বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:কথা-চতুষ্টয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১১৬
কথা-চতুষ্টয়।

আমরা জাহাজের পশ্চাৎ ভাগে ছিলাম, কলের ঘট্‌ঘট্‌ এবং জলের কল্‌ কল্‌ শব্দে সেখান হইতে বন্দুকের আওয়াজ শুনিবারও কোন সম্ভাবনা ছিল না।

 দেশের লোককে আন্তরিক ধিক্কার দিয়া শশিভূষণ ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট মকদ্দমা চালাইলেন।

 সাক্ষীর কোন আবশ্যক হইল না। ম্যানেজার স্বীকার করিল যে, সে বন্দুক ছুঁড়িয়াছিল। কহিল, আকাশে এক ঝাঁক বক উড়িতেছিল তাহাদেরই প্রতি লক্ষ্য করা হইয়াছিল। ষ্টীমার তখন পূর্ণবেগে চলিতেছিল এবং সেই মুহূর্ত্তেই নদীর বাঁকের অন্তরালে প্রবেশ করিয়াছিল। সুতরাং সে জানিতেও পারে নাই, কাক মরিল, কি বক মরিল, কি নৌকাটা ডুবিল। অন্তরীক্ষে এবং পৃথিবীতে এত শিকারের জিনিষ আছে, যে, কোন বুদ্ধিমান ব্যক্তি ইচ্ছাপূর্ব্বক “ডার্টি র‍্যাগ্‌” অর্থাৎ মলিন বস্ত্রখণ্ডের উপর শিকিপয়সা দামেরও ছিটাগুলি অপব্যয় করিতে পারে না।

 বেকসুর খালাস পাইয়া ম্যানেজার সাহেব চুরট ফুঁকিতে ফুঁকিতে ক্লাবে হুইষ্ট্‌ খেলিতে গেল; যে লোকটা নৌকার মধ্যে মশলা পিশিতেছিল, নয় মাইল তফাতে তাহার মৃতদেহ ডাঙ্গায় আসিয়া লাগিল এবং শশিভূষণ চিত্তদাহ লইয়া আপন গ্রামে ফিরিয়া আসিলেন।

 যে দিন ফিরিয়া আসিলেন, সে দিন নৌকা সাজাইয়া গিরিবালাকে শ্বশুরবাড়ি লইয়া যাইতেছে। যদিও তাঁহাকে