বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
 

মৈথিলী ব্রাহ্মণ ও
ত্রিপুররাজ


(১২)

মৈথিলী ব্রাহ্মণ ও ত্রিপুররাজ

 ধন্যমাণিক্যের মৃত্যুর পর রাজ্য ক্ষীণবল হইয়া পড়িল। পিতার মৃত্যুতে জ্যেষ্ঠপুত্র ধ্বজ সিংহাসনে বসিলেন। তাঁহার রাজত্ব কাল অতি অল্প। ধ্বজমাণিক্যের মৃত্যুর পর তদীয় শিশুপুত্র ইন্দ্র সিংহাসন পান নাই। ধন্যমাণিকোর দ্বিতীয় পুত্র দেবমাণিক্য সিংহাসন দখল করিয়া বসিলেন। এই সময়ে ত্রিপুরা রাজ্যে এক তান্ত্রিক ব্রাহ্মণের প্রভাবে ঘোর অশান্তির সৃষ্টি হইল। বিক্রমাদিত্যের বেতাল পঞ্চবিংশতির ন্যায় রোমহর্ষণ কাণ্ড ঘটিতে লাগিল। মিথিলা নিবাসী লক্ষ্মীনারায়ণ নামে এক তান্ত্রিক ব্রাহ্মণ দেবমাণিক্যকে পাইয়া বসিলেন। রাজা তাঁহার নিকট তন্ত্রমতে ভাব, চক্র, শ্মশান-সাধন প্রভৃতি নিভৃতে শিখিতে লাগিলেন। রাজকার্য্য ও তন্ত্রসাধন এক সঙ্গে চালান যায় না সেই জন্য যাঁহারা সাধনমার্গে যাইতে চান তাঁহারা রাজ্যকে কণ্টক জ্ঞানে ত্যাগ করিয়া সন্ন্যাসী হন। কিন্তু দেবমাণিক্য দুই নৌকাতে পা দিয়াছিলেন। ফলে রাজার একূল ওকূল উভয় কূলই নষ্ট হইল। একদিন রাজাকে খুঁজিয়া পাওয়া যায় না, শেষে দেখা গেল শ্মশানে রাজার মৃত দেহ পড়িয়া আছে। রাজ্যময় ক্রন্দনের রোল পড়িল, দেবমাণিক্যের রাণী স্বামীর চিতায় প্রাণ বিসর্জ্জন দিলেন।