বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মেজদিদি - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তোমার পছন্দ হয়?

 ঐটিকে, বলিয়া রাধারাণী আঙুল তুলিয়া যে স্ত্রীলোকটি সকলের পিছনে নিতান্ত সাদাসিধা পোশাকে বসিয়াছিল তাহাকেই দেখাইয়া लि।

 স্বামী বলিলেন, ও যে নেহাত রোগা।

 তা হোক, ঐ সবচেয়ে সুন্দরী। কিন্তু বেচারী গরীব-গায়ে গয়না-টয়না। এদের মত নেই!

 সত্যেন্দ্র ঘাড় নাড়িয়া বলিলেন, তা হবে। কিন্তু, এদের মজুরী কত জান?

 না।

 সত্যেন্দ্র হাত দিয়া দেখাইয়া বলিলেন, এদের দু’জনের ত্রিশ টাকা করে, ঐ ওর পঞ্চাশ, আর যেটিকে গরীব বলচ, তার দু’শ টাকা।

 বাধারাণী চমকিয়া উঠিল-দু’শ! কেন, ও কি খুব ভাল গান করে?

 কানে শুনিনি কখনো। লোকে বলে, চার-পাঁচ বছর আগে খুব ভালই গাইত,—কিন্তু এখন পারবে কিনা বলা যায় না।

 তবে অত টাকা দিয়ে আনলে কেন?

 তার কমও আসে না। এতেও আসতে রাজী ছিল না, অনেক সাধাসাধি করে আনা হয়েচে।

 রাধারাণী অধিকতর বিস্মিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, টাকা দিয়ে সাধাসাধি কেন?

 সত্যেন্দ্র নিকটে একটা চৌকি টানিয়া লইয়া বসিয়া বলিলেন, তার প্রথম কারণ, ও ব্যবসা ছেড়ে দিয়েচে। গুণ ওর যতই হোক, এত টাকা সহজে কেহই দিতেও চায় না, ওকেও আসতে হয় না, এই ওব ফন্দি! দ্বিতীয় কারণ, আমার নিজের গরজ।

 কথাটা রাধারাণী বিশ্বাস করিল না। তথাপি আগ্রহে ঘেঁষিয়া বসিয়া বলিল, তোমার গরজ ছাই। কিন্তু, ব্যবসা ছেড়ে দিলে কেন?

 শুনবে?

৬০