নীচে হইতে হাত-মুখ ধুইয়া আসিয়া অপূর্ব্ব খাবার খাইয়া সুপারি, এলাচ প্রভৃতি মুখে দিয়া হৃষ্টচিত্তে কহিল, এবার আমাকে ছুটি দিন, আমি বাসায় যাই।
ভারতী মাথা নাড়িয়া বলিল, সেটি হবে না। তেওয়ারীকে খবর দিয়েছি যে, অফিসের ফেরত কাল বিকালে আপনি বাসায় যাবেন এবং খবর নিয়েচি যে সে সুস্থ দেহে, বহাল তবিয়তে ঘর আগলাচ্ছে,—কোন চিন্তা নেই।
কিন্তু কেন?
ভারতী বলিল, কারণ সম্প্রতি আপনি আমাদের অভিভাবক। আজ সুমিত্রাদিদি অসুস্থ, নবতারা গেছেন অতুলবাবুকে সঙ্গে নিয়ে ওপারে, আপনাকে যেতে হবে আমার সঙ্গে। আপনার প্রতি প্রেসিডেণ্টের এই আদেশ। ওই ধুতি এনে রেখেচি, পরে নিয়ে চলুন।
কোথায় যেতে হবে?
মজুরদের লাইনের ঘরে। অর্থাৎ, বড় বড় কারখানার ক্রোড়পতি মালিকেরা ওয়ার্কমেনদের জন্যে লাইনবন্দী যে সব নরককুণ্ড তৈরী করে দিয়েছে সেইখানে। আজ রবিবারে ছুটির দিনেই সেখানে কাজ।
অপূর্ব্ব জিজ্ঞাসা করিল, কিন্তু সেখানে কেন?
ভারতী উত্তর দিল, নইলে পথের দাবীর সত্যিকারের কাজ কি এই ঘরে হতে পারে? একটু হাসিয়া কহিল, আপনি এ-সভার মাতব্বর সভ্য, সরেজমিনে না গেলে ত কাজের ধারা বুঝতে পারবেন না অপূর্ব্ববাবু!
চলুন, বলিয়া অপূর্ব্ব আফিসের পোষাক ছাড়িয়া মিনিট পাঁচেকের মধ্যে প্রস্তুত হইয়া লইল।
ভারতী আলমারী খুলিয়া কি একটা বস্তু লুকাইয়া তাহার জামার পকেটে রাখিতে অপূর্ব্ব দেখিতে পাইয়া কহিল, এটা কি নিলেন?
গাদা পিস্তল।
পিস্তল। পিস্তল কেন?
আত্মরক্ষার জন্যে।
ওর পাশ আছে?
না।
অপূর্ব্ব বলিল, পুলিশে যদি ধরে ত আত্মরক্ষা দু’জনেরই হবে। ক’বছর দেয়?
দেবে না,—চলুন!
অপূর্ব্ব নিশ্বাস ফেলিয়া বলিল, দুর্গা-শ্রীহরি। চলুন।
বড় রাস্তা ধরিয়া উত্তরে বর্ম্মী ও চীনা পল্লী পার হইয়া বাজারের পাশ দিয়া
১৩০