিবর্ত্তে প্রত্যেক রাজপথের পার্শ্বে এক একটী সুবিস্তীর্ণ নর্দ্দামা ছিল। কোন কোনও নর্দ্দামার পরিসর আট দশ হাতের অধিক ছিল। ঐ সকল নর্দ্দামা কর্দ্দম ও পঙ্কে এরূপ পূর্ণ থাকিত, যে একবার একটী ক্ষিপ্ত হস্তী ঐরপ একটী নর্দ্দামাতে পড়িয়া প্রায় অর্দ্ধেক প্রোথিত হইয়া যায়, অতি কষ্টে তাহাকে তুলিতে হইয়াছিল। এই সকল নর্দ্দামা হইতে যে দুর্গন্ধ উঠিত তাহাকে বর্দ্ধিত ও ঘনীভূত করিবার জন্যই যেন প্রতি গৃহেই পথের পার্শ্বে এক একটী শৌচাগার ছিল। তাহাদের অনেকের মুখ দিন রাত্রি অনাবৃত থাকিত। নাসারন্ধ্র উত্তমরূপে বস্ত্রদ্বারা আবৃত না করিয়া সেই সকল পথ দিয়া চলিতে পারা যাইত না। মাছি ও মশার উপদ্রবে দিন রাত্রির
{{gap}}এই পুষ্করিণী গুলি জরের উৎস স্বরূপ ছিল। এতদ্ভিন্ন গবর্নমেন্ট স্থানে।
স্থানে কয়েকটা দীঘিকা খনন করিয়াছিলেন, তাহাতে কাহাকেও স্নান করিতে
দিতেন না।; সেইগুলি লোকের পানাৰ্থ ছিল। তন্মধ্যে লালদিঘী সর্বপ্রধান
ছিল। উড়িয়া ভারিগণ ঐ জল বহন করিয়া গৃহে গৃহে যোগাইত। যখন
জলের এই প্রকার দুরবস্থা তথন অপরদিকে সহরের বহিরাকতিঅতি ভয়ঙ্কর
ছিল। এখনকার ফুটপাথের পরিবর্তে প্রত্যেক রাজপথের পার্থে এক একটী
মুবিস্তীর্ণ নর্দামা ছিল। কোন কোনও নর্দামার পরিসর আট দশ হাতের অধিক
ছিল। ঐ সকল নর্দামা কর্দম ও পক্ষে এপ পূর্ণ থাকিত, যে এক বার একটী।
ক্ষিপ্ত হস্তী ঐরপ। একটী নর্দামাতে পড়িয়া প্রায় অর্তৃেক প্রোথিত হইয়া যায়,
অতি কষ্টে তাহাকে তুলিতে হইয়াছিল। এই সকল নর্দামা হইতে যে।
দুৰ্গন্ধ উঠিত তাহাকে বর্ধিত ও ঘনীভূত করিবার জঠাই যেন প্রতি গৃহেই
পথের পার্ষে এক একটী শৌচাগার ছিল। তাহাদেম অনেকের মুখ দিন রাত্রি
অনাবৃত থাকিত। নাসারন্ধন্তু উত্তমরূপে বস্ত্ৰদ্বারা আবৃত না করিয়া সেই সকল
পথ দিয়া চলিতে পারা যাইত না। মাছি ও মশার উপড়বে দিন রাত্রির

১১:৩১, ২৫ জুলাই ২০১৭ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৪৬
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ।

নৌকাযোগে গৃহাভিমুখে যাত্রা করিলোম। পরদিন হইতেই শরীর সুস্থ হইতে আরম্ভ হইল।”

 এখন মফস্বল হইতে পীড়িত হইয়া লোকে সুস্থ হইবার জন্য কলিকাতা নগরীতে আগমন করে; তখন কলিকাতাতে দুইমাস থাকিলেই লোকের শরীর ভগ্ন হইত এবং কলিকাতা হইতে বাহির হইলে তৎপর দিনই শরীর সুস্থ হইতে আরম্ভ হইত! সে সময়ে কলিকাতার যে অবস্থা ছিল তাহাতে এরূপ ঘটনা কিছুই বিচিত্র ছিল না। তখন জলের কল ছিল না; প্রত্যেক ভবনে এক একটী কূপ ও প্রত্যেক পল্লীতে দুই চারিটী পুষ্করিণী ছিল। এই সকল পচা দুর্গন্ধময় জলপূর্ণ পুষ্করিণীতে কলিকাতা পরিপূর্ণ ছিল। অনুমান করি, যখন কলিকাতার পত্তন হয় তখন বর্ত্তমান রাজধানীর আদিম স্থানে দুই একটী ক্ষুদ্র গ্রাম ভিন্ন সমগ্র স্থান ধানের ক্ষেত ছিল। সহর যেমন বাড়িয়াছে লোকে ধানের ক্ষেতে পুষ্করিণী খনন করিয়া করিয়া বাস্তু ভিটা প্রস্তুত করিয়াছে। এইরূপে প্রত্যেক গৃহস্থের গৃহের সঙ্গে সঙ্গে এক একটী ক্ষুদ্র পুষ্করিণী হইয়াছে। এই অনুমানের আর একটী প্রমাণ এই যে উক্ত পুষ্করিণী সকল সহরের পূর্ব্বাংশেই অধিক পরিমাণে দৃষ্ট হইত; কারণ সুতানুটী, গোবিন্দপুর প্রভৃতি আদিম গ্রাম সকল নদী পার্শ্বেই অবস্থিত ছিল; সেখানে অধিক পুষ্করিণীর প্রয়োজন ছিল না।

 এই পুষ্করিণীগুলি জ্বরের উৎস স্বরূপ ছিল। এতদ্ভিন্ন গবর্ণমেন্ট স্থানে স্থানে কয়েকটী দীঘিকা খনন করিয়াছিলেন, তাহাতে কাহাকেও স্নান করিতে দিতেন না; সেইগুলি লোকের পানার্থ ছিল। তন্মধ্যে লালদিঘী সর্ব্বপ্রধান ছিল। উড়িয়া ভারিগণ ঐ জল বহন করিয়া গৃহে গৃহে যোগাইত। যখন জলের এই প্রকার দুরবস্থা তখন অপরদিকে সহরের বহিরাকৃতি অতি ভয়ঙ্কর ছিল। এখনকার ফুটপাথের পরিবর্ত্তে প্রত্যেক রাজপথের পার্শ্বে এক একটী সুবিস্তীর্ণ নর্দ্দামা ছিল। কোন কোনও নর্দ্দামার পরিসর আট দশ হাতের অধিক ছিল। ঐ সকল নর্দ্দামা কর্দ্দম ও পঙ্কে এরূপ পূর্ণ থাকিত, যে একবার একটী ক্ষিপ্ত হস্তী ঐরপ একটী নর্দ্দামাতে পড়িয়া প্রায় অর্দ্ধেক প্রোথিত হইয়া যায়, অতি কষ্টে তাহাকে তুলিতে হইয়াছিল। এই সকল নর্দ্দামা হইতে যে দুর্গন্ধ উঠিত তাহাকে বর্দ্ধিত ও ঘনীভূত করিবার জন্যই যেন প্রতি গৃহেই পথের পার্শ্বে এক একটী শৌচাগার ছিল। তাহাদের অনেকের মুখ দিন রাত্রি অনাবৃত থাকিত। নাসারন্ধ্র উত্তমরূপে বস্ত্রদ্বারা আবৃত না করিয়া সেই সকল পথ দিয়া চলিতে পারা যাইত না। মাছি ও মশার উপদ্রবে দিন রাত্রির