এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
ষষ্ঠীর ধ্যান--দ্বিভুজাং হেমগৌরাঙ্গীং রত্নালঙ্কার-ভুষিতাং
সত্যভামা বলিলেন ঘুচাও দুয়ার। আনিয়াছি কন্যা দেখ চক্ষে আপনার।। যদুকুলে জন্ম কন্যা প্রথমযৌবনী। বিদ্যুৎবরণী রূপে ত্রৈলোক্যমোহিনী।। অর্জ্জুন বলেন একি আমার শকতি। বলভদ্র জনার্দ্দন যদুকুলপতি।। তাঁদের বিনাজ্ঞাতে লব আমি যাদবী। লজ্জা মম করাইতে চাহ মহাদেবী।। দেবী বলিলেন ইহা করিয়া কেমনে। মন বাঁন্ধিয়াছে কৃষ্ণা ঔষধের গুণে।। পাঞ্চালের কন্যা জানে মহৌষধি গাছ। তিল আধ পঞ্চস্বামী নাহি ছাড়ে পাছ।। লোভেতে নারদবাক্য করিয়া হেলন। দ্বাদশ বৎসর ভ্রমিতেছে বনে বন।। ইহাতে তোমার লজ্জা কিছু নাহি হয়। কিমতে করিবা হেন দ্রৌপদীর ভয়।। পার্থ বলিলেন দেবি নিন্দহ দ্রৌপদী। ত্রিজগৎমধ্যে খ্যাত তব মহৌষধি।। ষোল সহস্র যে আছ অষ্ট পাটরাণী। সবা হৈতে কোন্ গুণে তুমি সোহাগিনী।। অপুত্রা কি রূপহীন হীনকুলে জাত। রুক্মিনী প্রভৃতি করি পাটরাণী সাত।। ঔষধের গুণে হরি তোমারে ডরান। তোমার সাক্ষাতে চক্ষে অন্য নাহি চান।। দিব্য রত্ন বসন ভূষণ অলঙ্কার। যেখানে যা পান কৃষ্ণ সকলি তোমার।। অন্য জনে দিলে তুমি পরাণ না ধর। কহ মহাদেবি ইহা কোন্ গুণে কর।। রুক্মিনীরে দেন কৃষ্ণ এক পারিজাত। তাহাতে করিলে যত জগতে বিখ্যাত।। জন্মেজয় বলিলেন মুনিরে তখন। কহ মুনিবর পারিজাতের কথন।। কি হেতু হইল দ্বন্দ রুক্মিনীর সহিত। শুনিবারে ইচ্ছা হয় ইহার চরিত।। ------ পারিজাত-হরণ বিবরণ। এককালে নারায়ণ বিহার কারণ। রৈবতক পর্ব্বতেতে করেন গমন। হেনকালে নারদ তথায় উপনীত। বাজাইয়া বীণা গান কৃষ্ণগুণ গীত।। পারিজাত পুষ্প ছিল বীণায় বন্ধন। গোবিন্দের হস্তেতে দিলেন তপোধন।। পরম সুন্দর পুষ্প দেবের দুর্ল্লভ। যোজন পর্য্যন্ত যায় যাহার সৌরভ।। দেখিয়া আনন্দযুক্ত হৈয়া হৃষিকেশ। পুষ্প দিয়া রুক্মিনীরে করেন সুবেশ।। এতেক রুক্মিনীদেবী ত্রৈলোক্যমোহিনী। পারিজাত সুবেশে শোভিল সবা জিনি।। নারদ ক্ষণিক করি কথোপকথন। বিদায় হইয়া চলিলেন তপোধন।। কলহে আনন্দ বড় ব্রম্ভার নন্দন। পথে মুনি যাইতে চিন্তেন মনে মন।। সত্যভামা-অগ্রে কহি পারিজাত কথা। শুনিয়া কি বলে দেখি সত্রাজিত-সুতা।। এত চিন্তি গিয়া মুনি দ্বারকাভবন। সত্যভামা-গৃহে উপনীত সেইক্ষণ।। মুনি দেখি সত্যভামা করিয়া বন্দন। পাদ্য অর্ঘ্য অর্পিলেন বসিতে আসন।। কোথায় আছিলা বলি জিজ্ঞাসেন সতী। কহেন করুণ বাক্য মুনি মহামতি।। আজি গিয়াছিলাম যে ইন্দ্রের নগর। পুষ্প দিয়া আমারে পূজিল পুরন্দর।। নরের অদৃষ্ট পুষ্প দেবের দুর্ল্লভ। দিল ইন্দ্র মোরে বহু করিয়া গৌরব।। পুষ্প দেখি আমি চিন্তিলাম এ হৃদয়। বিনা ইন্দ্র উপেন্দ্র অন্যের যোগ্য নয়।। সে কারণে পুষ্প আমি দিলাম কৃষ্ণেরে। পুষ্প দেখি গোবিন্দের আনন্দ অন্তরে।। সেই ক্ষণে রুক্মিনীরে আনি জগন্নাথ। স্বহস্তে ভূষিত করিলেন পারিজাত।।